একাধিক সূত্রে জানা যায় অভয়নগরের মাঠ পর্যায়ে যশোরের দিশা সমাজ কল্যাণ সংস্থার বিভিন্ন দায়িত্বহীন কর্মকান্ডের জন্য সরকারের এই মহৎ উদ্যেগ ব্যর্থ হতে চলেছে ।
সরেজমিনে উপজেলার দিঘীরপাড় রাঙ্গারহাট সর্দার পাড়ায় গিয়ে কেন্দ্রের কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে এ সময় শিক্ষিকা রেখা পারভীনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, নিয়োগের সময় আমাদের বেতন ও শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপকরণ, বৃত্তি, স্কুল ড্রেস, ব্যাগ, ঘর ভাড়া দেওয়ার কথা ছিল তার কোনটি আজও দেয়নি। স্কুলের জন্য ফ্যান না দেওয়ায় বাচ্চারা এই গরমে বসতে চায় না। তা ছাড়া বেতন না দেওয়ায় পাঠদানের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি।
এছাড়া একই চিত্র দেখা গেছে মথুরাপুর উত্তর ২৬৪ নং, মধ্যপুর মোহাম্মাদীয়া শামসুল উলুম হাফেজিয়া মাদ্রাসা, সরখোলা ২৯৮নং, নওয়াপাড়া বুইকরা সরকারি কবরস্থানের মোড় সংলগ্ন ২৯৭ নং কেন্দ্রে। ভাটপাড়া ঋষিপাড়া ২৬৯নং শিখন কেন্দ্রে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থী দেখা গেলেও শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে জানা যায়, শিক্ষিকা শিল্পী রানী বিশ্বাস শিখন কেন্দ্রে পাঠদানের আড়ালে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন।
৪ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বুইকারা পালপাড়া কেন্দ্রেটি বন্ধ রয়েছে এবং কেন্দ্র শিক্ষিকা শুক্লা বিশ্বাস পায়েল সপরিবারে ভারতে অবস্থান করছিলেন ।
দিশা এনজিও’র অভয়নগর উপজেলার সুপারভাইজার ও একাধিক শিক্ষকরা জানান, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছতা দেখানোর জন্য আমাদেরকে প্রতিজনের সাথে আরও দুইজন করে প্রার্থী নিয়ে আসতে বলেন। পরবর্তীতে চুক্তি মোতাবেক বেতন, ঘরভাড়া, শিক্ষা উপকরণ ও বৃত্তি না দেওেয়ায় আমরা ১৪ আগষ্ট ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নওয়াপাড়া বাজারে মিটিং করি। মিটিং শেষে উপজেলা অফিসে গিয়ে উপজেলা প্রোগ্রাম ম্যানেজারকে আমরা সবাই কাজ করবনা বলে জানিয়ে দিই। এরপর দিশা এনজিও অফিস থেকে জানানো হয়েছিল আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ ছাড় পাব এবং সকল সমস্যার সমাধান হবে।
এ বিষয়ে যশোর দিশা সমাজ কল্যান সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রহিমা সুলতানার কাছে সংস্থার অভয়নগরের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারের কাছ থেকে এখনও অর্থ ছাড় করতে না পারায় সংস্থায় কর্মরত সুপারভাইজার, শিক্ষক, শিক্ষিকাদের বেতন, ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা উপকরণসহ বৃত্তির টাকা দিতে না পারায় কার্যক্রম একটু ঝিমিয়ে পড়েছে। আমরা আশা করছি সেপ্টেম্বর মাসের ভেতরেই সকল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।
শিক্ষিকা দেশের বাইরে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে রহিমা সুলতানা বলেন, ঘটনাটি আমি সহকারী পরিচালকের কাছ থেকে জেনেছি। উপজেলা প্রোগ্রাম ম্যানজার সঞ্জয় তাকে এক মাসের যে ছুটি দিয়েছেন তা বিধি বহির্ভুত।
প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে উপানুষ্টানিক শিক্ষা ব্যুরো যশোরের সহকারি পরিচালক বজলুর রশিদ বলেন, আমিসহ জেলা প্রশাসক, এ.ডি.সি (শিক্ষা ও আইসিটি) এবং উপজেলা পর্যায়ে ইউ.এন.ও মহোদয় দেখভাল করে থাকেন। দিশা এনজিও থেকে ছাত্র ছাত্রীদের যে জরিপ জমা দেওয়া হয়ছিল তা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে যাচাই বাছাইতে অসঙ্গতি ধরা পড়ে। পরবর্তীতে আইভিএ’র মাধ্যমে জরিপের কাজ করানো হয়।
অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন বলেন, এটি উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর একটি প্রকল্প যা দিশা সমাজকল্যান সংস্থা বাস্তবায়ন করছে। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে তাদের শিক্ষক নির্বাচন প্যানেল এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষনের বিষয়ে সহযোগিতা করেছি। দিশা এনজিও তাদের শিক্ষা কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করছে কিনা সে বিষয়ে আমি অবগত নই। এ বিষয়ে দিশা সংস্থা ও উপানুষ্টানিক শিক্ষা ব্যুরো ভালো বলতে পারবেন। ইউএনও উপজেলা ভিত্তিক এই প্রকল্পের সভাপতি কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি শুধুমাত্র শিক্ষক নিয়োগ প্যানেল কমিটির সভাপতি ছিলাম।