স্টাফ রিপোর্টার – রাত পোহালেই ৯ নভেম্বর অভয়নগর উপজেলার কাংঙ্খিত ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশন। দীর্ঘ ১৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে অভয়নগর উপজেলার কাউন্সিল অধিবেশন। ৭১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি মনোনয়নের মাধ্যমে হবে না নির্বাচনের মাধ্যমে হবে তা অধিবেশনে সিদ্ধান্ত হবে। সম্মেলনকে ঘিরে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নওয়াপাড়া ইনস্টিটিউট ময়দানে সাজানো হয়েছে মঞ্চ। শনিবার দুপুর ১টায় সম্মেলনের শুভ উদ্বোধন করবেন যশোর জেলা আ.লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, প্রধান অতিথি থাকবেন আ.লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য, আ.লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান,সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, সদস্য এস এম কামাল হোসেন, যশোর জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, জাতীয় সংসদের ৮৮ যশোর ৪ আসনের সদস্য রণজিত কুমার রায় এবং সভাপতিত্ব করবেন অভয়নগর উপজেলা আ.লীগের আহবায়ক এনামুল হক বাবুল। জানা গেছে, এবছর সভাপতি পদের প্রাথী রয়েছেন দুই হেভিওয়েট নেতা। তারা হলেন, জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ এবং উপজেলা আ.লীগের সাবেক সভাপতি শেখ আব্দুল ওহাব। এবং বর্তমান উপজেলা আ.লীগের আহবায়ক, নওয়াপাড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আলহাজ্ব এনামুল হক বাবুল। সাধারন সম্পাদক পদের প্রাথী রয়েছে চার জন। এরা হলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম আহবায়ক সাবেক ছাত্র নেতা পীরজাদা শাহ ফরিদ জাহাঙ্গীর, উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম আহবায়ক,সাবেক নওয়াপাড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান সরদার অলিয়ার রহমান, নওয়াপাড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম আহবায়ক সুশান্ত কুমার দাস, ও উপজেলা আ.লীগ নেতা সাবেক তুখোড় ছাত্র নেতা সানা আব্দুল মান্নান। এ ছাড়া অন্যান্য পদেও রয়েছেন একাধিক প্রার্থী। প্রার্থীরা সাক্ষাতকারে যা যা বললেন- শেখ আব্দুল ওহাব, ১৯৬০ সালে এস,এস,সি পাশ করে বিএল কলেজে পড়াকালিন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিভাগে পড়াকালিন তিনি মহসীন হলে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির পদ লাভ করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি অনার্স সহ মাষ্টার ডিগ্রি লাভ করেন। ছাত্রজীবন শেষ করে তিনি প্রথমে যুবলীগে যোগ দেন। পরে উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ লাভ করেন। তিনি উপজেলা আ.লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালে তিনি উপজেলা আ.লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯০ সালে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদের হুইপ পদ লাভ করেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন উপজেলা কমিটি না থাকায় দল ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গেছে। কাউন্সিল অধিবেশনের পর দল সুসংগঠিত হবে । তৃণমূলের সদস্যরা যে সিদ্ধান্ত দেবে দলের নীতি নির্ধারকরা সে মোতাবেক কাজ করা উচিত বলে তিনি মনে করেন। এনামুল হক বাবুল, তিনি ১৯৬৮ সালে এস,এস,সি পাশ করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে তিনি রসায়ন বিষয়ে অনার্স সহ মাষ্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি সেখানে পড়াকালিন বাম রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। ছাত্রজীবন শেষে তিনি আ,লীগের রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৯৪ সাল থেকে তিনি সক্রিয় হন। ২০০৪ সালে তিনি উপজেলা আ,লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ওই বছর তিনি পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি উপজেলা আ.লীগের আহবায়ক পদে থেকে দল পরিচালনা করছেন। দলের কাউন্সিলররা যে সিদ্ধান্ত নেবে তা তিনি মেনে নেবেন। সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হলে তিনি কিভাবে দল পরিচালনা করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন। এটা এখন বলবো না সময় বলে দেবে আমাকে কী করতে হবে। পীরজাদা শাহ ফরিদ জাহাঙ্গীর, তিনি ১৯৮২ সালে এস,এস,সি পাশ করে নওয়াপাড়া কলেজে ভর্তি হন। কলেজে পড়াকালিন তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। ৮০’র দশকে তিনি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করতে যেয়ে তিন বছর পাচ মাস কারারুদ্ধ ছিলেন। তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নওয়াপাড়া পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ড থেকে কমিশনার নির্বাচিত হয়ে ছিলেন। ওই সময় তিনি পৌরসভার প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালে তিনি উপজেলা আ,লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। তিনি এখন উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জানান, ঐক্যবদ্ধ আ.লীগ স্পাতের ন্যায় শক্তিশালী আর বিভক্ত আ.লীগ ভেজা ঢিলার মত ,একটু নড়া লাগলেই ভেঙ্গে পড়বে। তিনি উপজেলা সাধারন সম্পাদক পদে নির্বাচিত হলে এলাকা থেকে মাদক, সন্ত্রাস দুর্নীতি মুক্ত করেতে আপ্রাণ চেষ্টা করবেন। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ ফায়দা লুটবে এ সুযোগ তিনি দিতে চান না। সুশান্ত কুমার দাস, ১৯৯০ সালে এস,এস,সি পাশ করে নওয়াপাড়া মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে তিনি ¯œাতক ডিগ্রি লাভ করেন। কলেজ জীবন থেকে ছাত্রলীগের মাধ্যমে তার রাজনীতিতে হাতে-খড়ি। ১৯৯২-৯৩ সালে তৎকালিন রাজঘাট ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬-৯৭ সালে উপজেলা ছাত্রলীগের দুই-দুই বার সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। এর আগে উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪-৫ সালে যশোর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৯ সালে অভয়নগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। স্বেচ্ছাসেবকলীগে থাকা অবস্থায় ২০১৬ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে নওয়াপাড়া পৌরসভার মেয়র পদে জয়লাভ করেন। বর্তমানে তিনি উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম আহবায়ক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলে উপজেলা আ.লীগকে ঢেলে সাজাতে চান। কেন্দ্রীয় নির্দেশ মোতাবেক যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে চান। তার মতে, দীর্ঘদিন এ উপজেলায় আ.লীগের কমিটি না থাকায় দলীয় শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে। তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে দলকে সুশৃঙ্খলে ফিরিয়ে আনতে চান। দলের ভিতর কিছু হাইব্রিড নেতা-কর্মী ঢুকে পড়েছে। তারা আ.লীগের অর্জনকে ধ্বংস করছে। তিনি হাইব্রিড এসব নেতা -কর্মীদের দল থেকে বিতাড়িত করতে চান। দলের ভিতর সন্ত্রাসী, মাদক, চাঁদাবাজ রাখতে চান না। তিনি অনুভব করেন, দলকে ঢেলে সাজাতে তরুণ নের্তৃত্বের প্রয়োজন। এ জন্য তাকে উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত করার জন্য নেতা কর্মীদের কাছে দাবি করেছে