দৈনিক সমাজের কন্ঠ

ঢাকা-বেনাপোল রুটের বিআরটিসি বাসে উঠে মায়ের চিকিৎসার টাকা খোয়ালেন এক যুবক

নাজিম উদ্দীন জনি, শার্শা(বেনাপোল)প্রতিনিধি : ‘স্যার টাকাটা উদ্ধার না হলে আমার মায়ের অপারেশন হবে না। তিনি মারা যাবেন। টাকা ছাড়া কোন আমি ফিরতে পারব না। আমার আত্মহত্যা ছাড়া আর কোনো পথ নেই। বাসের সুপার ভাইজারকে ধরলে আমার টাকা উদ্ধার হবে। উনি রাতে রাস্তায় বাস থামিয়ে অপরিচিত একজনকে উঠিয়েছিলেন। সেই আমার ব্যাগ থেকে সব নিয়ে গেছে।’

রোববার (১৪ জুলাই) বিকালে বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশের কাছে নিজের টাকা খোয়ানোর ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তা উদ্ধারের জন্য এমন আর্তনাদ করেন ভারতীয় পাসপোর্টধারী যাত্রী ত্রিপুরার চিরঞ্জিত দেবনাথ।

ভুক্তভোগী এ যাত্রী জানান, তিনি মায়ের চিকিৎসা করাতে আগরতলা থেকে বেনাপোল হয়ে কলকাতা যাওয়ার জন্য শনিবার (১৩ জুলাই) রাতে ঢাকা থেকে বিআরটিসির একটি বাসে ওঠেন।

পথিমধ্যে রাতে নির্জন স্থানে সুপারভাইজার বাস থামিয়ে হেড লাইট কেটে গেছে জানিয়ে সবাইকে নেমে বাইরে অপেক্ষা করতে বলেন।

এর কিছুক্ষণ পর সুপারভাইজার আবার তাদেরকে বাসে উঠতে বলেন। এ সময় তিনি দেখতে পান অপরিচিত একজন বাস থেকে নেমে যাচ্ছে। সকালে তিনি বেনাপোল পৌঁছে বাস থেকে নেমে দেখেন তার ব্যাগে রাখা বাংলাদেশি ১৭ হাজার, ২০ হাজার রুপি ও দামি একটি মোবাইল সেট নাই।

পরে বাস কাউন্টরে অভিযোগ জানালে কেউ গুরুত্ব দেয়নি। এ সময় তিনি বাধ্য হয়ে পুলিশে অভিযোগ দেন।

বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল লতিফ জানান, যাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি ঐ বাসের লোকজনদেরকে থানায় ডাকিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

এর আগে গত ১০ এপ্রিল অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়া এক যাত্রীকে সেবা না দিয়ে সোহাগ পরিবহনের সুপারভাইজার বেনাপোল বন্দর সড়কে বাস থেকে নামিয়ে দেয়। ঐ যাত্রীর অর্থ লুট ও অমানবিক আচরণের অভিযোগে পুলিশ পরিবহনের চালক ও সুপারভাইজারকে আটক করে।

এছাড়া গত (২৯ এপ্রিল) ভারতীয় চার যাত্রী অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে সর্বস্ব হারান। এসব ঘটনায় পোর্ট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

জানা যায়, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে চিকিৎসা, ব্যবসা আর ভ্রমণে এ পথে যাত্রীদের ভারতে যাতায়াত বেশি। আর এ পথে পাসপোর্ট যাত্রীদের সবার কাছে বেশ নগদ অর্থসহ মূল্যবান সামগ্রী থাকে। তাই তাদেরকে লক্ষ্য রেখে এ রুটে অজ্ঞান পার্টি ও প্রতারক চক্রের তৎপরতা বেশি। তবে এসব বন্ধে পুলিশের নজরদারি কম থাকায় দিন দিন তা বেড়ে চলেছে। অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে যারা সর্বস্বান্ত হয় তাদের দশ শতাংশ যাত্রী পুলিশে অভিযোগ করলেও ৯০ শতাংশ ঝামেলা এড়াতে এটাকে নিয়তি মেনে নিয়ে ফিরে যায়।