মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্তৃক কোনো বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেনি – সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন

0
1

সমাজের কণ্ঠ  ডেস্ক : জুলাই ১১, ২০১৯ –

সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্তৃক কোনো বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেনি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, গত ১০ বছরে বিএসএফ কর্তৃক ২৯৪ জন বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার টেবিলে উত্থাপিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদের আলাদা আলাদা দুটি প্রশ্নের জবাবে সংসদেকে মন্ত্রী এ কথা বলেন। ডেপুটি স্পিকারের সভাপতিত্বে বিকালে সমাপনী এ অধিবেশন শুরু হয়।

মন্ত্রী বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ সকল সংস্থা কর্তৃক ২০১৮ সালে ১ লাখ ৬১ হাজার ৩২৩ জন মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৭৮টি মামলা দায়েরপূর্বক আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্তৃক কোনো বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেনি। মন্ত্রী আরো বলেন, মাদকদ্রব্যের নিয়ন্ত্রণ, সরবরাহ ও চাহিদা হ্রাস, অপব্যবহার ও চোরাচালান প্রতিরোধ এবং মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কল্পে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছে। এ আইন অনুযায়ী মাদক ব্যবহারকারীসহ মাদক অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। কোনো মাদক অপরাধীর সন্ধান পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক তাৎক্ষনিকভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বিএনপির সাংসদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, গত ১০ বছরে বিএসএফ কর্তৃক ২৯৪ জন বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০০৯ সালে ৬৬ জন, ২০১০ সালে ৫৫ জন, ২০১১ সালে ২৪ জন, ২০১২ সালে ২৪ জন, ২০১৩ সালে ১৮ জন, ২০১৪ সালে ২৪ জন, ২০১৫ সালে ৩৮, ২০১৬ সালে ২৫ জন, ২০১৭ সালে ১৭ জন ও ২০১৮ সালে ৩ জনকে হত্যা করা হয়েছে।

অসীম কুমার উকিলের (নেত্রকোনা-৩) প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা/আহত/আটক ইত্যাদি নিয়ে প্রতিনিয়ত বিজিবি এবং বিএসএফ এর বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়মিতভাবে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় । এ সকল পতাকা বৈঠকে সীমান্তের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা ও সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। পাশাপাশি সরকার ও ক‚টনৈতিক পর্যায়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সাম্প্রতিককালে সীমান্ত এলাকার জনগণের মধ্যে এবং দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে কনফিডেন্স বিল্ডিং এর নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে । যা সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমনে সহায়ক হবে বলে বিশ্বাস। এছাড়াও দিনে-রাতে সীমান্ত এলাকা নজরদারিতে রাখার জন্য বিজিবি ইউনিটগুলো নিয়মিত টহল দিচ্ছে।

তিনি বলেন, সীমান্ত এলাকায় বিজিবি এবং বিএসএফ কর্তৃক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে সেসকল স্থানগুলো সমন্বিত টহল কার্যক্রমের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। বিওপি থেকে পার্শ্ববর্তী বিওপির মধ্যবর্তী দূরত্ব কমানোর জন্য ১২৮টি পোস্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া বিজিবি কর্তৃক সীমান্ত এলাকায় সার্ভিলেন্স সিস্টেম স্থাপনের জন্য ৩২৮ কিলোমিটার স্পর্শ কাতর এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে । পর্যায়ক্রমে সকল এলাকায় আধুনিক ক্যামেরাসহ সার্ভিলেন্স সিস্টেম স্থাপন করা হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশি নাগরিকগণ যাতে করে শূন্য লাইন অতিক্রম না করতে পারে সে ব্যাপারে সীমান্তবর্তী এলাকায় চেয়ারম্যান, মেম্বার এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সীমান্তে বসবাসরত জনসাধারণের মাঝে বিজিবি কর্তৃক নিয়মতভাবে প্রেষণা প্রদান করে আসছে।
সীমান্তে ২০১৭ সালে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যার সংখ্যা ১৭ জন এবং ২০১৮ সালে হত্যার সংখ্যা ৩ জন। যা আগের বছরের তুলনায় অনেকটা কমে এসেছে বলে প্রতীয়মান। সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিকদের হত্যা বন্ধের বিষয়ে বিজিবির সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে এবং সরকার এ ব্যাপারে কূটনৈতিক পর্যায়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। সীমান্ত হত্যাকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ব্যাপারে বিজিবির সার্বিক চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here