দৈনিক সমাজের কন্ঠ

ঘুর্ণিঝড় ‘ফণী‘ বরিশালে ১হাজার ১০৮টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ২৪হাজার ৩৩০জন সেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

মোহাম্মাদ রায়হান – ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ মোকাবিলায় দফায় দফায় সভা করছে বরিশাল বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংস্থা। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এরইমধ্যে সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) আওতাধীন বরিশাল বিভাগের ১ হাজার ১০৮টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ২৪ হাজার ৩৩০ জন সেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি আগাম সতর্কতা হিসেবে বরিশালের অভ্যন্তরীণ নৌ-রুটে সবধরনের নৌযান চলাচাল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। বরিশাল সিপিপির উপ-পরিচালক মো. আব্দুর রশিদ জানান, সিপিপির আওতাধীন বরিশাল জেলার ৫ উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্রসহ সেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেচ্ছাসেবকরা দুর্যোগ মোকাবিলায় সতর্কতামূলক প্রচার-প্রচারণাসহ আগাম সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। অপরদিকে বরিশাল রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ইউনিট লেভেল অফিসার (ইউএলও) গোলাম কবির জানান, বরিশাল জেলায় তাদের প্রায় ৪শ’ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভলান্টিয়ার রয়েছে। যাদের প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি উদ্ধারকারী সরঞ্জামগুলোও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সার্বিক বিষয়ে বরিশালে জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেন, শুক্রবার (৩ মে) আঘাত হানতে পারে ‘ফণী’। তাই এটির মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে বরিশাল। এরইমধ্যে বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী ও উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে দফায় দফায় সভা করা হয়েছে। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে দুর্যোগ মোকাবিলা নিয়ে আগাম প্রস্তুতিমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। দুর্যোগের সতর্কতা নিয়ে জনসাধারণকে অবহিত করার জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ মোকাবিলায় সভা। ছবি: বাংলানিউজতিনি বলেন, বিভিন্ন সংস্থার সেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ১ লাখ ২৫ হাজার লোকের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন জেলার ২৩২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন বিদ্যালয় ভবন, কমিউনিটি সেন্টার ও উপাসনালয় ভবনও প্রস্তুত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবারসহ বিভিন্ন সহায়তার ব্যবস্থাও রাখার হয়েছে। ‘যেহেতু আবহাওয়া বার্তায় জলোচ্ছ্বাস ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি এমন দুর্যোগের পর বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দেয়। তাই পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও চাপকল নিরাপদে ঢেকে রাখার জন্য গ্রাম পর্যায়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ জেলা প্রশাসক বলেন, জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের উদ্ধার কাজের জন্য সড়ক পথের পাশাপাশি নৌ-পথেও পর্যাপ্ত যানবাহনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সার্বিকভাবে জেলা, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, সিপিবি, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ সংশ্লিষ্ট সবাই দুর্যোগের বিষয়ে যার যার অবস্থান থেকে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। এদিকে, জেলার সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন জানান, প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মেডিকেল টিম নিরাপদ, গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি সরঞ্জামসহ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।