দৈনিক সমাজের কন্ঠ

বোর্ডের খামখেয়ালীপনায় বাদ পড়ছে সিনিয়ররা। দেশের ক্রিকেটে চলছে ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’

ডা. শাহরিয়ার আহমেদঃ ক্রিকেট বোর্ডের খামখেয়ালীপনায় দেশের ক্রিকেটে চলছে ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’র মতো করে।

সাব্বির রহমানকে পারফর্ম করে জাতীয় দলে ফিরতে হয়নি। ফিরলেও তার পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই। দুবাইতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এশিয়া কাপে ওপেন করতে নেমে করেছিলেন মাত্র ৫ রান। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে রানের খাতা খুলতে পারেনি। শেষ ম্যাচে তিনি করেছেন ১২ রান। তবু তাঁর সামর্থ্যে ভরসা খুঁজে পাওয়া জেমি সিডন্সকে নিয়েই এখন বিস্ময়। না হলে আমিরাতের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে ফ্রি হিট থেকে মারা সাব্বিরের স্রেফ এক ছক্কায় এতটা বুঁদ হয়ে যাবেন কেন জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ!

এই অস্ট্রেলিয়ান বলেছেন, ‘এবার ফেরার পর এখনো পায়ের নিচে মাটি খুঁজে পায়নি সাব্বির। তবে একটি শটেই সে দেখিয়েছে, ব্যাট হাতে কী করতে পারে। এটিই আরো বেশি দেখতে চাইব।’ হতে পারে শিষ্যকে সমালোচনার আড়াল দিতেই সাব্বিরের মাঝে ‘ওয়ান শট ওয়ান্ডার’ বা ‘এক শটের বিস্ময়’ আবিষ্কারের চেষ্টা করেছেন তিনি।

কিন্তু পারফর্ম না করা কাউকে নিয়ে এমন মন্তব্য করে সবাইকে ভুল বার্তা দেওয়া হচ্ছে বলেই মনে করেন সাবেক প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ, ‘পুরো জাতীয় দলটিই এখন দিনের পর দিন সবাইকে ভুল বার্তা দিয়ে যাচ্ছে। জেমির এই বক্তব্য বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা না। যখন ব্যাখ্যা দেওয়ার কিছু থাকে না, তখনই এ রকম মন্তব্য শোনা যায়। এ রকম হলেই বোঝা যায় এই দলটির মধ্যে বিরাট সমস্যা লুকিয়ে।’

তিনি বলেন, ‘‘দলটি চলছে আসলে ‘যেমন খুশি, তেমন সাজো’র মতো করে। কোনো পরিকল্পনাই তো চোখে পড়ছে না। এমন তো নয় যে বিশ্বকাপের দিন-তারিখ এই সেদিন ঠিক হয়েছে। এত বড় টুর্নামেন্টে খেলতে যাওয়ার আগে ম্যানেজমেন্টের ঘুম ভাঙল কিনা এখন!’’

ফারুক বলেন, ‘‘দল গড়ার (বিশ্বকাপ স্কোয়াড) আড়ে শ্রীরাম তিন দিনের জন্য এসে বললেন যে, ‘আমরা ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড় খুঁজছি। ’ এটি তো অনেকটা আগের দিন রাতে পরিকল্পনা করার মতো ব্যাপার হয়ে গেল। ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড় খুঁজবেন, ভালো কথা। সেটি তো শুরু করবেন এক-দেড় বছর আগে থেকেই। ইমপ্যাক্টের কথা বলে যাকে নিয়েছে, তাকে আবার খেলায়নি। শান্তকে (নাজমুল হোসেন) কি খেলিয়েছে? ওকে কি লুকিয়ে রাখছে? টিম ম্যানেজমেন্ট পুরো দল নিয়ে রীতিমতো উপহাস শুরু করেছে।’ এখন বাংলাদেশ দলটির অবস্থা দেখুন। কোনো পজিশনে কোনো স্থিরতা নেই, ওপেনিংয়েও  চলছে মাত্রাতিরিক্ত পরীক্ষা নীরিক্ষা। আপনি বিশ্বকাপ খেলতে চলে যাচ্ছেন আনকোরা দুজন ওপেনার নিয়ে। মিডল অর্ডারে আছে সিরিয়াস অভিজ্ঞতার অভাব। ‘ঝড়ে বক মরে, ফকিরের কেরামতি বাড়ে’ ধরনের ব্যবস্থায় বিশ্বাস রেখে যাচ্ছেন আপনি। এই দল যদি ভালো কিছু করেও, সেটি হবে ‘ঝড়ে বক মারা’র মতো কিছু। এমন হয় না যে ক্রিকেটে কোনো দিন হুটহাট কিছু ঘটে যায়। তবে সেটি কিছুতেই সার্বিক পরিকল্পনার ফসল হবে না।’’