কি হল/ হবে আইন বিষয়ে পড়ালেখা করে ডিগ্রি অর্জন করে! আইনজীবী হিসাবে স্বীকৃতি না মেলায় পরিচয়হীন বেকার জীবনের গল্প যেন কেউ শুনতে ও বুঝতেই চায় না। ডিগ্রি অর্জন করে ও যদি বার কাউন্সিল এর বেড়াজালে বন্দী থাকতে হয়, আইনজীবী হিসাবে নিজের পরিচয় দেওয়া না যায় তাহলে শিক্ষা নবীশ আইনজীবীদের এই অজানা গন্তব্যের অবসান কোথায়!
পরীক্ষার মাধ্যমে আইনজীবী তালিকাভুক্তিই যদি আইনগত বাধ্যবাধকতা হয় তাহলে রুটিন মাফিক প্রতি বছর পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে না কেন? কে জবাব দেবে এই অনিয়মের বেড়াজালে বন্দী ৭০০০০০ শিক্ষা নবীশ আইনজীবী ও লক্ষ লক্ষ আইনের ছাত্র ছাত্রীদের? করোনা কারণে আজ জাতীয় পযার্য়ের পরীক্ষাসমূহ যদি বন্ধ করে অটো প্রমোশন দেওয়া সম্ভব হয়, বিসিএস এর লিখিত পরীক্ষা বাতিল করা হয় তাহলে বছরের পর বছর আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষা হচ্ছে না এর কি কোন প্রতিকার নাই?
সরকার নিশ্চুপ! যেন এটা সরকারের চিন্তার বিষয়ই নয়! আর বার কাউন্সিল মনে করেন শিক্ষানবীশ আইনজীবীরা তাদের জন্য অভিশাপ! আইনের বিষয়ে দৃষ্টি দেওয়া যাক আইন কি বলে?
অনুচ্ছেদ ৪১ অনুযায়ী কেন মামলা পরিচালনা করা যায় না? শিক্ষানবীশ আইনজীবীরা কি বার এর তালিকা ভুক্ত নয়? তারাও তো শিক্ষা নবীশ আইনজীবী হিসাবে বার কাউন্সিলে তালিকা ভুক্ত। প্রতিটি বার এসোসিয়েশনে এই পরিচয়ে চলছে তাহলে শিক্ষানবীশ কালীন তার দক্ষতা অর্জনের জন্য শুনানি করতে বাধা কোথায়? বাধা হলো আমাদের সিনিয়ররা। তারা চান না নতুন আইনজীবী এসে তাদের আয়ে ভাগ বসাক।
শিক্ষা নবীশ আইনজীবীগণ আইন বিষয়ে পড়ালেখা করে ডিগ্রি অর্জন করে বার কাউন্সিল এর রেজিষ্ট্রেশন করে শিক্ষা নবীশ আইনজীবী পরিচয় পেয়েছেন, যারা সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে অধ্যায়নরত সবাই আজ হতাশাগ্রস্থ।
আর বার কাউন্সিল মনে করেন শিক্ষা নবীশ আইনজীবীরা তাদের জন্য অভিশাপ! বার কাউন্সিল আইন সংস্কার ছাড়া এই জাতাঁকল থেকে বের হবার পথ আছে কি? এর জন্য প্রয়োজন সমন্বিত এজেন্ডা, সমন্বিত আন্দোলন। বার কাউন্সিলের এডভোকেট তালিকাভুক্তির জন্য অপেক্ষাধীন সকল আইনে স্নাতক ভাই-বোনেরা identity crisis এ আছে। আমরা কি তালিকাভুক্তির পূর্ব পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘শিক্ষানবীশ’???
বিদ্যমান আইন/বিধি কি বলে?
# বার কাউন্সিল বিধি ৬০(২) অনুযায়ী শিক্ষানবীশকাল ৬ মাস।
# আবার শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ৪(৮) ও ধারা ২৭৫ অনুযায়ী শিক্ষানবীশকাল ৬ মাস।
যেহেতু অনুচ্ছেদ-৪১ অনুযায়ী আমরা তালিকাভুক্তি ব্যতীত কোর্টে আইন পেশায় যুক্ত হতে পারবো না, আমরাও বলছি না আমরা এডভোকেট। তবে কোর্টের বাইরে অন্য প্রতিষ্ঠানে কেউ যদি আইন সেবার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে সে এডভোকেট হোক বা না হোক সে আইনজীবী।
# আমার প্রশ্ন হলঃ
১-কেন শিক্ষানবীশকাল অনির্দিষ্টকাল?
২-কোন আইন/বিধি/বিচারিক নজীর অনুযায়ী এটা অনির্দিষ্টকাল?
৩-কোন নিয়মে ‘টাউট’ সংজ্ঞায়িত করা হচ্ছে?
অযোগ্য বার কাউন্সিল আজ আমাদের লেখা পড়া করে অর্জিত ডিগ্রিকে অবজ্ঞা করছে! আমরা দীর্ঘ দিন আইন পেশায় কাজ করেও কেন মান হানির স্বীকার হচ্ছি! কে জবাব দেবে? আর নয় জুলুম, সইবো না আর অত্যাচার, আমরা যারা শিক্ষা নবীশ আইনজীবী, আইন পেশায় কাজ করা আমাদের অধিকার।
তাই কর্তৃপক্ষের উচিৎ আর কাল ক্ষেপণ না করে যথাপোযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। শিক্ষা নবীশ আইনজীবীগণ দক্ষতা অর্জন করতে না পারলে নিজ থেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশা বেছে নিবে। রাষ্ট্রের নিরবতা, বার কাউন্সিলের উদাসিনতায় আইন শিক্ষায় যে টানাপরেন সৃষ্টি হয়েছে তা মোটেও কল্যাণকর নয়।
সিনিয়র আইনজীবীগণ ভাবেন আইন অঙ্গনে আইনজীবী বেশী হয়ে গেলে তাদের আয় কমে যাবে কিন্তু ক্ষনস্থায়ী এই দুনিয়ায় পুরাতন বিদায় নিবে নতুনের জায়গা করে দিবে এটাই তো সৃষ্টির নিয়ম। কর্তৃপক্ষের শুভবুদ্ধি হোক এই কামনায়।
– সংগৃহীত ও সংযোযিত