কুড়িগ্রামে চার বাঁশের সাঁকোর  আজমাতা গ্রাম

0
3
Exif_JPEG_420

আজিজুল হক নাজমুল –
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
আধুনিক সভ্যতার যুগেও বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত নাগেশ্বরী উপজেলার আজমাতা গ্রামের মানুষ। গ্রামের চারিদিকে ফুলকুমর ও মরা দুধকুমর নদী বেষ্টিত। অবহেলিত এ গ্রামের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় বর্ষা মৌসুমে তাদের দুঃখ-কষ্টের সীমা থাকে না। ভালো রাস্তাঘাট না থাকায় জরুরী ভিত্তিতে জেলা বা উপজেলা সদরে যোগাযোগ করতে পারে না। নাগেশ্বরী উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেষা আজমাতা গ্রাম। কৃষির ওপর নির্ভরশীল এ গ্রামের মানুষ। কৃষি পণ্য উৎপাদন করে সেখানে ভালো কোনো হাটবাজার না থাকায় ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে পারে না তারা। রাস্তাঘাটের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পরতে হয় তাদের। শিক্ষা-দারিদ্র্য আধুনিক সভ্যতার সবদিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে এ গ্রামের মানুষ। প্রতি বর্ষা মৌসুমে বাঁশের নড়বড়ে সাঁকো কিংবা কলা গাছের ভেলায় চরে তাদের এ গ্রাম থেকে ওই গ্রামে যেতে হয়। বাঁশের তৈরি সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোমলমতি ছেলেমেয়েরা স্কুলে পড়তে যায়। ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। আজমাতা গ্রামে ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও ওই বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। আবার অনেক অভিভাবকের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ না থাকায় ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানো সম্ভব হয় না। গ্রামটিতে চারটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে হয় ওই গ্রামের মানুষের। ফলে গ্রামটিতে শিক্ষার হার খুবই কম। বোটেরহাট নামক স্থানে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থাকলেও প্রায় দের যুগ ধরে শিক্ষকদের বিল-বেতন না হওয়ায় শিক্ষকরা পাঠদান ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন পেশায় চলে গেছে। বিদ্যুৎ নেই, গ্রামের অধিকাংশ মানুষ শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। এ অবহেলিত জনপদে প্রায় ৭ হাজার লোকের বসবাস। গ্রামের এ পাড়া থেকে ও পাড়া যেতে চারটি বাঁশের সাঁকো পার হতে হয়। আজমাতা গ্রামের ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য জালাল উদ্দিন জানান- আমার ওয়ার্ডটি সবচেয়ে অবহেলিত। আমি পরপর ৩বার এ ওয়ার্ড থেকে ইউপি সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি। এখানকার প্রায় ৬৮ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। সরকারি রিলিপ সিলিপ অন্যান্য মেম্বাররা যা ভাগ পায়, আমিও তা পাই। কিন্তু দারিদ্র্যের সংখ্যা বেশি হওয়ায় বিতরণ করতে গিয়ে সমস্যায় পরতে হয়। তাছাড়া এ অবহেলিত জনপদ থেকে নাগেশ্বরী উপজেলা সদর যেতে প্রতিনিয়ত পার্শ্ববর্তী ভৃরুঙ্গামারী উপজেলা সীমান্তের ওপর দিয়ে যেতে হয়। ইউনিয়ন পরিষদও অনেক দূরে। ডিজিটাল বাংলাদেশে অনেক নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত এখানকার মানুষ। রামখানা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম বলেন, আজমাতা গ্রামের সমস্যার কথা সংসদ সদস্যকে অবহিত করা হয়েছে। এব্যাপারে কুড়িগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য আছলাম হোসেন সওদাগরের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এলাকার সমস্যাগুলো সংসদে উত্থাপন করে পর্যাক্রমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here