দৈনিক সমাজের কন্ঠ

দিনাজপুরের মেডিকেলে চিকিৎসকের উপর হামলা।কিছু মিডিয়ার মিথ্যাচার ও প্রকৃত বাস্তবতা

সমাজের কন্ঠ ডেস্ক – দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে চিকিৎসকের উপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভর্তি হওয়ার পরই রোগীর সাথে আসা কয়েকজন হাসপাতালের চিকিৎসায় সন্দেহ প্রকাশ করতে শুরু করে। যক্ষার রোগীকে কেন তিনটির বদলে চারটি মেডিসিন দেয়া হল, এই বিষয় নিয়ে ইনডোর মেডিকেল অফিসার এর সাথে অসৌজন্য আচরন করেন। এই নিয়ে ১১ টার দিকে বেশ কিছু ছেলে পেলে মেডিসিন ওয়ার্ডে এসে ডাক্তার দের হামলা করে, ডাক্তার দের শারিরীক ভাবে হেনস্থা করে এবং সবশেষে পালিয়ে যায়। উপস্থিত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা, ২ জন সন্ত্রাসীকে আটকে রেখে পুলিশে দেয়া হয়। আটক দুই জন, পুলিশের কাছে স্বীকার করে তারা হাসপাতালে মারামারি করতে এসেছিলো।

এর পরই ক্রমাগত ঘটে যাওয়া চিকিৎসকদের উপর হামলার প্রতিবাদে এবং সারা বাংলাদেশে চিকিৎসকদের জন্য নিরাপদ কর্মস্থলের দাবিতে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ কয়েক ঘন্টার ধর্মঘট করেন।

তার পরদিনই চিকিৎসক এবং হাসপাতালের নামে উদ্দেশ্য মূলক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে, বিভিন্ন লোকাল এবং জাতীয় পত্রিকায় নিউজ প্রকাশিত হয়।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সম্মান ক্ষুন্ন করার জন্য, কোন এক পত্রিকায় খবর এসেছে, ‘ইন্টার্নি ডাক্তার মেয়ের পিঠে হাত দিয়েছে’! অন্য জায়গায় নিউজ হয়েছে “কাউকে গায়ে হাত দেয়নাই, ডাক্তার’রা মেরে ডাক্তাররাই অবরোধ ডেকেছে।”

প্রকৃত ঘটনা না জেনে বা উভয় পক্ষের বক্তব্য না নিয়ে হাসপাতালের সুনাম ক্ষুন্ন করার উদ্দেশ্যে এই ধরনের খবর প্রকাশে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, সর্ব স্তরের চিকিৎসক সমাজ।

উল্লেখ্য, এর পূর্বে প্ল্যাটফর্ম নিউজ পোর্টালে যক্ষ্মার চিকিৎসায় সকালে ৪ টা ট্যাবলেট কেন? এই অভিযোগে দিনাজপুরে মেডিকেলে হামলা
শিরোনামে, হামলার প্রকৃত খবর প্রকাশিত হয়েছিল।

এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ছাত্র লীগের সভাপতি, ডা. ইশরাক শাহরিয়ার এঞ্জেল প্ল্যাটফর্ম’কে জানান,
“আমি নিউজ এর মিথ্যাচার আগেও দেখেছি৷ নগ্ন মিথ্যাচার প্রথম বার দেখলাম৷
মিথ্যাচারের বিচার এদেশে তো আর হয়না। তাই বিচার চাওয়ার প্রশ্ন নেই৷ কিছু মিথ্যাচারে সত্য ঘটনা মিথ্যা ও হয়ে যাবেনা। শুধু আফসোস থাকলো মানুষ সত্য টাই জানতে পারেনা৷ মিথ্যারা রাজত্ব করে,সত্য গুমড়ে মরে।”

ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ, এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ, দিনাজপুর, প্রেস বিজ্ঞপ্তি হিসেবে একটি প্রতিবাদ লিপি প্রকাশ করেছেন।

প্রতিবাদ লিপির থেকে নিম্মে উল্লেখ করা হলঃ

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৯ তারিখ রাতে, একজন স্পাইন টিবি এর রুগী কে চিকিৎসা দেন আমাদের সম্মানিত ইনডোর মেডিকেল অফিসার ডাঃ ফয়সাল আব্বাস স্যার৷ ঘটনা আটটা কি সাড়ে আট টার দিক হবে৷ ১০.৩০ এ যখন স্যার আবার রোগীকে দেখতে গিয়ে দেখলেন সম্পুর্ন সামর্থ থাকার পর ও প্রয়োজনীয় মেডিসিন রোগীর লোকজন আনে নি, এবং তারা চিকিৎসায় সন্দেহ পোষণ করে চিকিৎসা শুরুর আগেই কম্পলেইন শুরু করেছে।তারা বলে এর আগে কোন ডাক্তার তিনটি ঔষধ দিয়েছিলো,ইনি কেনো ৪ টি দিলেন।এবং তারা মিসবিহেভ শুরু। তিনি রোগীর ৪৫ বছর বয়সী স্ত্রী কে ধমক দেন৷ ঘটনা এটুক ই৷

এই নিয়ে ১১ টার দিকে বেশ কিছু ছেলে পেলে মেডিসিন ওয়ার্ডে এসে ডাক্তার দের হামলা করে, ডাক্তার দের শারিরীক ভাবে হেনস্থা করে এবং সবশেষে পালিয়ে যায়। আমরা ২ জন কে আটকে রেখে পুলিশে দেই। তারা স্বীকার ও করে তারা হাসপাতালে মারামারি করতে এসেছিলো।

এরকম বেশ কিছু ঘটনার কিছু দিন ধরেই হাসপাতালে ঘটেছে৷ তাই আমরা ডাক্তার রা এক বেলা অবস্থান ধর্মঘট ঘোষনা করি৷ ইমার্জেন্সি তে জরুরী সেবা চালু রেখেই আমরা ইমার্জেন্সি এর সামনে অবস্থান নেই।এবং সকাল ৮-৩ টাপর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করি৷ সেই সাথে পরিচালক বরাবর নিরাপত্তা সহ আরো বেশ কিছু দাবিতে স্বারকলীপি প্রদান করা হয়৷ এবং দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা আমাদের অবস্থানে অচল ছিলাম।অবশেষে ৩ টার আগে নিরাপত্তা সংক্রান্ত দাবী তখন ই মেনে নেয়া হলে এবং অন্যান্য দাবী মৌখিক ভাবে মেনে নিলে হাসপাতালে সেবা আবার চালু হয়৷ এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়৷

আজ সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে বের হয়ে আমি নিউজ গুলো দেখে আতকে উঠি৷ “এক জায়গায় নিউজ হয়েছে কোন ইন্টার্নি ডাক্তার মেয়ের পিঠে হাত দিয়েছে ” এক যায়গায় নিউজ হয়েছে ” কাউকে গায়ে হাত দেয়নাই, ডাক্তার রা মেরে ডাক্তার রাই অবরোধ ডেকেছে ”