আজ ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস

0
0

ঋতু দে (স্টাফ রিপোর্টার) –  ইহাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি আমার জনগনকে আহ্বান জানাইতেছি যে,যে যেখানে আছ,যাহার যাহা কিছু আছে,তাই নিয়ে রুখে দাঁড়াও,সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করো।পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলার মাটি হইতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও।

২৫ শে মার্চ গ্রেফতার হওয়ার পূর্বমুহূর্তে ২৬ মার্চ জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান জাতির উদ্দেশ্য এই স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ঘোষনাটি ইংরেজি ভাষায় ছিল যাতে বিশ্ববাসী বুঝতে পাক বাহিনী গনহত্যার কথা,শোষনের কথা।স্বাধীনতার এ ঘোষণা তদানীন্তন ইপিআর এর ট্রান্সমিটার, টেলিগ্রাম, টেলিপ্রিন্টের মাধ্যমে প্রচার করা হয়।বঙ্গবন্ধুর ঘোষনা ২৬ শে মার্চ দুপুরে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা এম.এ. হান্নান চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে একবার এবং সন্ধ্যায় কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয় বার প্রচার করা হয়।২৭ মার্চ কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্র হতে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান পুনরায় বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন।
২৬ শে মার্চ আমাদের মহান স্বাধীনতা দিবস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ স্বাধীনতার ঘোষক।তার এই বার্তা শোনামাত্র দেশের বিভিন্ন জেলায় সাধারণ মানুষেরা ঘরে ঘরে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।শুরু হয় পাক বাহিনীর সাথে পূর্ব বাংলার সাধারণত জনগণের এক অসম যুদ্ধ। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ যুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধ নামে পরিচিত। ২৬ শে মার্চ থেকে ১৬ ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ জুড়ে পশ্চিম পাকিস্তানী সরকার মেতে উঠেছিল নির্যাতন, গণহত্যা ও তান্ডব ধ্বংস যজ্ঞে।তাদের লক্ষ্য ছিল ছাত্র সমাজ,শিক্ষক, ডাক্তার, সমাজ সেবক, বুদ্ধিজীবি তথা দেশের নিরীহ জনগণ। এছাড়াও তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী জনতাকে নির্বিচারে হত্যা করে। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ পাকিস্তানের গনহত্যা শুরু হলে পূর্ব বাংলার মানুষেররা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মুক্তিযুদ্ধ সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য ১০ এপ্রিল গঠিত হয় প্রথম অস্থায়ী সরকার।১৭ এপ্রিল শপথ গ্রহনের মধ্য দিয়ে মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাত তলায় এ সরকার যাত্রা শুরু করে।এ সরকার গঠনের দু ঘন্টা পর পাক বাহিনী বোমাবর্ষণ করে এবং মেহেরপুর দখল করে নেয়।এর ফলে মুজিব নগর সরকারের সদর দপ্তর কলকাতার ৮ নং থিয়েটার রোডে স্থানান্তর করা হয়।এরপর মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য ৪ টি সামরিক জোনে বাংলাদেশকে ভাগ করা হয় এবং ৪ জন সেক্টর কমান্ডার নিযুক্ত করা হয়।১১এপ্রিল তা পুনর্গঠিত করে ১১ টি সেক্টরে ভাগ করা হয়। সাথে কিছু সাব সেক্টর এবং তিনটি ব্রিগেড ফোর্স গঠন করা হয়।এসব সেক্টরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত বাঙালি সেনা কর্মকর্তা, সেনাসদস্য,পুলিশ, ইপিআর, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যগন যোগদান করেন।এছাড়াও ছিল গেরিলা ও সাধারণ যোদ্ধা। এরা মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তি ফৌজ নামে পরিচিত ছিল।এসব বাহিনীতে ছিল ছাত্র, যুবক,কৃষক নারী,শ্রমিকসহ দেশের সকল পেশার সাধারন মানুষ।মুক্তি যুদ্ধে সরকারের অধীন ছাড়াও গড়ে উঠেছিল বিভিন্ন বাহিনী। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা জাতির জনকের ২৬ শে মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে মুজিব নগর সরকারের নেতৃত্বে এ দেশকে দখলদারমুক্ত করতে রণক্ষেত্রে প্রাণ দিয়েছেন হাজার হাজার বীর সন্তানেরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here