দৈনিক সমাজের কন্ঠ

সাংবাদিক ছাড়া গণমাধ্যম মালিকদের অস্তিত্ব নেই-প্রধান বিচারপতি

সমাজের কণ্ঠ  ডেস্ক -১৯ আগস্ট, ২০১৯ –    সাংবাদিক ছাড়া গণমাধ্যম মালিকদের অস্তিত্ব নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

সাংবাদিক ও সংবাদপত্রে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নবম ওয়েজ বোর্ডের সুপারিশ নিয়ে গেজেট প্রকাশের ওপর স্থিতাবস্থার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের ওপর শুনানিকালে আজ সোমবার (১৯ আগস্ট) এ মন্তব্য করেন তিনি।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নিউজ পেপারর্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (নোয়াব) পক্ষে শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ।

শুনানিতে রিটকারীর আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ বলেন, ‘সাংবাদিকরাই তো পত্রিকা চালাচ্ছে। তাঁরা যদি কাজ না করেন তাহলে পরদিন সাদাকালো কাগজ বের হবে।’ এ সময় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘সাংবাদিক ছাড়া গণমাধ্যম মালিকদের অস্তিত্ব নেই।’

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানিতে বলেন, ‘গেজেট প্রকাশের আগেই এটা চ্যালেঞ্জ করে মামলা করা হয়েছে। এই রিট প্রি-ম্যাচিউরড।’  তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের বেতন না দেওয়ার লক্ষ্যেই এ মামলা করা হয়েছে। ওয়েজ বোর্ডের গেজেট হওয়ার পর ১৪ দিনের মধ্যে আপত্তি জানানোর সুযোগ আছে। কিন্তু সে গেজেটই তো হয়নি। তার আগেই রিট করা হয়েছে।’

এ এফ হাসান আরিফ বলেন, ‘শ্রম আইনের ১২৮ ধারা অনুযায়ী যে গেজেট হওয়ার কথা তা হয়নি। সেই গেজেট হলে আপত্তির সুযোগ আছে। এরপর আইনের ১৪৫ ধারা অনুযায়ী আরেকটি গেজেট হবে সেটাই চূড়ান্ত। সেটাও হয়নি। এরপর আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে গেজেট প্রকাশের বিষয় জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমি খোঁজ নিয়ে আপনাদের জানাবো।’

আগামীকাল মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) এ বিষয়ে আদেশের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার (১৯ আগস্ট) শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এই দিন নির্ধারণ করেন।

গত ৬ আগস্ট নবম ওয়েজ বোর্ডের সুপারিশসংক্রান্ত গেজেট প্রকাশের ওপর দুই মাসের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এতে ওয়েজ বোর্ডের সুপারিশ বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে সরকার। গতকাল আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে শুনানি হয়। সরকারপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার শুনানি করেন। আর রিট আবেদনকারী নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (নোয়াব) সভাপতি ও প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ ও মো. উজ্জ্বল হোসেন।

আইনজীবীরা জানান, চেম্বার জজ কোনো আদেশ না দিয়ে বিষয়টির ওপর শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান। একই সঙ্গে ১৯ আগস্ট সোমবার দিন ধার্য করেন।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ৬ আগস্ট ওই স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন। নোয়াবের পক্ষে করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই আদেশ দেওয়া হয়।

আদালত অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করেন। রুলে শ্রম আইন অনুযায়ী অংশীজনদের আপত্তি উত্থাপনের সুযোগ না দিয়ে একতরফাভাবে নবম ওয়েজ বোর্ডের সুপারিশ চূড়ান্ত করা এবং তা গেজেট আকারে প্রকাশের সুপারিশ করে সরকারের কাছে পাঠানো কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।

এর আগে ২০১৮ সালের ২ জুলাই হাইকোর্ট নবম ওয়েজ বোর্ড গঠন করা কেন অবৈধ ও শ্রম আইনপরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন। ওই রুল এখনও বিচারাধীন।