ডাঃ বাহারুল আলম – গত ১৫ দিনে বাংলাদেশে ৪৭ জন শিশু যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হয়েছে (সুত্রঃ বিবিসি)। তার মধ্যে ৩৯জন কন্যাশিশু, বাকী ০৮ পুরুষ-শিশু । এ তথ্য প্রমাণ করে বাংলাদেশে শিশুরা নিরাপত্তার প্রশ্নে কতটা হুমকির মুখে ! এ তথ্যের বাইরে আরও অসংখ্য শিশু নির্যাতিত ও ধর্ষিত হয়েছে যা প্রকাশ পায় নি সামাজিক নিরাপত্তা ও মর্যাদার ভয়ে।
মা-বাবার উদাসীনতা ও অজ্ঞতার কারণেই শিশুরা যৌন হয়রানির শিকার হয়। যে কোন ব্যক্তির হাতে শিশুকে তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। যৌন নির্যাতনকারীরা সবসময় সুযোগের অপেক্ষায় থাকে ।
সন্তানের অভিভাবকদের আতঙ্ক নিরসনে রাষ্ট্র কোন কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে না । সদা উৎকণ্ঠিত ও আতংকিত অভিভাবকরা শিশুদের চোখের আড়াল হতে দিতে চায় না। যদিও তাদের এই মনোজাগতিক নজরদারি দৃশ্যমান নয়।
অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সমৃদ্ধি বা উন্নয়ন নাগরিকদের অতিমাত্রায় পাশবিক করে তুলছে । উন্নয়নের পাশাপাশি এ পাশবিকতার বিরুদ্ধে মানবিকতার উন্নয়ন না ঘটালে শিশু যৌন-নির্যাতন চলতেই থাকবে । উন্নয়নে রাষ্ট্রীয় বাজেটের পাশাপাশি মানবিক উন্নয়নের জন্য বাজেট বরাদ্দ, রাজনৈতিক কর্মসূচি ও সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা খুবই জরুরি । ভবিষ্যতে আধুনিক মানবিক সমাজ গড়ে তোলার প্রয়োজনে এসব কর্মসূচি এখনই হাতে নেওয়া প্রয়োজন। কেবল বক্তব্য ও বিশ্লেষণ ও প্রচলিত আইনের দোহাই দিয়ে দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া রাষ্ট্র ও তার সরকারের অনুচিত। অপরাধ দমনে প্রচলিত আইন ও বিচার ব্যবস্থা অপরাধ দমনে মোটেও কার্যকর নয়। তার সাথে যুক্ত আছে প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ ।
অভিভাবকদের উচিত তার সন্তানদের এ হিংস্র আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করার বিষয়টি খোলামেলাভাবে জানানো যেন নির্যাতনকারীর আচরণে , কথায়, প্রলোভনে শিশুরা বিভ্রান্ত হয়ে তাদের খপ্পরে না পড়ে ।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরাও শিশুদের এ সকল বিষয় স্পষ্ট করে বোঝানো উচিত যেন শিশুদের মনোজগতে ঐ সকল প্রতারণা ও প্রলোভনের বিরুদ্ধে ইচ্ছাশক্তির সৃষ্টি হয়। মা বাবা এবং শিক্ষকরাই পারে শিশুদের নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান সৃষ্টি করতে ।