দৈনিক সমাজের কন্ঠ

ভদ্রা নদীতে বাঁধ স্থাপনের দাকোপে  প্রতিবাদে মানববন্ধন

Exif_JPEG_420

জুন ১৭, ২০১৯-খুলনার দাকোপ উপজেলায় ভদ্রা নদীতে ইজারার নামে লবণপানি উত্তোলন এবং আড়াআড়ি নেট-পাটা ও বাঁধ দিয়ে পানি সরবরাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়েছে। উপজেলার পানখালী ও তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের কয়েক’ শ মানুষ খোনা জাইকা ব্রিজ এলাকায় রোববার (১৬ জুন) এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনের আয়োজন করেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেনস, যুগ যুগ ধরে গ্রামের হাজার হাজার কৃষক ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ভদ্রা নদীর দুই পাশে বসবাস করছেন। কৃষি তাদের প্রধান জীবিকা। এ নদী থেকে মৎস্য আহরণ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন অনেকেই। বিগত বছরগুলোতে যারা ইজারা নিয়েছে তারা কখনও নদীতে নেট-পাটা ব্যবহার করেননি। নদীতে দুইটি স্লুইসগেট (জলকপাট) থাকায় নদীটি খোলা জলশায় হিসেবে পরিচিত।

বক্তারা বলেন, বর্তমান খুলনা ও পাইকগাছার বহিরাগত প্রভাবশালী ব্যক্তিরা পানখালী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির নামে ইজারা নিয়ে নদীতে লবণপানি ঢুকিয়ে ও আড়াআড়িভাবে নেট-পাটা ব্যবহার করে মাছচাষ করছে। ফলে ছোট ছোট জলাশয়গুলোতে লবণপানি ঢুকার কারণে গবাদিপশু লবণপানি পান করে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এতে চলতি বছরের আমন চাষও ব্যাহত হবে। তারা আরও বলেন, ইজারাদারেরা বেআইনিভাবে জনগণের ক্ষতিসাধন করছে। নদী থেকে আড়াআড়ি নেট-পাটা অপসারণসহ ইজারাদারদের উচ্ছেদের দাবি করেন এলণাকাবাসি। তাঁরা হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘রক্ত দেবো তবু লবণপানি উঠিয়ে চিংড়ি চাষ করতে দেব না’।

পানখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আবুল হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য জয়ন্তী রানী সরদার, ইউপি চেয়ারম্যান রনজিৎ কুমার মণ্ডল, পঞ্চানন মণ্ডল, আওয়ামী লীগ নেতা স্বপন কুমার সরকার, আব্দুর রহিম মোল্লা, মোস্তাক ফকির, শেখ মোজাফফার হোসেনসহ আরও অনেকে।

দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল ওয়াদুদ মুঠোফোনে বলেন, নদীটি গত কয়েক বছর ধরে ইজারা না হওয়ায় সরকার রাজস্ববঞ্চিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও জেলা জলমহাল কমিটি বিধিসম্মতভাবে ইজারা দিয়েছে। একটি স্বার্থন্বেষী মহল যারা নদীতে ইজারা ছাড়ায় বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করত, তারা এবার সুবিধা নিতে পারছে না। তারাই বিষয়টি নিয়ে জল ঘোলার চেষ্টা করছে। সাত ও নয় নম্বর জলকপাট দিয়ে কিছুটা পানি উঠেছে।

তিনি আরও বলেন, এলাকার কিছু মানুষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বারবার গেটের পাট নষ্ট করায় জুয়ারে পানি ঢুকছে। তাদের ধরার চেষ্টা চলছে। লবণপানির বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার। লবণপানি যাতে না উঠতে পারে, সে জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড যথেষ্ট চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আর জলপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে এমন বাঁধ-পাটা অপসারণের মাইকিং করা হচ্ছে। মঙ্গলবারের মধ্যে এগুলো নিজ থেকে অপসারণ না করলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।