ডা. শাহরিয়ার আহমেদঃ প্রতি শীতকালে ভোর বেলা সুস্বাদু খেজুরের রস আর খেজুর রসে ভেজানো পিঠা খাওয়াটা আবহমান বাংলার ঐতিহ্য, অথচ কালের পরিক্রমায় সেই গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুরের রস এখন আর তেমন দেখা যায় না। কমেছে খেজুর গাছ, হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ কাটা গাছিরাও। আধুনিকতার ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে সেই খেজুর গাছ ফলে কমে গেছে খেজুর রসের উৎপাদন, ধিরে ধিরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে আবহমান বাংলার এই ঐতিহ্য।
একসময় দেশের প্রায় সকল জেলা উপজেলার এক শ্রেণীর মানুষ শীত মৌসুমে খেজুর গাছের রসের উপর তাদের জীবিকা নির্ভর ছিলো অথচ একের পর এক খেজুর গাছ উজাড় হয়ে যাওয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যটি।
একসময় হেমন্তের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে গ্রাম পাড়া মহল্লায় গাছ তোলা বা কাটার হিড়িক পড়ে যেতো। গায়ের পথে-ঘাটে, নদী বা পুকুরপাড়ে, বড় রাস্তার দুধারে বা খেতের আল ঘেঁষে শত শত গাছের শীর্ষভাগ বিশেষভাবে কাটতেন গাছিরা। ১৫-১৬টি পাতা রেখে গাছের উপরিভাগের বাকলসহ অপ্রয়োজনীয় অংশ পরিষ্কার করতেন। আড়াআড়িভাবে বাঁধা বাঁশের দণ্ডে দাঁড়িয়ে কোমরে ও গাছে রশি পেঁচিয়ে ধারালো দা দিয়ে গাছিদের গাছ কাটার দারুণ দৃশ্য এখন তেমন চোখে পড়ে না।
সরকারীভাবে এই শিল্পটিতে পৃষ্ঠপোষকতা না করলে অচিরেই গ্রামীন বাংলা থেকে সমুলে বিলুপ্ত হয়ে যাবে এই ঐতিহ্যটি।