ধরলার ভাঙ্গনে ভিটেমাটি হারা এরশাদুল চান মাথা গোঁজার ঠাই

0
1
আজিজুল হক নাজমুল –
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁসা ধরলা বেষ্ঠিত উত্তরের জনপদ ফুলবাড়ী। ভারত থেকে নেমে আসা ধরলা ফুলবাড়ীর তিনটি ইউনিয়ন ঘেঁসে বয়ে গেছে আপন খেয়ালে।ধরলার প্রভাব রয়েছে নদী তীরবর্তী জনজীবনে।বয়ে চলার খেয়ালিপনায় কখনো আশির্বাদ আবার কখনো অভিশাপে রুপ নেয় ধরলা।২০১৭ সালের আগস্টের ভয়াবহ বন্যায় দেখা দিছে ধরলার আগ্রাসী রুপ। বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয় সেবারের বন্যায়। আর বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর শুরু হয় ভাঙ্গন।ধরলার অব্যাহত ভাঙ্গনে বদলে গেছে নদীতীরবর্তী জনজীবনের দৃশ্যপট।নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বসত বাড়ী, ফসলি জমি,রাস্তা-ঘাট ।বাপ-দাদার ভিটে মাটি হারিয়েছে অনেক পরিবার।ধরলার ভাঙ্গনের শিকার হয়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছে বাঁধে কিংবা রাস্তায়। নিজের শেষ সম্বল পৈতৃক ভিটে মাটি নদীতে বিলীন হওয়ায় রাস্তায় আশ্রয় নিয়ে বৃদ্ধ বিধবা মা, ২ শিশু সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এরশাদুল হক(২৯)।সে উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের চড়বড়লই গ্রামের ৭নং ওয়াডের বাসিন্দা মৃত ছকিয়তুল্ল্যার ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চড়বড়লই বাংলাবাজার সংলগ্ন রাস্তায় একটি ছোট্টঘরে এরশাদুলের বসবাস। ছোট ঘরটির এক পাশে গরুবাঁধা পাশেই রান্নার চুলো, হাড়িপাতিল এবং শোবার জন্য চৌকি পাতানো।রাস্তাটি সরু হওয়ায় এবং অর্থাভাবে আর ঘর তুলতে না পারায় এক ঘরে গবাদিপশু ও ছোট্ট শিশুদের নিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জীবন যাপন করছে সে।এরশাদুল বলেন, সর্বনাশা ধরলা আমাকে নিঃস্ব করে দিয়েছে।আমি পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি সামান্য রোজগারে পরিবারের চাহিদা মেটাতেই হিমসিম খেতে হয়।প্রতিদিনের খরচের পরে সঞ্চয় বলতে কিছুই থাকে না।জমি কিনবো কি ভাবে। সহায় সম্বল না থাকায়  পাচ্ছি না কোন ঋণ সহায়তা।
এলাকাবাসীরা জানান, কয়েক মাস আগে বন্যার পরপরেই  তীব্র ভাঙ্গনে ধরলা কেড়ে নেয় এরশাদুলের বাপদাদার বাড়ীভিটা তার  আর কোন জমিজমা নাই।তারপর থেকে সে নিরুপায় হয়ে তার বিধবা মা ২ শিশু সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে এই রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে। সরু রাস্তায় ঘর তোলায় আমাদের চলাচলেও অসুবিধা হয়। তারা আরও বলেন, নিরীহ ও গরীব মানুষ হঠাৎ করে জমি কেনার মত টাকা সে কোথায় পাবে? এসময় তারা সরকারি ভাবে এরশাদুলের পুনর্বাসনের দাবি জানান।
এরশাদুলের মা ফাতেমা বেগম (৬৫) বলেন, আমি বিধবা ও বয়স্ক মানু্ষ আমি যদি বিধবা ভাতা বা বয়স্কভাতা পেতাম তাহলে ছেলেটার উপকারে আসতো।
৭নং ওয়াডের ইউ পি সদস্য জনাব খৈমুদ্দিন চৌধুরী জানান, এরশাদুলের দুর্দশার কথা আমি জানি বরাদ্দ আসলেই তার পুনর্বাসন ও তার মায়ের ভাতার ব্যবস্হা করা হবে।
বড়ভিটা ইউপি চেয়ারম্যান জনাব খয়বর আলী মিয়া জানান, ধরলার ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্হদের পুনর্বাসিত করার লক্ষ্যে আমরা ৫৫ টি পরিবারের একটি তালিকা করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কাছে দিয়েছি।আশা করি অল্প সময়ের মধ্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এই ৫৫ টি পরিবারের পুনর্বাসনে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here