মোঃ মহিদুল ইসলাম ,চৌগাছা(যশোর) – যশোরের চৌগাছা উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের হাজরাখানা গ্রামের ঐতিহ্যবাহি পীর বলু দেওয়ানের মেলাটি আজ শুক্রবার ৪দিন অতিক্রম করেছে। শত শত বছর আগে চালু হওয়া এই মেলাটি প্রতি বছর ভাদ্র মাসের শেষ মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়, আর চলে ৭দিন ধরে অনেক সময় তার বেশি সময় ও চলে মেলাটি।
মেলাটি শত বছরের পুরাতন হবার কারণে এর সুনাম জেলা শহর বাদেও সারা দেশ ছাড়িয়ে গেছে । প্রতিদিন এক নজর মেলাটি দেখতে ভিড় জমাচ্ছে শত শত নারী, পুরুষ এমন কি বাচ্চারাও ।
এবার বলু দেওয়ানের মেলাটির সব থেকে বেশি নজর কেড়েছে একটি পালঙ্ক দেখে । বিক্রেতা যে পালঙ্কের দাম হেকেছেন সাড়ে ৫লক্ষ টাকা ।
সরেজমিন আজ শুক্রবার সন্ধা সাড়ে ৭টায় হাজরাখানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত কাঠের মেলায় গিয়ে দেখা যায়, একটি কাঠের জিনিসের দোকানে উপচে পড়া ভিড় । ভিড় ঠেলে দেখা যায়, দুইটি পালঙ্ক ঘিরে সাধারণ মানুষের উপচে পড়া ভিড় । পালঙ্কের গায়ে লেখা আছে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা দাম। এতো দামি একটি পালঙ্ক দেখেনি এর আগে অনেকে, তাই উপচে পড়া ভিড় । অনেকে আবার পালঙ্ক ঘিরে ছবি তুলছেন । তবে অনেকের দাবি প্রথমে পালঙ্কটি দেখতে ১০ টাকার টিকিট কেটে দেখানো হতো, তবে সবার জন্য পালঙ্কটি এখন ফ্রি দেখানো হচ্ছে।
সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা হাকানো পালঙ্কটির মালিক রাকিব শেখ (৩১) জানান, কুষ্টিয়া জেলার খোকসা থানার বিলকয়িরা গ্রামের বাদশা শেখের পুত্র তিনি । ১৯ বছর আগে তিনি কাঠের কাজ শেখার জন্য পাড়ি জমান পাশের দেশ ভারতে , সেখানে ২ বছর ধরে কাঠের কাজ শিখে ফিরে আসেন নিজ গ্রামে আর গড়ে তোলেন একটি কাঠের গোলা । তিনি দাবি করেন আমার পালঙ্ক জেলার সব থেকে দামি এবং সুন্দর ।
আজকের এই পালঙ্কটির দাম এতো বেশি কেন? জবাবে তিনি বলেন,পালঙ্গটি পুরাটায় সারি কাঠালের কাঠের ,গত এক বছর ধরে রোজ ৪-৫জন শ্রমিকের কঠোর পরিশ্রমের ফলে এটি বানানো শেষ করা হয় ।
এমন দামি একটি পালঙ্ক এর চাহিদা কেমন ? জবাবে তিনি বলেন, গতকাল যশোরের এক ক্রেতা এসেছিলো সাড়ে ৩ লক্ষ দাম বলে গেছে আমি বিক্রয় করেনি। কেমন দাম হলে এটি বিক্রয় করবেন? জবাবে তিনি বলেন ৫লক্ষ টাকা হলে আমি এটি বিক্রয় করবো না হলে বিক্রয় করবো না , তবে কপাল ভালো থাকলে আমি সঠিক দামে এই দুইটি পালঙ্ক আমি বিক্রয় করে ঘরে ফিরবো ।
তিনি আরো বলেন, এর আগে এমন আরো ৩টি পালঙ্ক তিনি বিক্রয় করেছেন একটি ২লক্ষ, একটি সাড়ে চার লক্ষ ও আরেকটি আট লক্ষ টাকায় তিনি বিক্রয় করেন ।
এই মেলায় আগামীতে কি ধরণের পালঙ্কে আপনি আনবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগামী বছর একটু ভিন্ন একটা পালঙ্ক করবো যার আকার হবে অনেক বড় একটা নৌকার মতো । নৌকার উপরে থাকবে পালঙ্কটি যা দেখে যে কেউই চমকে যাবে।