দৈনিক সমাজের কন্ঠ

ছোট ভাইকে খুন করার পর অনুশোচনায় বড় ভাইয়ের আত্মহত্যা

তরিকুল ইসলাম, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: ভাইকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়া বড় ভাই শাহজাহান মল্লিকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।

ধারণা করা হচ্ছে, সোমবার রাতে তিনি গলায় ওড়না জড়িয়ে আত্মহত্যা করেন। আজ মঙ্গলবার সকালে স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।নির্মাণশ্রমিক সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানাধীন জগদানন্দকাটি গ্রামের আব্দুল মজিদ মল্লিক জানান, তার বড় ছেলে শাহজাহান মল্লিক গত রবিবার রাতে বাড়ির গেটে ছোট ভাই মন্তেজ মল্লিককে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সোমবার মন্তেজের স্ত্রী পিয়া বেগম বাদী হয়েশাহজাহানসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে পাটকেলঘাটা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।শাহজাহানকে ধরার জন্য পুলিশ তার শ্বশুরবাড়ি নগরঘাটার শুকুর আলী বিশ্বাসের বাড়িতে অভিযান চালায়। শাহজাহানের প্রথম স্ত্রী হীরা বেগম, তার একমাত্র ছেলে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী সুমন মল্লিককে নিয়ে থাকেন। তাদের খরচ শাহজাহান বহন করেন না। দ্বিতীয় স্ত্রী নাহার বেগমের ঘরে রিপন নামের একটি ছেলে রয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে খুনির পিতা আব্দুল মজিদ মল্লিক মোবাইল ফোনে খবর পান যে তার ছেলে শাহজাহান কলারোয়ার জয়নগর ইউনিয়নের খোরদোবাটরা গ্রামের পরেশ রায় চৌধুরীর আমবাগানে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।কলারোয়া উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের খোরদোবাটরা গ্রামের সুদেব গুপ্তর স্ত্রী সুচিত্রা শীল জানান, মঙ্গলবার ভোরে পরেশ রায় চৌধুরীর আমবাগানে গিয়ে এক ব্যক্তিকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলে থাকতে দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে জ্ঞান ফিরলে বিষয়টি ইউপি সদস্য বজলুর রহমানকে অবহিত করেন। জয়নগর ইউপি সদস্য বজলুর রহমান বলেন, তার কাছে খবর পেয়ে সকাল ১০টার দিকে কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর খায়রুল কবির ও সরসকাটি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. তৌফিক টিপু ঘটনাস্থলে এসে মৃতের লাশ উদ্ধার করেন। ।সরসকাটি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. তৌফিক টিপু জানান, পরেশ রায় চৌধুরীর আমবাগানে গলায় ওড়না জড়িয়ে আত্মহননকারীর নাম শাহজাহান মল্লিক। তার পরনে নীল রঙের জিন্সের প্যান্ট ছিল। গায়ে ছিল ফুলহাতা জামা। তার পকেটে থাকা মানিব্যাগ থেকে পাওয়া জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে তাকে শনাক্ত করা হয়। তিনি তার ছোট ভাই মন্তেজ মল্লিক হত্যা মামলার আসামি। তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টা চলছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।এ বিষয়ে কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর খায়রুল কবির সাংবাদিকদের জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।