দৈনিক সমাজের কন্ঠ

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভেলাকোতে পাসেতুতে উঠতে হয় সাঁকো দিয়ে

সেতুতে উঠতে হয় সাঁকো দিয়ে
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভেলাকোপা এলাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ৫ গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষের উপজেলা সদরে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হানাগড় সেতু। ২০১৭ সালের বন্যায় সেতুর এক প্রান্তের সংযোগ সড়ক ভেসে যায়। এরপর স্থানীয়রা পৌরসভার সহযোগিতায় সংযোগ সড়কের স্থানে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে। সেই সাঁকো পার হয়ে সেতুতে উঠতে হয়।

এই সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হচ্ছে হাজারো মানুষ।
৮ জুন সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর এক প্রান্তের সংযোগ সড়ক ভাঙা। সেতুতে ওঠার জন্য এলাকাবাসী বাঁশের সাঁকো বানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, দুই বছরেও এই সমস্যার স্থায়ী কোনো সমাধান হয়নি। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস পেলেও কোনো কাজ হয়নি। স্কুল, কলেজ, হাট-বাজার এমনকি হাসপাতালে যাতায়াত থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব কাজ করতে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই সাঁকো পার হয়। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
এলাকাবাসীরা বলেন, ‘দুঃখের কথা আর কী কমো, ২০১৭ সালে বন্যার পর ব্রিজের এ জায়গা ভাঙ্গি যায়। তার পর থাকি হামরা এলাকার মানুষ এদি যাওয়া-আসা করি।

একই এলাকার মো. শারাবাত হোসেন বলেন, ‘কপাল খারাপ বাহে, যাকে ভোট দেই তাই আর কোনো কাম করে না। আগের মেয়র ২০১৫ সালে ব্রিজ করি দেয়, আর ব্রিজ ভাঙার পর এই মেয়র বাঁশের সাঁকো বানে দিছে। ’ তিনি আরও বলেন, ‘হামরাই এলাকাবাসী বাঁশ দিয়ে, পৌরসভা থেকে কিছু টাকা খরচ নিয়ে সাঁকো বানাই। তা-ও বেশি দিন এটা টিকে না। দুই-তিন মাসের মধ্যে আবার ভাঙ্গি যায়। ’
ব্যবসায়ী মো. ফজলু বলেন, ‘কেউ অসুস্থ হলে নিয়ে যাওয়া অনেক কষ্টকর। প্রথমে অটোতে করে রোগীকে সাঁকোতে আনতে হয়। পরে রিকশা করে সাঁকো পার করে গাড়িতে তুলতে হয়। আমরাও তো কর দিই, কিন্তু আমাদের কেন উন্নয়ন হয় না। ’ ভাঙা সাঁকো দিয়েই মোটরসাইকেল নিয়ে পার হচ্ছিলেন ইউনুছ আলী। তিনি বলেন, ‘কুড়িগ্রাম থেকে এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত সহজ। তাই ঝুঁকি নিয়ে হলেও এদিক দিয়ে যাই। ’
জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র মো. আবদুল জলিল বলেন, ‘বন্যায় সংযোগ সড়ক ভাঙার পরপর আমি ওই স্থানে গিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিই। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নিজ খরচে সাঁকোটি বানিয়ে দিই। এ ছাড়া ৩ মাস পরপর সাঁকোটি মেরামতের জন্য পৌরসভা থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। ’
স্থায়ী সমাধানের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘সংযোগ সড়কটি পৌরসভার। ইতিমধ্যে আমরা ওই সংযোগ সড়কসহ আরও তিনটি স্থানে কালভার্ট নির্মাণের জন্য এডিপি থেকে টেন্ডার পাস করিয়েছি। এখন শুধু কার্যাদেশ হলে যত দ্রুত সম্ভব এই সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করে পৌরবাসীর ভোগান্তি লাঘব করতে পারব।