তবে কি ইমাম মাহদী (আঃ) এর আগমনের সময় হয়ে গেছে!

0
128

মোঃ ইলিয়াস হোসেন – ২০১৮ সালের মাঝামাঝির ঠিক সন্ধা বেলা হঠাৎ ৩০-৩৫ বয়সের একটা ছেলে আর একটা মেয়ে (ইংলিশ শুনে মনে হলো এ্যারাবিয়ান বা স্প্যানিশ হবে) কোন কারন ছাড়াই আমার কাছে এসে বললো, তুমি কি জানো ২০১৯ সালেই পৃথিবীতে অনেক বড় কিছু ঘটতে যাচ্ছে? আমি বললাম না, কি ঘটবে? বললো, ভালো কাজ করতে থাকো আর অপেক্ষা করো, ঘটলে দেখবে৷ ঠিক আছে, কিন্তু তোমরা কারা? বললো আমরা হিউম্যান!
কেমন যেন একটা রহস্যময় মনে হলো, আমার পুরো শরীর কাঁপছিলো!
লোকগুলির দিকে তাকিয়ে ভাবছিলাম কি হবে? হয়তো এমনিতেই বলছে মনে করে উড়িয়ে দিয়েছিলাম৷ আজকে সোহাগের টাইমলাইনের লেখাটা পড়ে মনে হচ্ছে আসলেই কি তাহলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং ইমাম মাহাদীর আসার সময় হয়ে গেছে?
————–

থার্ডটেম্পেল কি? প্রতিটা মুসলমানের এটা সম্পর্কে জানা জরুরি।

ঈসরাঈলের টেম্পল ইনষ্টিটিউট গত ২৮ আগষ্ট জেরুজালেমের একটি গরুর খামারে রেড-হফারের (লাল বাছুর) জম্ম হয়েছে বলে দাবি করেছে। অবশ্য সেটা আরো কিছুদিন গভীর অবজারভেশনে রাখা হয়েছে নিশ্চিত হবার জন্য। যদি এটাই হয় সেই লাল- বাছুর, তবে এর জন্যই ঈসরাঈল জাতী ২০০০ বছর ধরে অপেক্ষা করছিল। ইহূদীদের বিশ্বাস মতে এই লাল – বাছুরই কোরবানি দেয়া হবে থার্ড টেম্পলে। এরপর এটাকে পুড়িয়ে ভষ্ম করা হবে যাতে ইহুদী জাতী পাপ থেকে মুক্ত হবে এবং ভবিষ্যত পৃথিবীর নেতৃত্ব দেবে। এই থার্ড টেম্পলে হবে তাদের মাসিহার (দাজ্জালের) হেডকোয়াটার্স ।

এই লাল-বাছুরটিকে হতে হবে ১০০% নিখুঁত। জম্ম হতে হবে জেরুজালেমে। এর আরো কিছু বৈশিষ্ট রয়েছে যার জন্যই এটা এত বিরল। তবে এটাই ইতিহাসের প্রথম রেড হফার নয়। এর আগে ৯ টি রেড-হফারের জম্ম হয়েছে এবং সবগুলোই একই নিয়মে প্রথম এবং দ্বিতীয় -টেম্পলে কোরবানি দেয়ার পর ভষ্ম করা হয়েছে।

তাদের মতে ১ম রেড হফার মুসা (আ : ) কোরাবানি দিয়েছিল আসমানি আদেশ পাওয়ার পর। ২য় রেড হফার একই প্রথায় কোরবানি দেন প্রফেট ইজরা (হযরত ঊযায়ের) জেরুজালেমে ইহুদীদের প্রথম টেম্পলে।

এর পর ২য় টেম্পলের দীর্ঘ সময়ে মোট ৭ টি রেড হফার কোরবান দেয়া হয়। ৯ম টি কোরবান দেয়া হয়েছিল তিতুসের হাতে ২য় টেম্পল ধ্বংস হওয়ার সময় ২০০০ বছর আগে। ঐ সময় জাতি হিসেবে ঈসরাঈলের পতন হয়েছিল।

১৯৪৭-৪৮ সালে ঈসরাঈল রাষ্ট্রের জম্ম হওয়ার পর থেকেই তারা থার্ড টেম্পল নির্মানের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে এবং রেড হফারের অপেক্ষায় দিন গুনতে থাকে। কারন, ১০ম এবং শেষ রেড-হফারের কোরবানীর পরই তাদের কাংখিত মাসীহা টেম্পল মাউন্টে আসবে এবং দুনিয়াতে রাজত্ব করবে। তাই রেড হফারটি এতই গুরুত্বপূর্ণ।

কিন্তু কি এই থার্ড টেম্পল ? এটা বুঝতে হলে আল আক্বসা মসজীদের ইতিহাস জানতে হবে।

হিব্রু বাইবেল অনুসারে জেরুজালেমে প্রথম ইহুদী উপাসনালয় (টেম্পল) নির্মান করেন হযরত সুলাইমান (আ Happy ৯৫৭ খ্রিষ্টপূর্বে। এরপর যাকারিয়া (আ: ) , মুসা ( আ: ), দাউদ (আ : ), ইসহাক ( আ : ) এবং আরো অনেকে তা সংস্কার করেন। প্রায় সাড়ে চারশ বছর পর ৫৮৭ খ্রিষ্টপূর্বে Neo-Babylonian Empire এর রাজা দ্বিতীয় নেবুচাদনেজ্জার (Nebuchadnezzar II) প্রথম টেম্পল বা সুলাইমান টেম্পল ধ্বংস করে।

