ব্যবসায়ীদের কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিতে হবে – বেগম রওশন এরশাদ

0
1

সমাজের কণ্ঠ  ডেস্ক -২৯ জুন, ২০১৯ :

জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধীদলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ বলেছেন, শিক্ষার মানোন্নয়নে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রত্যেক দেশেই আছে। বড় বড় ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের জন্য সরকার এই সুযোগ করে দেয়। আমাদের এখানে যাদের কালো টাকা আছে, তাদের এই সুবিধা দেওয়া হোক। তা না হলে টাকা বিদেশে নিয়ে যাবে। তারা যাতে বিনিয়োগ করতে পারেন সে সুযোগ করে দিন।

রওশন এরশাদ বলেন, দেশে কর্মসংস্থান না হলে বিনিয়োগ হবে না, বৈষম্যও কমবে না। তাই ধনী-গরিবের বৈষম্য দূর করতে কর্মসংস্থানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। এ সময় তিনি টাকার অবমূল্যায়ন করা হলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে ও দেশে অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি করবে বলে মন্তব্য করেন।

আজ শনিবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে তিনি আরো বলেন, আমরা সমৃদ্ধি সোপানের সিঁড়ি বেয়ে আরো উপরে উঠতে চাই। বাজেটে ধনী-গরিবদের বৈষম্য যাতে হ্রাস পায় সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে। শিক্ষার মান উন্নয়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, এডিপিতে ঘন ঘন প্রকল্প পরিচালক বন্দী, ঠিকাদারদের হাতে বন্দী থাকায় প্রকল্পে খরচ বাড়ছে। এডিপিতে গৃহীত প্রকল্পগুলো ঠিকভাবে বাস্তবায়ন হতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তাই অর্থবছরের সময় পরিবর্তন করা উচিত। কারণ বর্ষা মৌসুমে অর্থবছর শুরু হয়। সে কথা মাথায় রেখে প্রয়োজন অর্থ বছর শীতকালে শুরু হলে উন্নয়ন আরো বাড়বে।

বিরোধী দলীয় উপনেতা রওশন এরশাদ বলেন, রাজস্ব আদায় বাজেটের বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য অর্জনে সংস্কারের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বাজেটের ঘাটতি পূরণে ব্যাংক থেকে টাকা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ব্যাংকে নগদ টাকা নেই। সেখান থেকে টাকা নিয়ে ঘাটতি পূরণ করলে বেসরকারি খাত বিনিয়োগের জন্য টাকা পাবে না। ফলে বিনিয়োগ নির্ভর কর্মসংস্থান করতে ঋণ প্রবাহে সমস্যা হবে।

ভ্যাট আদায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নতুন যে ভ্যাট আইনের প্রস্তাব করা হয়েছে তা বাস্তবায়িত হলে জটিলতা দেখা দেবে। ফলে রাজস্ব আদায়ে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের আগে তিনি বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়ার প্রস্তাব করেন।

স্বাস্থ্য খাত প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ ও সরকারি হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ না বাড়লে চিকিতসার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা বাড়বে। তাই স্বাস্থ্য খাতে বেশি নজর দিতে হবে। এখাতে দুর্নীতি কঠোরভাবে দমন করতে হবে।

পুঁজিবাজার প্রসঙ্গে রওশন এরশাদ বলেন, ছোট ছোট বিনিয়োগকারীরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদের প্রণোদনা দিতে হবে। বড় বড় কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনতে হলে উদ্যোগ নিতে হবে। অনলাইনে কেনা-বেচায় ক্ষেত্রে ভ্যাট প্রয়োগ করা হলে অনেক তরুণ-তরুণী জড়িত রয়েছে, তারা নিরুৎসায়িত হবে। এ খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বলেন, এডিপি বাস্তবায়নে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। কর্মসংস্থান না হলে বিনিয়োগ হবে না, বৈষম্য কমবে না। বেকারের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়বে।

নারীদের জন্য পৃথক ব্যাংক সৃষ্টির দাবি জানিয়ে রওশন এরশাদ বলেন, এই ব্যাংক থেকে নারী উদ্যোক্তারা ঋণ নিয়ে নিজেরা স্বাবলম্বী হবে, অন্যদের স্বাবলম্বী করবে। তিনি বলেন, কৃষকরা ধান উৎপাদন করে মাথায় হাত দিয়েছে। কৃষকরা শস্য ফলিয়ে উৎপাদিত পণ্যের দাম পাচ্ছে না। ক্ষুব্ধ কৃষকরা ধান পুড়িয়ে দিচ্ছে। কৃষকরা ধান না ফলায় তবে আমরা খাবো কী?

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here