জুলফিকার আলী,কলারোয়া(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কলারোয়ার মেধাবী
ছাত্রী জেসমিন আক্তার পিংকীর হত্যাকারী আহসান কবির অঙ্কুর এর ফাঁসির
দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে। মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারী) সকালে
উপজেলার কাজিরহাট বাজারের যশোর-সাতক্ষীরা মহা সড়কের দুই পাশে ওই
মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মানববন্ধনে যশোর পলিটেকনিক কলেজ এর ৪র্থ
সেমিস্টারের মেধাবী ছাত্রী জেসমিন আক্তার পিংকী হত্যাকারীর ফাঁসির দাবী
জানিয়ে বক্তব্য দেন-কেরালকাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সম মোরশেদ আলী
(ভিপি মোরশেদ), সাতক্ষীরা জজ কোর্টের এপিপি এ্যাডভোকেট আশরাফুল আলম বাবু,
কাজিরহাট কলেজের প্রিন্সিপাল শহিদুল আলম, প্রভাষক সাইফুল ইসলাম সহ উপজেলা
ছাত্রলীগের সভাপতি শামিমুজ্জামান টিপু, কেরালকাতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের
সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক এসএম সিহাব হোসেন, কাজিরহাট
কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ইনামুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক তামজিন অননসহ
এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। বক্তরা বলেন-কলারোয়া উপজেলার কেরালকাতা
ইউনিয়নের কাউরিয়া গ্রামের মেয়ে জেসমিন আক্তার পিংকী। তাকে নির্মম ভাবে
হত্যা করে সেফটি ট্যাংকির মধ্যে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। যা হৃদয় বিদায়ক
ঘটনা। শুক্রবার (১০ফেব্রুয়ারী) দুপুরে লাশটি উদ্ধার করে র্যাব সদস্যরা।
এই ঘটনার সাথে জড়িত আহসান কবির অঙ্কুরকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আটক
করেছে। আমরা এই ঘটনার সাথে জড়িতদের ফাঁসি দাবী জানাচ্ছি। বক্তরা আরো
বলেন-জেসমিনের সহপাঠী ও কথিত প্রেমিক আহসান কবির অঙ্কুরকে আটক করেছে
র্যাব-৬ এর সদস্যরা। আহসান কবির অঙ্কুরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল
তার। সম্পর্কের অবনতির জেরে প্রেমিক অঙ্কুর কৌশলে ভিকটিমকে তার বাড়িতে
ডেকে নেয়। সে পিংকিকে গলা কেটে হত্যা করে লাশ ট্যাংকির ভেতর ফেলে দেয়।
জেসমিন আক্তার গত ২ ফেব্রæয়ারি নিখোঁজ হন। এ বিষয়ে তার বাবা যশোর জেলার
কোতয়ালী মডেল থানায় একটি জিডিও করেন। পরবর্তী সময়ে অজ্ঞাতনামা ফোন কলের
মাধ্যমে ভিকটিমকে ভারতে পাচার করা হবে বলে তার পরিবারকে জানানো হয়। এরপর
ভিকটিমের পরিবার বিষয়টি র্যাব-৬ এর যশোর ক্যাম্পকে অবহিত করেন। এরপর
র্যাব-৬ এর একটি দল নিখোঁজ ভিকটিমকে উদ্ধারে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার ১০ফেব্রুয়ারি তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের
মাধ্যমে ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হয়। এদিন
দুপুরে শার্শা থানাধীন দক্ষিণ বুরুজবাগান এলাকায় অভিযান চালিয়ে অঙ্কুরকে
আটক করে র্যাব সদস্যরা। পরে জিজ্ঞাসাবাদে জেসমিনকে হত্যার কথা স্বীকার
করে অঙ্কুর। কিছুদিন ধরে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। এ কারণে সে
জেসমিনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ২ফেব্রুয়ারি
দুপুরে জেসমিনকে নিজের বাসায় ডেকে নেয় অঙ্কুর। এরপর কৌশলে গলায় ওড়না
পেঁচিয়ে শ্বাসরোধসহ মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করে। পরে লাশ
গুম করার জন্য বস্তায় ভরে তার নিজের বাসার সেপটিক ট্যাংকের ভিতরে ফেলে
দেয়। স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, সেপটিক ট্যাংক থেকে জেসমিনের মরদেহ ও তার
ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও উদ্ধার করে র্যাব।