দৈনিক সমাজের কন্ঠ

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ বৈশাখী মুখর হয়ে উঠছে বর্ষবরণের উৎসবে।

সোহানুর রহমনা- আজ ১লা বৈশাখ ভোরবেলায় নতুন সূর্যোদয়ের মধ্য দিয়ে শুরু হলো নতুন বাংলা বছর ১৪২৬ বঙ্গাব্দ।আজ ভোর থেকে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে সারাদেশে চলছে নানা আয়োজন।রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ মুখর হয়ে উঠেছে বর্ষবরণের উৎসবে। গ্রীষ্মের খরতাপ উপেক্ষা করে বাঙালি মিলিত হয়েছে প্রাণের এই উৎসবে।

সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রমনার বটমূলে বাংলা নতুন বছরকে বরণ করে নেয় ছায়ানট। ‘অনাচারের বিরুদ্ধে জাগ্রত হোক শুভবোধ’ এই প্রতিপাদ্যে সকাল সোয়া ৬টায় শুরু হয় ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। সেখানে রবীন্দ্রনাথের ‘মোরে ডাকিয়া লয়ে যাও’ গানটি পরিবেশিত হয় যৌথকণ্ঠে। মোট ৩১টি পরিবেশনায় সাজানো হয় ছায়ানটের এবারের আয়োজন। শেষ হয় জাতীয় সংগীতে।

ছায়ানটের অনুষ্ঠানে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং ক্ষোভ-প্রতিবাদ জানানো হয়েছে দেশে সংঘটিত নানা অনাচারের বিপক্ষে। এসময় শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয় নুসরাত জাহানসহ নানা অবিচার এবং অনাচারে প্রাণ হারানো মানুষদের।  তাদের জন্য এক মিনিটের নীরবতাও পালন করা হয়।

 

ছায়ানটের সভাপতি সন্‌জীদা খাতুন তার বক্তব্যে বলেন,  ‘কিছু মানুষ কী পাষণ্ড হয়ে উঠলো! নববর্ষ যদি ভাতৃত্ববোধ মানবতাবোধের উন্মেষ না ঘটাতে পারে তাহলে নতুন দিন কী বার্তা নিয়ে আসে? ‘ওরা অপরাধ করে’ কেবল এই কথা না বলে, প্রত্যেকে নিজেকে বিশুদ্ধ করবার চেষ্টা করি। আর আমরা যেন নীতিবিহীন অন্যায়- অত্যাচারের নীরব দর্শকমাত্র হয়ে না থাকি। প্রতিবাদে, প্রতিকার সন্ধানে হতে পারি অবিচল। নববর্ষ এমন বার্তাই সঞ্চার করুন আমাদের অন্তরে।’

এদিকে ‘মস্তক তুলিতে দাও অনন্ত আকাশে’ স্লোগানে ১৪২৬ সনের বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার সকাল ৯টায় শোভাযাত্রাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের সামনে থেকে শুরু হয়। শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। শোভাযাত্রাটি হোটেলে ইন্টারকন্টিনেন্টাল (পুরনো রূপসী বাংলা), শাহবাগ ও টিএসটি মোড় ঘুরে ফের চারুকলার সামনে গিয়ে শেষ হয়।

শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন স্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। শোভাযাত্রাকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তার চাদরে মোড়ানো হয় পুরো বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ এলাকা।

 

পহেলা বৈশাখের ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে রমনার বটমূলে ঢল নেমেছে মানুষের। বেলা যত বাড়ছে সঙ্গে বাড়ছে মানুষের ভিড়। বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত চলেছে এই অনুষ্ঠান।

নববর্ষ উপলক্ষে রবিবার সরকারি ছুটির দিন। জাতীয় সংবাদপত্রগুলো বাংলা নববর্ষের বিশেষ দিক তুলে ধরে ক্রোড়পত্র বের করেছে। সরকারি ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলে নববর্ষকে ঘিরে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে।

এবার মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হচ্ছে ইউনিয়ন পর্যায়েও।

নববর্ষ উপলক্ষে গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সবার শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন।