দৈনিক সমাজের কন্ঠ

পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে অবশেষে লাশ মর্গে-চৌগাছায় ভাইপোর আঘাতে চাচা নিহত

পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে অবশেষে লাশ মর্গে-চৌগাছায় ভাইপোর আঘাতে চাচা নিহত
ঘটনা টাকার বিনিময়ে মিমাংশার অভিযোগ!

আব্দুল আলীম, চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি : যশোরের চৌগাছায় ভাইপো তপনের ধাক্কায় চাচা আজগর আলী (৫৫) নিহত হয়েছেন। একই সাথে চাচি চায়না বেগম (৪৫) মারাত্মক আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে উপজেলা পাশাপোল গ্রামে। এই ঘটনা নিছক ছোটখাট ঘটনা বলে স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মিমাংসা করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু যশোরের সহকারি পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এলাকাবাসি সূত্র জানিয়েছে, শনিবার রাত ৯টার দিকে পাশাপোল গ্রামের মোজাফ্ফর আলীর ছেলে তপনের সাথে তাঁর চাচির দ্বন্দ হয়। কথাকাটাকাটির একপর্যায় লাঠি দিয়ে ভাইপো তপন তার চাচি চায়না বেগমকে মারপিট করেন। লাঠির আঘাতে চাচির বাম হাত ভেঙ্গে যায়। এ ঘটনা বাঁধা দিতে আসলে চাচা আজগর আলীকেও সজোরে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেয় ভাইপো তপন। এই ধাক্কার ফলে তিনি মারাত্মক অসুস্থ্য হয়ে পড়েন এবং কিছুক্ষন পর মারা যান বলে নিহতের স্বজনরা জানান।
এই অবস্থায় ভাইপো তপনের নির্দেশে নিহতের লাশ বাড়িতে রেখে তড়িঘড়ি করে রাতেই আহত চায়না বেগমকে চৌগাছা ৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে হাতের ব্যান্ডেজ ও চিকিৎসা দিয়ে বাড়ীতে নেয়া হয়।
এদিকে ভাইপো তপনের আঘাতে চাচা আজগর আলী নিহত হবার ঘটনা নিছক ছোটখাট ঘটনা বলে মিমাংশা করার চেষ্টা করেন পাশাপোল ইউপি চেয়ারম্যান অবাইদুল ইসলাম সবুজ। এলাকাবাসি জানান, ইউপি চেয়ারম্যান রবিবার ভোর থেকে বিষয়টি টাকার বিনিময়ে মিমাংশার চেষ্টা করেন। দফায় দফায় বৈঠকে ১ লাখ টাকা চুড়ন্ত করা হয় এবং লাশ দাফনের পরিকল্পনা করা হয়। এমন ঘটনা ঘটার পরও পুলিশকে জানতে দেয়া হয়নি বলে নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান অবাইদুল ইসলাম সবুজ জানান, নিহত আজগর আলী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ্য ছিল। পারিবারিক দ্বন্দে তিনি হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। টাকার বিনিময়ে তাহলে কেনো মিমাংশা করা হচ্ছে এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন চাচি আহত হয়েছে বলে তার চিকিৎসা খরচের জন্য পারিবারিকভাবে বসে মিমাংসা করা হচ্ছে।
থানার অফিসার ইনচার্জ রিফাত খান রাজিব বলেন, ঘটনাটি জানার পর মরাদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ হতে এখনও কোন অভিযোগ করা হয়নি বলে তিনি জানান।
লাশ নিয়ে দফা রফার ঘটনাটি এলাবাসির মাধ্যমে যশোর সহকারি পুলিশ সুপুর ‘ক’ সার্কেল জানতে পারেন। তিনি বিষয়টি জানার সাথে সাথে দ্রæত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য স্থানীয় পুলিশকে নির্দেশ দেন। সর্বশেষ রবিবার দুপুর ২ টার দিকে যশোর পুলিশ সুপারের নির্দেশে দশপাখিয়া ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।