দৈনিক সমাজের কন্ঠ

চিকিৎসায় বৈজ্ঞানিক ভিত্তি না থাকায় হোমিওপ্যাথিক বাতিল করেছে বৃটিশ স্বাস্থ্য বিভাগ।

FB Picture

ডা. মুজিবর রহমান, লন্ডন থেকে —

রোগ সারানোর ক্ষমতা নেই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতির। এটা কাজের নয়। এটা স্রেফ ভাঁওতা।হোমিওপ্যাথিকে বাতিল করেছে বৃটিশ স্বাস্থ্যবিভাগ। ডাক্তার প্রতিদিনে এই ভূয়া ও বাতিল পদ্ধতির ওপর লেখা দেখে অবাক হয়েছি। তাই সবার জ্ঞাতার্থে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের মাতৃভূমি বৃটেন থেকে এ বিষয়ে লিখছি । বৃটিশ গবেষকদের সাফ কথা _____

রোগ সারানোর ক্ষমতা নেই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতির। এটা কাজের নয়। এটা স্রেফ ভাঁওতা।

এটা মেনে নিয়েছে বৃটিশ স্বাস্থ্য দপ্তর।
গবেষণা বলছে, ‘রোগ নিরাময় ও চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি কাজে আসে এমন কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই’। পৃথিবী বিখ্যাত বিজ্ঞানীরাও মনে করেন, হোমিওপ্যাথি রোগীদের জন্য ‘শেষ মুহূর্তের নিষ্ক্রিয় ভেষজ সান্ত্বনা’।

এ কারণে ‘বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিহীন’ এই চিকিৎসাকে সরকারি স্বাস্থ্য সেবা থেকে বাদ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস। আপাতত এই নির্দেশ মেনে সেবা দেয়া হচ্ছে ইংল্যান্ডের উত্তর দিকের কিছু এলাকায়।

প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিকল্প আধুনিক চিকিৎসা হিসেবে প্রচার করা হলেও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় আসলে কোনো রোগ সারে না।

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার মূল ভাবনা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ব্রিটিশ চিকিৎসকরা।

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার মূল ভাবনা হলো কোনো রোগীর উপসর্গের মাত্রা বাড়িয়ে দিলে সেই রোগ সেরে ‌যায়। যেমন- কারো সর্দি হলে তার নাক ও চোখ দিয়ে জল পড়ে। তাকে যদি চোখের তলায় পেঁয়াজের রস লাগাতে বলা হয় তবে তার জল পড়া আরও বেড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে জল সর্দির উপশম হবে।

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার আরেকটি প্রধান তত্ত্বকেও প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছেন তারা। ব্রিটিশ চিকিৎসকদের মতে, হোমিওপ্যাথির তত্ত্ব অনুযায়ী, কোনো ওষুধে যত জল মেশানো হবে তার কার্যক্ষমতা ততই বৃদ্ধি পায়।

চিকিৎসকরা গবেষণায় দেখেছেন, এভাবে জল মেশাতে মেশাতে এক সময় মিশ্রণে ওষুধের কোনো উপস্থিতিই থাকে না। সেক্ষেত্রে কী করে সারতে পারে রোগ?

ব্রিটিশ ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের মতে, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় ওষুধ খেলে অনেকের মানসিক জোর বৃদ্ধি পায়। তাতে শরীরের গ্রন্থিগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে, এর ফলে অসুখ সারতে পারে। কিন্তু এর মানে এই না, হোমিওপ্যাথিক ওষুধে রোগ সেরেছে। কারণ, কেউ অসুস্থ হলে তা সারানোর ক্ষমতা নেই হোমিওপ্যাথির।

_____________________________

লেখক লন্ডন প্রবাসী লোকসেবী চিকিৎসক।