দৈনিক সমাজের কন্ঠ

কোরবানির পশুর যেসব বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে ,কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত

সমাজের কণ্ঠ  ডেস্ক  – ১০ আগস্ট, ২০১৯ :

ইসলামে কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। সাধারণত উট, গরু, মহিষ, দুম্বা, ভেড়া ও ছাগল দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ। অন্যান্য পশু দ্বারা কোরবানি নাজায়েজ। ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে এক বছর পূর্ণ হতে হবে, গরু-মহিষ দুই বছর পূর্ণ হতে হবে, উট পাঁচ বছর পূর্ণ হতে হবে। (হিদায়া, খ–৪, পৃ. ১০৩)। পশুর যেসব ত্রুটি থাকলে কোরবানি দেওয়া যাবে না- কোরবানির পশু হতে হবে দোষত্রুটিমুক্ত। পশুর মধ্যে যেসব ত্রুটি থাকলে কোরবানি দেওয়া যাবে না, সেগুলো হচ্ছে : ১. দৃষ্টিশক্তি না থাকা, ২. শ্রবণশক্তি না থাকা, ৩. অত্যন্ত দুর্বল ও জীর্ণ-শীর্ণ হওয়া, ৪. এই পরিমাণ লেংড়া যে জবাই করার স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে অক্ষম, ৫. লেজের বেশির ভাগ অংশ কাটা, ৬. জন্মগতভাবে কান না থাকা, ৭. কানের বেশির ভাগ কাটা, ৮. গোড়াসহ শিং উপড়ে যাওয়া, ৯. পাগল হওয়ার কারণে ঘাস-পানি ঠিকমতো না খাওয়া, ১০. বেশির ভাগ দাঁত না থাকা, ১১. রোগের কারণে স্তনের দুধ শুকিয়ে যাওয়া, ১২. ছাগলের দুটি দুধের যেকোনো একটি কাটা, ১৩. গরু বা মহিষের চারটি দুধের যেকোনো দুটি কাটা। মোট কথা, কোরবানির পশু বড় ধরনের দোষত্রুটি থেকে মুক্ত হবে। যেমন হাদিসে এসেছে, ‘চার ধরনের পশু, যা দিয়ে কোরবানি জায়েজ হবে না। অন্ধÑযার অন্ধত্ব স্পষ্ট, রোগাক্রান্তÑযার রোগ স্পষ্ট, পঙ্গুÑযার পঙ্গুত্ব স্পষ্ট ও আহতÑযার কোনো অঙ্গ ভেঙে গেছে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১৪৪)। যেসব ত্রুটি থাকলেও কোরবানি দেওয়া যাবে- সেগুলো হচ্ছে : ১. পশু পাগল, তবে ঘাস-পানি ঠিকমতো খায়; ২. লেজ বা কানের কিছু অংশ কাটা, তবে বেশির ভাগ অংশ আছে; ৩. জন্মগতভাবে শিং নেই, ৪. শিং আছে, তবে ভাঙা; ৫. কান আছে, তবে ছোট; ৬. পশুর একটি পা ভাঙা, তবে তিন পা দিয়ে সে চলতে পারে; ৭. পশুর গায়ে চর্মরোগ, ৮. কিছু দাঁত নেই, তবে বেশির ভাগ আছে। স্বভাবগত এক অ-কোষবিশিষ্ট পশু; ৯. পশু বয়োবৃদ্ধ হওয়ার কারণে বাচ্চা জন্মদানে অক্ষম, ১০. পুরুষাঙ্গ কেটে যাওয়ার কারণে সঙ্গমে অক্ষম। তবে উত্তম হচ্ছে ত্রুটিমুক্ত পশু দিয়ে কোরবানি দেওয়া, ত্রুটিযুক্ত পশু দ্বারা কোরবানি দেওয়া অনুচিত। কোন পশুর বয়স কত হতে হয়? উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদি পশু দ্বারা কোরবানি দিতে হয়। উট কমপক্ষে পাঁচ বছরের হতে হবে। গরু-মহিষ কমপক্ষে দুই বছরের হতে হবে। ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে এক বছরের হতে হবে। অবশ্য ছয় মাসের ভেড়া যদি দেখতে মোটাতাজা হয় এবং এক বছর বয়সের মতো মনে হয়, তাহলে তা দিয়েই কোরবানি বৈধ। ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদির ক্ষেত্রে একটি পশু শুধু এক ব্যক্তিই কোরবানি দিতে পারবে। গরু, মহিষ, উট সর্বোচ্চ সাত ব্যক্তি মিলে কোরবানি দিতে পারবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘একটি উট ও গরু-মহিষে সাত ব্যক্তি কোরবানির জন্য শরিক হতে পারে।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৩১৮)।