কলারোয়ায় সোনালী ব্যাংকে জোড়া খুনের ৪বছর পার হলেও ধরাছোয়ার বাইরে মুল পরিকল্পনাকারীরা

0
1

ফিরোজ জোয়ার্দ্দার-ঃ কলারোয়ায় সোনালী ব্যাংকে জোড়া খুনের চার বছর পার হলেও আসামীরা ধরাছোয়ার বাইরে। সাতক্ষীরার কলারোয়ায় আজও কাঁদায় কলারোয়া বাসীকে সোনালী ব্যাংকের দুই নৈশ প্রহরীর জোড়া খুনের ঘটনায় খুনের ঘটনা চার বছর পার হয়ে গেলেও ধরা ছোঁয়ার বাহিরে রয়েছে হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী ও আমলারা। চাঞ্চল্যকর এ খুনের ঘটনা চার বছর পেরিয়ে গেলেও হত্যার সমস্ত ক্লু উৎঘটন করতে সক্ষম হয়েছে সিআইডি পুলিশ। তবে হত্যার সাথে জড়িত থাকার অপরাধে এই পর্যন্ত ১০ জন আসামীকে বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন সিআইডি। তার পরেও আসামীরা একে একে সবার জামিনে বের হয়ে এসে ঘোরাফেরা করছেন এলাকাতেই। এদিকে নিহত দুই নৈশ প্রহরীর পিতাসহ পরিবারের সদস্যদের দাবী তাদের ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে। আদও কি হত্যার বিচার হবে নাকি হত্যাকারীরা মামলা থেকে রেহাই পেয়ে যাবেন এমন প্রশ্ন তাদের মনে। রমজান মাস আসলে ছেলেদের ছবি নিয়ে শুরু করেন কান্নাকাটি। চোখের জলে বুক ভেষে যায় নিহতেদের স্ত্রীরা। ঘটনার বিবরণ জানা যায়, বিগত ১৫/৭/২০১৫ সালের এই দিনে (২৭শে রমজান)পবিত্র শবেবরাতের রাতে কলারোয়া বাজারের বাস স্ট্যান্ড মেন রাস্তার ধারে থানা থেকে মাত্র ২০০ গজ দুরে অবস্থিত সোনালী ব্যাংকে ঢুকে ব্যাংকের ভোল্ট ভাংচুর করার চেষ্টাকালে একদল ডাকাত ডাকাতি করতে ব্যার্থ হওয়ার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় ওই ব্যাংকের দুই নৈশ প্রহরীকে গলা কেঁটে হত্যা করে পালিয়ে যায়। নিহত দুই নৈশ প্রহরীরা হলেন উপজেলার ঝাঁপাঘাট গ্রামের আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন (৩০) ও সদর উপজেলার হরিসপুর গ্রামের আনারুল ইসলামের ছেলে আসাদুজ্জামান রিপন (৩২)। সে দিনের এ হত্যা ঘটনায় তৎকালীন ব্যাংক ম্যানেজার মনতোস সরকার বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় অজ্ঞত ব্যক্তিদের নামে একটি হত্যা মামলা নং (১৮) ১৫/৭/২০১৫ দায়ের করেন। মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে কলারোয়া থানা পুলিশ ঝটিকা অভিযান চালিয়ে পৌর সদরের ঝিকরা ৪ নং (ওয়ার্ড) গ্রামের মৃত জোহর আলী সরদারের ছেলে মনিরুল ইসলাম মনি (৩৮), একই ওয়ার্ডের মৃত হোসেন আলী গাজীর ছেলে আবুল কাশেম (৩৫), ৩নং গদখালী গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে জাহাঙ্গীর কবীর (৩৬) ও ৯নং মির্জাপুর গ্রামের মৃত বজলুর রহমানের ছেলে গোলাম হোসেন (৩৭) কে আটক করেন। তবে হত্যা ঘটনার তেমন কোন ক্ল উৎঘটন করতে না পারায় তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ। তার কিছু দিন পার হয়ে গেলে মামলার কোন অগ্রগতি না দেখে মামলাটি জেলা সিআইডিতে হস্তান্তর করে কলারোয়া থানা পুলিশ। জেলা সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক শেখ মেজবাহ উদ্দিন মামলার তদন্তভার গ্রহন করার পর থেকে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে হত্যার সাথে সংযুক্ত থাকার অপরাধে উপজেলার কোটাবাড়ি গ্রামের ফজর আলী সরদারের ছেলে আনছার সরদার (৫০), পাঁচনল গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে কালা কুদ্দুস (৪৭), লাঙ্গলঝাড়া গ্রামের আবু বক্কর মল্লিকের ছেলে আজিবার রহমান (৪৭), সিংহলাল গ্রামের আশরাফুজ্জামানের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩৮), ইলিশপুর গ্রামের আখের আলী সরদারের ছেলে আব্দুল খালেক (৩৬) ও সদর উপজেলার গোবিন্দকাটি গ্রামের কিতাবুদ্দিন গাজীর ছেলে ইসমাইল গাজী (৪০) কে আটক করে। কিন্তুু সিআইডি আটকদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করে। বর্তমানে হত্যা মামলার আটক আসামীরা জামিনে বহু তবিয়তে এলাকায় ঘোরাফেরা করছেন। জেলা সিআইডি পুলিশ পরিদর্শন হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেখ মেজবাউদ্দিন জানান, চাঞ্চল্যকর ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টাকালে দুই নৈশ প্রহরী হত্যা মামলাটি বিচারিক কার্যক্রম চলছে এবং শেষ প্রান্তে। সম্পুর্ণ আলামতগুলো ব্যাংক কর্তৃপক্ষ পুড়িয়ে নষ্ট করে ফেলায় সেগুলো সংগ্রহ করতে দেরি হওয়ার মামলাটি তদন্ত কাজ থেমে যায়। আসামীদের ধরতে সে সময় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আলামত পুড়িয়ে দেয়ায় সেটির কিছু অংশ তদন্তপূর্বক তা সংগ্রহ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন মামলাটি তদন্ত করে মুল পরিকল্পনাকারীদের শনাক্ত করা বা হত্যা মদদদাতা ও রাঘব বোয়াল যারায় জড়িত থাকুন না কেন আসামীদের ছাড় দেয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার অভিযান চলবেই চলবে। কারা পরিকল্পনাকারী বা মদদদাতা এমন প্রশ্ন করা হলে তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম বলা যাবে না বলে জানান। তবে আগামী পবিত্র ঈদ-উল- ফিতরের পর ডিআইজি মহাদয়ের কাছে মামলার সকল তথ্য (চার্জসিট) প্রেরণ করা হয়ে জড়িত মুল হোতাসহ আমসীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা শেখ মেজবাহ উদ্দিন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here