মঙ্গলবার ভোরে বাঘারপাড়া থানার একটি ধর্ষণ মামলায় ডিবি পুলিশের হাতে আটক হবার পর জানা গেল অন্তত ২৪ নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত তিনি। নারীদের ধর্ষণের পাশাপাশি প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ উপার্জনই তার একমাত্র পেশা। কোথাও নিজেকে আশরাফুল মোল্যা, কোথাও সুমন আর্মি, কোথাও সুমন হাসান, কোথাও সুমন মোল্যা, কোথাওবা আশরাফুল ইসলাম পরিচয় দিয়ে প্রতারণা ও নারী ধর্ষণ করে আসছেন এই যুবক।
যশোর ডিবি পুলিশের এসআই অরুন কুমার দাস জানান, শ্বশুরবাড়ি থেকে আটককালে তার কাছ থেকে সেনাবাহিনীর ৪টি ভুয়া আইডিকার্ড, ৩টি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, ১টি ক্যাপ, ১টি সেনাবাহিনীর নেমপ্লেটসংযুক্ত জ্যাকেট, ১টি স্যুয়েটার, ১৩টি সিম কার্ড, একাধিক ধর্ষণের ভিডিও ধারণকৃত ১টি ম্যামোরি কার্ড ও ২টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে ব্রিফিংকালে যশোর ডিবি পুলিশের ওসি মারুফ আহম্মেদ জানান, আটকের পর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে সুমন স্বীকার করেছেন যে ঝিকরগাছা উপজেলার কলেজছাত্রীকে বাঘারপাড়া উপজেলার জামদিয়া গ্রামে নিয়ে ধর্ষণ, ধর্ষণের ভিডিও ধারণ এবং পরবর্তীতে ওই কলেজছাত্রীর বাবার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা দাবি করেন। এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা বাঘারপাড়া থানায় মামলা দায়ের করলে ওই মামলায় তাকে আটক করা হয়।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম জানান, আটকের পর জানা যায় সুমনের বিরুদ্ধে এমন কমপক্ষে ২৪টি ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। সুমন পুলিশের কাছে স্বীকার করেন যে তিনি মেয়েদের সঙ্গে প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক গড়েন। এরপর তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে সেগুলো ভিডিও করেন। সেই ভিডিওকে পুঁজি করে তাদের পরিবারের কাছ থেকে ব্লাকমেইলের মাধ্যমে অর্থ আদায় করে থাকেন। তার কাছ থেকে উদ্ধার মেমোরিকার্ডে বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে তার শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও রয়েছে। সেনাবাহিনীর সদস্য পরিচয় দেয়ায় মানসম্মানের ভয়ে টাকা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ নারীরা তার সাথে ঝামেলা মিটিয়েছেন। আর ধর্ষণের শিকার অধিকাংশই কলেজছাত্রী।
সুমনের বিরুদ্ধে নড়াইল, রাজশাহী, যশোর কোতয়ালী থানায় আরও চারটি প্রতারণা ও ধর্ষণ মামলা রয়েছে। তার বাড়ি নড়াইল সদরের বোড়ামারা গ্রামে।