নবীগঞ্জ উপজেলা কৃত্তি সন্তান সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ.এম.এস কিবরিয়া   

    0
    0

    মোঃ হাসান চৌধুরী, নবীগঞ্জ প্রতিনিধি:
    শাহ এ.এম.এস কিবরিয়া হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ১০ নং দেবপাড়া ইউনিয়নের জালালসাফ গ্রামের ১৯৩১ সালে মে মাসের ১তারিখ জন্মগ্রহন করেন।১ ছেলে ১ মেয়ে রেখে গেছেন পুত্র ড.রেজা কিবরিয়া স্বনামখ্যাত অর্থনীতিবিদ এবং কন্যা নাজলি কিবরিয়া বস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।তিনি ছিলেন অর্থনীতিবিদ,কূটনৈতিক,রাজনৈতিক। নবীগঞ্জ উপজেলায় অসংখ্য প্রাইমারি স্কুল,রাস্তা, কালভার্ট, ইত্যাদি নিমার্ণ করে ছিলেন।নবীগঞ্জের কৃত্তি সন্তান হয়ত অনেক আসবে কিন্তু এই রকম এক জন মানুষ আর নবীগঞ্জ উপজেলা বাসি পাবে না।এ রকম এক জন মানুষ যে সব সময় মানুষের সেবায় নিয়োজিত তাকতেন কিভাবে উন্নয়ন করা যায় কি করলে মানুষ এর উপকার হবে তা নিয়ে সব সময় তাকতেন।শুধু নবীগঞ্জবাসী নয় সারা বাংলাদেশের মানুষ মনে রাখবে শাহ এ.এম.এস কিবরিয়া কে।শাহ এ.এম. এস কিবরিয়া ১৯৫৪ সালে পাকিস্তান সেন্ট্রাল সুপিরিয়র সার্ভিস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে পররাষ্ট্র সার্ভিসে যোগ দেন। ১৯৫৭ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত শাহ এ.এম. এস কিবরিয়া পাকিস্তান কূটনৈতিক মিশনের সদস্য হিসেবে কলকাতা, কায়রো,জাতিসংঘ মিশন,নিউইয়র্ক,জাকার্তায় দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ইসলামাবাদে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এবং ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন।বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালে ওয়াশিংটন পাকিস্তান দূতাবাস ত্যাগ করে মুজিবনগর সরকারের প্রতি অনুগত্য প্রকাশ করেন। বহির্বিশ্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে কাজ করেন।তিনি মার্কিন সিনেটের ও কংগ্রেস সদস্য এবং ওয়াশিংটনের সিনিয়র কলামিস্টদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। মুক্তিযোদ্ধাদের কার্যক্রম এবং যুদ্ধকালীন অবস্থায় হানাদার বাহিনী কর্তৃক অবরুদ্ধ বাংলাদেশের জনগণের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে অবহিত হতে পারত।  ১৯৭৮ সালে তিনি পররাষ্ট্র সচিব পদে প্রত্যাবর্তন করেন ১৯৮১ সাল পর্যন্ত তিনি পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন।তিনি ১৯৮৬ সালে জাতিসংঘ  মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কম্বোডিয়ান হিউম্যানিটারিয়ান রিলিফ প্রোগ্রামে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন।  শাহ এ.এম.এস কিবরিয়া ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তাকে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কার হয়।১৯৯৪ সালে তাকে আওয়ামীলীগ সভাপতির রাজনৈতিক উপদেষ্টা নিযোগ করা হয়। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি শেখ হাসিনার মন্ত্রীসভায় অর্থমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি হবিগঞ্জ-৩ আসন থেকে বিপুল ভোটে সংসদ- সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি অর্থমন্ত্রী হিসেবে পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেন। শাহ এ.এম.এস কিবরিয়া অর্থমন্ত্রী দায়িত্ব পালন কালে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেন। উল্লেখযোগ্য কর্মসুচি হলো: বিধবা ভাতা,বৃদ্ধ ভাতা,ক্ষুদ্র পরিসরের কৃষিঋণ কার্যক্রম, যুব কর্মসংস্থান কর্মসূচি এবং ব্যাংকিং ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার কর্মসুচি, উন্নয়নের ক্ষেত্রে কৃষিমুখী অর্থনীতির প্রসারের উদ্যোগ নেন।আমাদের সৌভাগ্য যে এই নবীগঞ্জের মাটিতে একজন কৃত্তি সন্তান হেঁটে চলে গেছেন আমাদের আঙিনা থেকে। সেই মহান ব্যাক্তি হলেন বাংলাদেশ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ.এম.এস কিবরিয়া।২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজার আওয়ামী লীগের ঈদ-পরবর্তী জনসভা শেষ বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহন হন আহত অবস্থায় চিকিৎসা জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।এ পৃথিবীর ঘূর্ণন কোন  যদি থেমেও যায়, নতুন কোন কোন গ্রহ তার বুকে ধারণ করে মানবসভ্যতার বিস্তার, আমি তো চোখ বন্ধ করে বলব, আরেকজন শাহ কিবরিয়ার আর্বিভাব ঘটবে ন কোন দিন। এ রকম এক জন কৃত্তি সন্তান কে যারা চিনতে পারেননি সেসব মানুষেকে ধিক্কার। ২৭ জানুয়ারি চিরদিন হাহাকার করে আকাশে বাতাসে পৃথিবী থেকে ভিন্ন পৃথিবীতে, মানুষের অস্তিত্ব থেকে অস্তিত্ব সংসারে। কোন দিন ও হারিয়ে জাবে না বাংলার ছায়া থেকে নিস্পাপ মুখ।তিনি নিজেকে নিয়ে চিন্তিত ছিলেন না। তার যত চিন্তা ছিল নবীগঞ্জ বাসি সহ সারা বাংলাদেশের মানুষের নিয়ে। যাই হউক অনেক বছর হয়ে গেল তবুও নবীগঞ্জবাসী মহান ব্যাক্তি কে ভুলে নাই। শাহ এ.এম.এস কিবরিয়া ২০০৫ সালে ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জে এক গ্রেনেট হামলায় নিহত হন।

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here