সমাজের কণ্ঠ ডেস্ক : ৩০ জুন, ২০১৯ –
১ জুলাই থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে।
আবাসিক খাতে দুই চুলার খরচ ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৭৫ টাকা আর এক চুলার খরচ ৭৫০ টাকা থেকে ৯২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গৃহস্থালি মিটারে দাম বেড়েছে প্রতি ঘনমিটারে ১২.৬০ টাকা।
রোববার বিকালে একটি সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৭.৩৮ টাকা থেকে ২.৪২ টাকা বাড়িয়ে ৯.৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গড়ে দাম বেড়েছে ৩২.০৮ শতাংশ।
সিএনজি গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি ঘনমিটার ৪৩টাকা এবং বিদ্যুৎ ও সারের জন্য ৪.৪৫ টাকা। হোটেল রেস্তোরায় প্রতি ঘনমিটার ২৩ টাকা, ক্যাপটিভ পাওয়ারে ১৩.৮৫ টাকা, শিল্প ও চা বাগানে ১০.৭০ টাকা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে ১৭.০৪ টাকা।
এর আগের গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সেই গণশুনানির সিদ্ধান্তই জানানো হলো।
এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে গ্যাসের দাম সমন্বয়ের জন্য প্রস্তাব করেছিল পেট্রোবাংলা ও গ্যাস বিতরণকারী কোম্পানিগুলো।
এসব সংস্থা গ্যাসের দাম গড়ে ১০২ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছিল। আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যোগ হওয়ার পর গ্যাসের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তারা জানিয়েছিলেন।
তবে বিইআরসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, গণশুনানি ও যৌক্তিকতা বিবেচনায় গ্যাসের দামের বিষয়টি নির্ধারণ করা হবে।
তবে গ্যাসের দামের বিষয়টি অনেকাংশে নির্ভর করে এর ওপর সরকারের দেওয়া ভর্তুকির ওপরেও।
এরপর গত ১১ থেকে ১৪ মার্চ ওই প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি করে বিইআরসি। সেই গণশুনানির সিদ্ধান্তই আজ জানানো হয়েছে।
সর্বশেষ ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্যাসের দাম গড়ে ২২ দশমিক ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়। ওই বছরের মার্চ ও জুলাই মাসে দুই দফায় এই নতুন মূল্য কার্যকর করার কথা ছিল।
মার্চ মাসের নতুন মূল্য কার্যকর হলেও হাইকোর্টের আদেশে জুলাই মাসের মূল্যবৃদ্ধি স্থগিত হয়ে যায়।
গ্রাহকদের প্রতিক্রিয়া
ঢাকার কলাবাগানের বাসিন্দা বিপাশা চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ”এমনিতেই সবকিছুর দাম চড়া। সীমিত আয়ে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার মধ্যে এভাবে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলো, তাতে সংসারে সরাসরি খরচ তো বাড়বেই। সেই সঙ্গে দেখা যাবে যাতায়াতের ভাড়া থেকে শুরু করে সবকিছুর দাম আরো বেড়ে যাবে। যার শিকার হতে হবে আমাদের মধ্যে বাঁধাধরা আয়ের মানুষদের।”
মিরপুরের বাসিন্দা শাহিদা আক্তার বলছেন, ” আমাদের বাসায় গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই দাম বাড়ানোর ফলে দেখা যাবে, সেখানেও দাম বাড়বে। সেই সঙ্গে সিএনজি ভাড়া, হোটেলের খাবার, হয়তো বিদ্যুতের দামও বেড়ে যাবে। ফলে আমাদের যাতে নির্দিষ্ট বাজেটের মধ্যে চলতে হয়, তাদের ওপর নতুন করে বোঝা তৈরি করবে।”
তিনি বলছেন, ”বাজেটে নানা খাতে সরকার ভর্তুকি দিয়েছে। কিন্তু আমাদের মতো সাধারণ জনগণের জন্য কি কোনো ভর্তুকি নেই, যে আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসটির দামও বাড়িয়ে দিতে হবে?”