দৈনিক সমাজের কন্ঠ

মিশরে সরকার বিরোধী গনবিক্ষোভের মুখে অবৈধ শাসক সিসি’র পতন আসন্ন!

মিশরের রাজপথে স্বৈরাচারী শাসক সিসি বিরোধী আন্দোলনের একাংশ (ফাইল ফটো)

আব্দুল্লাহ আল মাসুম: মিশরে অবৈধ শাসক আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির পদত্যাগ দাবিতে মিশরে নতুন করে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন আন্দোলনকারীরা। এইসব বিক্ষোভ মূলত মাঝারি টাইপের।মিসরের রাজধানী কায়রোসহ গিজা, ফাইউম, মিনিয়া, লাক্সার এবং আসওয়ানে চলমান এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন হাজার হাজার মিসরীয়। তাদের একটাই দাবি, ভয় পাবেন না, সিসিকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে তাই প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।

মিশরের স্বৈরশাসক সিসি বিরোধী আন্দোলন

#কার-ডাকে নতুন করে বিক্ষোভ হচ্ছে মিসরে?

মিশরীয় সেনাবাহিনীর ঠিকাদার থেকে হুইসল ব্লোয়ার বনে যাওয়া মোহাম্মদ আলী মিশরীয় অবৈধ ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিক্ষোভের আহ্বান জানিয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায়ও তিনি সকল বিক্ষোভকারীদের টানা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
তিনিই এই নতুন বিক্ষোভের মাস্টার-মাইন্ড ব্যক্তি।

#অবৈধ– সিসি প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া?

বিক্ষোভে সংহতি জানাতে স্থানীয় মিসরীয়রা রাস্তায় নেমে আসার পর গতকাল মঙ্গলবার দক্ষিণ কায়রোতে কারফিউ জারি করেছে সিসির নেতৃত্বাধীন মিসর পুলিশ। কথিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে গুজব ছড়ানোর অপবাদ দিয়ে পুরো দেশজুড়ে দুই শতাধিক মানুষকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫০ জনকে রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা প্রসিকিউশনে হাজির করা হয়েছে। এ ব্যাপারে গতকাল জাতিসংঘ মিশরের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, জনগণকে নিজের মত প্রকাশের অনুমতি দিতে হবে এবং সরকারকে অবশ্যই তা শুনতে হবে।

#মিসরীয়দের প্রতি সিসির ভয়াবহ নির্যাতন!!

সিসি এখন পর্যন্ত মিশরে ৬০ হাজার থেকে এক লাখ রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের কারাগারে অন্যায়ভাবে আটক করে রেখেছে। এদের অধিকাংশই মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থক। এই তথ্যটি জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক কতৃক সত্যায়িত। বুঝতেই পারছেন মিসরের অবস্থা কত ভয়াবহ। ঐখানে আইনের বালাই নাই।

#এই চলমান আন্দোলনে কি সিসির পতন হবে?

আমার মনে হয় না এই আন্দোলনে সিসির পতন হবে। এমনকি পুরো মিসরও যদি সিসির বিরুদ্ধে আন্দোলনে জড়িয়ে যায় তবুও সিসির পতন হবে না।

#কেন সিসির পতন হবে না?

সিসির পতন না হওয়ার কারণ হলো আন্তর্জাতিক প্রায় সব পরাশক্তি সিসিকে সমর্থন দেয় বিশেষ করে ইউরোপ, ইসরাইল ও রাশিয়া। এসব দেশের মিডিয়াগুলোও সংগত কারণে মিসরীয় আন্দোলনের কোনো খবর ফোকাস করে নাই। এটা হলো আন্দোলনকারী মিসরীয়দের সিসি কতৃক গনহত্যার সবুজ সংকেত।

#কখন বা কি উপায়ে সিসির পতন হতে পারে?

মিসরের নিরাপত্তার সাথে ইসরাইল এর নিরাপত্তা জড়িত ফলে পুরো মিসর রক্তে ডুবলেও মিসরীয়দের আন্দোলন সফল হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না পরাশক্তিগুলো সিসিকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে একমত হয়। তবে সিসির পতনের আরেকটা বিকল্প রাস্তা আছে যদি কোনো মুসলিম দেশ সরাসরি মিসরীয়দের সামরিক সাহায্য দিয়ে মিসরীয় সেনাবাহিনীত ভাংগন ধরিয়ে বিদ্রোহীদের হাতে অস্ত্র তূলে দেওয়ার মাধ্যমে সিসির পতন
সম্ভব। আর এই কাজটা তূরস্কই পারবে শুধু।

#তবুও এই কাজটি অসাধ্য!!

এই পদ্ধতিতে তূরস্ক সফল হওয়ার সম্ভাবনাও 5%।কারণ হলো ঐ পরাশক্তি। সিসি একা থাকলে এরদোগান তার বা-হাত ঘুরানোর সাথে সাথে সিসির পতন হতো, কিন্ত সিসি একা নয়। যখনি মিসরের সেনারা বিদ্রোহ করতে চাইবে পরাশক্তি দেশগুলোর গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তখন এক হয়ে সিসির পক্ষ নিয়ে এই বিদ্রোহ দমন করে ফেলবে ফলে বুঝতেই পারছেন এই প্লান বিও হলো অসাধ্য প্রায় একটা কাজ। তবে যদি মিসর সীমান্তবর্তী লিবিয়ার নিয়ন্ত্রণ তূরস্ক নিতে পারে তাহলে সিসির পতন সম্ভব।

#এই আন্দোলনের প্রভাব কতটুকু?

এই আন্দোলন যদি অব্যাহত রাখতে পারে মিসরীয়রা তাহলে পরাশক্তিদের এটা ভাবাবে যে সিসি আর তাদের কোনো উপকারে আসবে না। তখন তারা সিসির বিকল্প খোজে সিসিকে তাড়িয়ে দিবে। ফলে এই আন্দোলনের প্রভাব বলতে গেলে ভালোই। একবার সিসি সরে গেলে আস্তে আস্তে মিসর আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এখন পরাশক্তিগুলো দেখছে সিসি এই আন্দোলনগুলো কত শক্তভাবে ট্যাকেল দিতে পারে তাই মিসরবাসীদের উচিত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া।