রাশিদুজ্জামান সরদার, ডুমুরিয়া প্রতিনিধি।
খুলনা ডুমুরিয়া উপজেলায় এবছর কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রথম বারের মত ১ হেঃ জমিতে মিষ্টি আলুর আবাদ হয়েছে। বারি মিষ্টি আলু ৮ এবং ১২ জাতের এ আলু চাষ করে কৃষক অত্যন্ত খুশি।
ডুমুরিয়া উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের কৃষক মৃত্যঞ্জয় বলেন, কৃষি অফিস থেকে প্রথম বারের মত লতি ও সার পেয়ে ২০ শতক জমিতে বারি মিষ্টি আলু ১২ জাতের আলু চাষ করি। আগে লবনাক্ততার কারনে যেখানে কেবলমাত্র একটি ফসল হত এবং আমন পরবর্তী সময়ে পতিত থাকত, সেই জমিতে ৬২ মন আলু পেয়েছি। উৎপাদন খরচ কম ও ভালো মূল্য পাওয়ায় আগামীতে আমিসহ অনেক কৃষক এটির চাষ করবে এবং আগামীতে এর আবাদ বৃদ্ধি পাবে।
সলুয়া গ্রামের কৃষক রনজিত মন্ডল বলেন, প্রদর্শনী সহায়তা ও প্রশিক্ষন পেয়ে আমি ২০ শতক জমিতে প্রথম বারের মত বারি মিষ্টি আলু ০৮ জাতের আলুর আবাদ করেছিলাম এবং ৪২ মণ আলু পেয়েছি, বাজার মূল্যও গোল আলুর তুলনায় ভাল এবং ঝুঁকি কম, এজন্য আগামীতে এর আবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, এটি স্বল্প জীবন কালীন এবং অত্যন্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ উচ্চ মূল্যের একটি সবজি। ডুমুরিয়ার আবহাওয়া এবং মাটি এটি চাষের জন্য উপযোগী এবং এ ফসলে ঝুঁকি ও কম। এটি মাটিকে ঢেকে রাখে বলে মাটিতে অনেক দিন রস থাকে, আগাছা কম হয় এবং এর পাতা পচে উৎকৃষ্ট সার হয়।
তিনি আরও বলেন এটি সম্প্রসারণের জন্য আমরা কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কৃষককে নিয়মিত প্রশিক্ষন এবং প্রদর্শনী সহায়তা দিচ্ছি এবং এটি সম্প্রসারনে কাজ করে যাচ্ছি। আগামীতে এর আবাদ এবং এলাকা বৃদ্ধি পাবে।
কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি কৃষিবিদ মোঃ মোখলেছুর রহমান বলেন, আগে কন্দাল ফসল অনাদর অবহেলায় বিভিন্ন বাগান বাদাড়ে বিক্ষিপ্ত ভাবে জন্মাত, কন্দাল ফসল বলতেই নিরাপদ এবং উচ্চ মূল্যের, এ প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা কৃষককে প্রশিক্ষন ও সহায়তা প্রদান করে এটি বানিজ্যিক চাষাবাদ ও উদ্যোক্তা তৈরির কাজ করছি এবং কৃষকের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তির জন্য এটি বাইরে রপ্তানির জন্য ও কাজ করছি।কন্দাল-জাতীয় সবজি মিষ্টি আলু তাপ প্রয়োগের ফলে এর স্টার্চ ভেঙে প্রাকৃতিক শর্করা ‘মল্টোজ’য়ে পরিণত হয়।
পুষ্টি-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে মিষ্টি আলুর উপকারিতা সম্পর্কে জানানো হল।
মিষ্টি আলু উচ্চ আঁশজাতীয় খাবার যা কার্বোহাইড্রেইটের জটিল যৌগ। ফলে তা শরীরে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে। এটা বিটা ক্যারটিনের ভালো উৎস যা মূলত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন এ’তে রূপান্তরিত হয়। এটা কেবল চোখের স্বাস্থ্যই ভালো রাখে না বরং ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং বয়সের গতি ধীর করে।
প্রচলিত বিশ্বাস ও পুষ্টিবিজ্ঞানের তথ্যানুসারে অনুযায়ী, মিষ্টি আলু স্টার্চ বা মল্টোজের কারণে রক্তচাপ বাড়ায় না। এটা উচ্চ আঁশ-জাতীয় হওয়ায় তা ধীরে খরচ হয় যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। টাইপ টু ডায়াবেটিস দূরে রাখে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে মিষ্টি আলু বেশ উপকারী।