দৈনিক সমাজের কন্ঠ

যশোর ঝিকরগাছা উপজেলার ধান চাষীরা ‘মাজরা পোকা’র আক্রমণে অতিষ্ঠ

মোঃ শাহারুল ইসলাম রাজ, বিশেষ প্রতিনিধিঃ চলতি আমন মৌসুমে মাজড়া ও পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার ধান চাষীরা ।

কৃষকেরা বলছেন, আগে যে ধরণের কীটনাশক ব্যবহার করতাম এখন সে গুলো আর কাজে আসছে না।কিছু দিনের মধ্যেই ধানের কাইচ থোড় (ধানের ফুল আসার পূর্ব মূহূর্ত) বের হবে, এখন বিভিন্ন কোম্পানীর দামি কীটনাশক প্রয়োগ করেও কাজ না হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত ফলন নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হচ্ছে।

রবিবার সারাদিন উপজেলার মাগুরা, পানিসারা, গদখালী সহ অন্যান্য ইউনিয়নে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে মাজরা পোকার আক্রমণে ধানের কান্ড শুঁকিয়ে হলুদ, বাদামী বা কমলা রঙ ধারণ করছে এবং সে গুলো ধরে টান দিলে সহজেই উঠে আসছে। অন্যদিকে পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণে পাতায় সাদা দাগ হয়ে যাচ্ছে এবং পাতা গোলাকার বর্ন ধারণ করছে।

পানিসারা ইউনিয়নের বর্নি গ্রামের কৃষক রবিন বিশ্বাস জানান, এবছর এক বিঘা ধানে সিনজেনটা কোম্পানীর ভিরতাকো অনুমোদিত মাত্রায় দু’বার ব্যবহার করেছেন কিন্তু পোকা দমন করতে পারেননি।

মাগুরা ইউনিয়নের সন্তোষনগর গ্রামের কৃষক ওমর আলী জানান, হঠাত আবহাওয়া পরিবর্তন জনিত কারনে তার ধানের ক্ষেতে পোকার আক্রমণ অত্যধিক মাত্রায় বেড়ে যায়। দু’বার দামি কোম্পানীর কীটনাশক ব্যবহার করেও সম্পূর্ণরূপে মাজড়া দমনে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। এক্ষেত্রে কোন কৃষি কর্মকর্তার উপস্থিতি তারা দেখেননি বলেও অভিযোগ করেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার মাসুদ হোসেন পলাশ জানান, এসময় ধানের মাজড়া পোকা মেজর কোন বিষয় না। প্রতি বিঘা জমিতে ৩ লক্ষাধিক ধানের কুশি থাকে । সেখানে মাত্র ১০০টি কুশি নষ্ট হলে কৃষকের হয়তো বড়জোর ৩ কেজি ধান নষ্ট হতে পারে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ব্যতিরেকে বিভিন্ন কীটনাশক কোম্পানীর প্ররোচনায় পড়ে শুধু মাত্র মাজড়া দমনে কৃষক বিঘাপ্রতি ৮০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ করছে। এক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না পেলে কৃষকেরা দায় চাপাচ্ছেন কৃষি বিভাগের উপর বলে তিনি অভিযোগ করেন।

তিনি আরোও বলেন, ক্ষেতে লাঠি ও ডালপালা পুতে এ সমস্যার সমাধান করা যায় বিনা খরচে।

পাতা মোড়ানো পোকা, ব্লাস্ট এবং বাদামী গাছ ফড়িং (কারেন্ট পোকা) অত্যধিক ক্ষতিকর দাবি করে তিনি জানান, এক্ষেত্রে ক্ষেতের ১০০ ভাগ ফসল নষ্ট হতে পারে। নিয়মিত ধান ক্ষেত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এ সমস্ত পোকা ও রোগের আক্রমণ নিশ্চিত হলে অথব সন্দেহজনক মনে হলে উপজেলা কৃষি বিভাগ অথবা নিকটস্থ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে সঠিক পরামর্শ গ্রহণ করতে অনুরোধ জানান তিনি।

মোবাইল 01732390325