এরপর ৩৪৯ খ্রিষ্টপূর্বে ইজরা (Ezra ) এবং নেহেমিয়াহর (Nehemiah) নেতৃত্বে দ্বিতীয় টেম্পল নির্মিত হয় যা টিকেছিল ৪২০ বছর। ৭০ খ্রিষ্টপূর্বে রোমানরা (খ্রিষ্টানরা) দ্বিতীয় টেম্পল ধ্বংস করে । এরপর এটা খৃষ্টান আর মুসলমানদের মাঝে হাত বদল হতে থাকে । ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত জেরুজালেম কখনো ইসরাঈলের হাতে আসেনি। টেম্পল নির্মানেরতো প্রশ্নই উঠেনা। এই বছরই যুক্তরাষ্ট্র জেরুজালেমকে ঈসরাঈলের রাজধানী ঘোষণা করে থার্ড টেম্পল নির্মানের পথকে আরো প্রশস্ত করে ।

তা হলে জেরুজালেমে ইহুদীদের থার্ড টেম্পল নির্মানে আর দেরি কেন? রেড-হফার ও তৈরি! সমস্যা হচ্ছে থার্ড-টেম্পল নির্মান করতে হবে প্রথম এবং দ্বিতীয় টেম্পলের যায়গায়, যার উপর এখন দাঁড়িয়ে আছে বায়তুল মুকদ্দাস । বিষয়টা নিশ্চয় টের পেয়েছেন? আল-আক্বসা মসজীদ ভাংতে হবে! ধারণা করা হচ্ছে ইহুদীরা আল-আক্বসা মসজীদের নিচে মাটির অনেক গভীরে খুড়ে বায়তুল মুকাদ্দাসের ভিত্তি দূর্বল করে ফেলেছে। ইহুদীরা সরাসরি আক্রমণে আল-আকসা মসজীদ ভাংতে যাবেনা। বলা হচ্ছে ঐ এলাকায় কৃত্তিম ভুমিকম্প ঘটিয়ে আল-আকসা মসজীদ ধ্বসে দেয়া হবে। ঠিক কোন ফন্দি তারা আঁটছে বলা মুশকিল। তবে এ নিয়ে তারা দিন রাত কাজ করে যাচ্ছে। নির্দেশেনা অনুযায়ী “টেম্পল মাউন্ট ইনস্টিটিউট” থার্ড-টেম্পলের যাবতীয় আসবাব, তৈজস-পত্র, রাবাঈ (ইমাম) এর গাউন, এমন কি খুবই বিরল ধুপ পর্যন্ত তৈরি করে রেখেছে। টেম্পল মাউন্ট ইনস্টিটিউটের মতে নির্মান কাজ শুরু হবার ৬ মাসের মধ্যেই টেম্পল-মাউন্ট অফারিং (কোরবানীর) জন্য তৈরি হয়ে যাবে।

এরপর কি? এরপরই আসল ঘটনা শুরু। টেম্পল মাউন্ট তৈরীকে ঘিরে ঐ হাদিসে বর্ণিত মালহামা (মহাযুদ্ধ , তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ) শুরু হতে পারে মুসলমান এবং খৃষ্টানদের একাংশের (রাশিয়া?) সাথে ইহুদী এবং খৃষ্টানদের অন্য অংশের (যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ) ।

ঈসরাঈল বাদে আশে-পাশের গোটা এলাকা অলরেডী যুদ্ধে পূড়ছে। বিশ্বের পরাশক্তিগুলু সিরিয়ায় ঘাঁটি গেড়েছে মূলত ঐ মহাযুদ্ধকে ঘিরেই। যুদ্ধের শেষ দিকেই আগমন ঘটবে ইমাম মাহদীর যাকে ইহুদীরা এবং খৃষ্টানরা মনে করবে এন্টি-ক্রাইষ্ট এবং অপেক্ষা করবে মাসীহা’র । এ সময়ই আসবে প্রকৃত দাজ্জাল , ইহুদীদের মাসীহা, যার জন্যই থার্ড টেম্পল নির্মান করে রেড হফার কোরবানি দিয়ে ওরা অপেক্ষা করছে। দাজ্জালের নেতৃত্বে ইহূদিরা সংগঠিত হবে সাথে থাকবে খৃষ্টানরাও। খৃষ্টানরা মনে করবে দাজ্জালই হযরত ঈসা ( আ : ) । কিন্তু দাজ্জালের পরপরই হযরত ঈসা ( আ: ) আগমনের পর অনেক খৃষ্টান প্রকৃত দাজ্জালকে চিনতে পারবে এবং হযরত ঈসা ( আ: ) এর বাইয়্যাৎ গ্রহণ করবে।

এবার আবার একটু লাল-বাছুরটি কথা ভাবুনতো! আসলেই যদি এটা সেই রেড-হফার হয় তবে কত সময় বাকি? একটা গরুই বা কত বাছর বাঁচে। তা ছাড়া লাল-বাছূরের কোরাবানী দিতে হবে, বুড়ো গরু নয়। ষ্টেজে সবকিছুই প্রস্তুত। অপেক্ষা শুধু ট্রিগার টানার। আল-আক্‌সা মসজীদ ভাঙ্গা বা থার্ড টেম্পল নির্মানের সাথে-সাথেই ডোমিনো ইফেক্টের মত খুব দ্রুতই সবকইছু ঘটতে থাকবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here