কলারোয়ার সোনাবাড়ীয়ায় চাচাদের ধারালে রামদার কোপে ভাইপো নিহত

0
6
চাচাদের হামলায় নিহত আলফাজ হোসেন।

ফিরোজ জোয়ার্দ্দার-ঃ সাতক্ষীরার কলারোয়ার সদ্য সমাপ্ত উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতিকে ভোট করার অপরাধে ও জমি নিয়ে পূর্বে বিরোধের জের ধরে দুই ইউপি সদস্যের মদদে আলফাজ হোসেন (৩০) নামের এক ট্রলি চালককে ধারালো রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার চাচা আব্দুর রহিম, সলেমান গাজী, চাচাতো ভাই ইসমাইল হোসেন, আব্দুল গণি এবং ভাতিজা নাজমুলসহ অজ্ঞাত ঘাতকদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (৩০ই জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার দক্ষিণ সোনবাড়ীয়া গ্রামে এ নৃসংশ ঘটনা ঘটে। নিহত আলফাজ হোসেন ওই গ্রামের শাহাদ আলীর ছেলে। নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই জমি নিয়ে আলফাজের সাথে অভিযুক্ত চাচাদের বিরোধ চলে আসছিলো। সম্পতি উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতিকে ভোট করার অপরাধে সেই বিরোধ আরো বেশী জোরালো হয়। তাছাড়া সদ্য সমাপ্ত উপজেলা নির্বাচনের দুই দিন পর অভিযুক্ত চাচারা আলফাজকে হত্যার উদ্দেশ্য রামদা ও গাছ কাটা দা দিয়ে মাথায় ও হাত-পাসহ সারা শরীর কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন। সেই হামলায় গুরুত্বর জখম হয়ে কিছুদিন হাসপাতালের চিকিৎসা নিতে থাকেন আলফাজ। ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ জড়িত আসামীদের গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। দীর্ঘদিন আসামীরা জেল খেটে জামিনে বের হয়ে এসে ভাইপো আলফাজকে মামলা তুলে নেয়াসহ জমি বিরোধ মেটাতে জীবন নাশের হুমকি দিতে থাকেন। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে আলফাজকে বাড়ীতে একা পেয়ে দুই চাচা সলেমান ও রহিম গাজীর সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সলেমানসহ নামধারী অভিযুক্তরা সংঘবদ্ধভাবে ধারালো রামদা ও গাছ কাটা দা দিয়ে এলোপাতাড়ী কুপিয়ে বাম হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয়। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে রেফার করা হলে পথিমধ্যে তার মুত্যু হয় বলে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহবুবর রহমান নিশ্চিত করে তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মুনীর উল গীয়াস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে হত্যা করা হয়েছে ট্রলি চালক আলফাজকে। এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অপরাধে জিজ্ঞাসাবাদে পাঁচ নারীকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের আটকের অভিযান অব্যাহত রেখেছেন পুলিশ। এদিকে নিহত আলফাজের চাচা ইনছান আলী জানান, সম্পতি উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে ভোট করায় সন্ত্রাসী চাচারা আরোও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। জমি নিয়ে বিরোধের জের চাচাদের সাথে দীর্ঘদিনের। স্থানীয় দুই ইউপি সদস্যের মদদে অভিযুক্তরা এ হত্যা ঘটিয়েছে বলে তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান। হত্যার বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান এসএম মনিরুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আলফাজ বহুদিন ধরে ট্রলি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সম্পতি উপজেলা নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট করায় তার চাচারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। নির্বাচনের পর থেকে নিহত আলফাজকে হত্যার উদ্দেশ্য দফায় দফায় হামলা চালিয়ে জখম করেন তার চাচারা। তারই জের ধরে এ হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে তিনি জানান। তাছাড়া প্রকৃত ঘটনা উৎঘটন করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে আহবান করেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিলো বলে থানা সূত্রে জানা যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here