বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের চরম ধৃষ্টতা ও মিথ্যাচার।সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা

0
1
সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মিথ্যাচার।

সমাজের কন্ঠ ডেস্ক: বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের চরম ধৃষ্টতা ও মিথ্যাচার।সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা। ফ্রান্সে ঘটে যাওয়া ঘটনায় বাংলাদেশে একটি মহল সংখ্যালঘুদের টার্গেট করে অপপ্রচার ও গুজব ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ৷ গুজব ছড়িয়ে হামলাও চালানো হচেছ বলে অভিযোগ৷

অবশ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘‘সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে কোনো অপপ্রচার বা গুজব ছড়ানো হচ্ছে না৷ অপপ্রচার করা হচ্ছে আমাদের মহানবীর (সা.)-এর বিরুদ্ধে৷ হামলার ঘটনা তারা বাড়িয়ে বলছেন৷’’

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাসগুপ্ত অভিযোগ করেন, ‘‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ নানা উপায়ে গুজব ছড়িয়ে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা এবং তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে৷’’ এর প্রতিবাদে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ৭ নভেম্বর সারাদেশে গণঅবন্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছে৷ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করবেন তারা৷

রানা দাসগুপ্ত অভিযোগ করেন, কুমিল্লার মুরাদনগরে এবং দিনজপুরের পার্বতীপুরে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হয়েছে৷ মুরাদনগরে বাড়ি ঘরে হামলা এবং আগুন দেয়া হয়েছে৷ এপর্যন্ত ফেসবুকে এই ধরনের গুজবের শিকার হওয়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়জন সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দু ছাত্র-ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে৷ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তাদের মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী তিথি সরকার নিখোঁজ আছেন৷ অধ্যাপক কুশল চক্রবর্তীকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘শুধু সংখ্যালঘু বা হিন্দু নয়, লালমনিরহাটে একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিমকে পিটিয়ে হত্যা করেছে ধর্মান্ধ গোষ্ঠী৷’’

শুধু সংখ্যালঘু বা হিন্দু নয়, লালমনিরহাটে একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিমকে পিটিয়ে হত্যা করেছে ধর্মান্ধ গোষ্ঠী: রানা দাসগুপ্ত

এদিকে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি এক সংবাদ সম্মেলনে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন, সংখ্যালঘু কমিশন ও মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানানো হয়৷ তারা ওই শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, আটকদের মুক্তি এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দাবি করেছেন৷

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের ‘গুজব’ ও ‘অপপ্রচার’ নিয়ে সরকারও উদ্বিগ্ন৷ এর বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর অবস্থানে যেতে বলা হয়েছে৷

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমে নানা ধরনের অপপ্রচার ও গুজব নিয়ে সরকার সমস্যায় আছে৷ এটা নিয়ে নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে৷ তারপরও এরা তাদের মেধা খাটিয়ে নতুন নতুন কৌশল আবিষ্কার করছে ৷ অনেক অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে৷ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী চেষ্টা করছে৷ তারা লেগে আছে৷ ফেসবুকসহ আরো যেখানে এগুলো করা হচ্ছে সেগুলো কন্ট্রোল করা যাবে বলে তার আশা৷

যতগুলো অপপ্রচার হচ্ছে আমরা দেখতে পাচ্ছি সবই নবীজীর নামে অপপ্রচার করা হচ্ছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে টার্গেট করে গুজব ও হামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এগুলো ওনারা অন্যায়ভাবে বলছেন৷ যতগুলো অপপ্রচার হচ্ছে আমরা দেখতে পাচ্ছি সবই নবীজীর নামে অপপ্রচার করা হচ্ছে৷ কোনো হিন্দু ধর্মগুরুর নামে অপপ্রচার আমাদের চোখে পড়েনি৷ এগুলো করে আসলেই একটা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে৷ লালমনিরহাটে কী ঘটল? কুমিল্লায় দুই লোক কী একটা লিখে একটা নারকীয় কাণ্ড ঘটিয়ে দিল৷ একজনের বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হল৷ আরও দুইজন ছাত্র কী একটা লিখেছে তা নিয়ে সমস্যা হচ্ছে৷ আগে ভোলায় একটি হিন্দু ছেলে কি একটা লিখেছিল৷ তারপরে দেখেছেন কী অবস্থা হয়েছে৷ তারা একটু বাড়িয়ে বলছেন৷ কেউ কিন্তু হিন্দুদের বিরুদ্ধে কিছু লিখছে না৷’’

এদিকে পুলিশ সদরদপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি দেশে দুর্ভাগ্যজনকভাবে কয়েকটি গুজব সৃষ্টির কারণে নৃশংস ঘটনা ঘটেছে৷ সম্পদ বিনষ্ট হয়েছে ও নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে৷ দেশকে অস্থিতিশীল করার অভিপ্রায়ে একটি স্বার্থান্বেষী মহল স্পর্শকাতর ধর্মীয় বিষয়সহ নানা বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও জনশৃঙ্খলা বিনষ্টের চেষ্টা করছে৷

তাই কোনো প্রকার গুজবে কান না দিতে এবং যে কোনো তথ্য ও সংবাদ যাচাই ব্যতীত বিশ্বাস না করতে জনগণের প্রতি আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ৷ সেই সঙ্গে আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার বর্বর প্রবণতা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করা হয়েছে৷ এ ধরনের সকল বেআইনি কর্মকাণ্ড কঠোর হাতে দমন করা হবে বলে পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here