সমাজের কণ্ঠ ডেস্ক : ২০ আগস্ট, ২০১৯ -সফররত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. সুব্রামানিয়াম জয়শংকর বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে ভারতের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। এই রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে নিরাপদ, দ্রুত ও টেকসই প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি। বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমার-এই তিন দেশের জাতীয় স্বার্থেই এটা করা জরুরি। বাংলাদেশ থেকে এই বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে তাদের নিজ ভূমিতে ফিরে যেতে এবং রাখাইন রাজ্যের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে আমরা সব ধরণের সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছি।
আজ মঙ্গলবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথিশালা যমুনায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি একথা বলেন।
জয়শংকর বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত সুদৃঢ় এবং ভবিষ্যতে এটা আরো জোরদার হবে। আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী দুটি অনুষ্ঠানই উদযাপন করতে যাচ্ছি।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আমার প্রথম ঢাকা সফর। বাংলাদেশের সাথে আমাদের অংশীদারিত্ব প্রতিবেশী দেশগুলোও যে পাশাপাশি একসাথে মিলেমিশে থাকতে পারে তার উদারহণ। আমরা অংশীদার হিসেবে একসাথে কাজ করি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দক্ষিণ এশিয়ায় রোল মডেল হিসেবে এই অংশীদারকে টিকিয়ে রাখতে চান।
জয়শংকর বলেন, আমরা বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে গর্ব বোধ করি। নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে আমরা বাংলাদেশের উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তার প্রস্তাব দিচ্ছি।
পানি বন্টনের ব্যাপারে ভারতের এই মন্ত্রী বলেন, পানিসম্পদ বাংলাদেশের জন্য একটি গুরত্বপূর্ণ বিষয় এবং আমাদের মতো তারাও অভিন্ন ৫৪টি নদীর জন্য উভয়পক্ষের গ্রহণযোগ্য একটি উপায় বের করতে চায়।
তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জয়শংকর বলেন, আপনারা জানেন যে, এ ব্যাপারে আমাদের সরকারের একটি অবস্থান আছে। এ ব্যাপারে আমাদের একটি অঙ্গীকার আছে এবং এটা পরিবর্তন হবে না।
তিনি আরো বলেন, যখন নিরাপত্তার প্রশ্ন সামনে আসে তখন অপরাধ, সন্ত্রাসবাদ, চরমপন্থার বিরুদ্ধে দুদেশের অংশীদারিত্বও উন্নয়ন দুদেশের জনগণকেই সরাসরি সুফল দেয় বলে আমাদের বিশ্বাস। দু’দেশের জনগণের মধ্যে সবক্ষেত্রে যোগাযোগ বেড়েছে। জনগণের মধ্যে আরো যোগাযোগ বাড়ানোর লক্ষে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। জ্বালানী সহযোগিতার ব্যাপারে তিনি বলেন, দুটি দেশই পরস্পরের সফলতার সুফল ভোগ করে।
এর আগে সকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাজধানীর ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিদর্শন করেন। তিনি সেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।