সাব্বির হাসান আকাশ, বাগেরহাট প্রতিনিধি।
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই রাজধানী ঢাকার উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে চালু হতে যাচ্ছে মেট্রোরেল। এরই ধারাবাহিকতায় জাপান থেকে আজ ৩১ মার্চ বুধবার মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছাবে রেল কারের (এক সেট) প্রথম চালান। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, জাহাজে বন্দরে ভেড়ার ১২ দিনের মধ্য সকল কাজ সম্পন করা কারগুলো মেট্রোরেল উত্তরা ডিপাতে পৌঁছে যাবে।
কারবাহী জাহাজ কাম্পানি এনসিয়ট ষ্টিমশীপ কোম্পানি লিমিটেডের স্থানীয় প্রতিনিধি মোঃ ওহিদুজ্জামান জানান, থাই পতাকাবাহী এমভি এসপিএম ব্যাংকক নামের এ জাহাজটি গত ৪ মার্চ রেলওয়ের কার নিয়ে জাপানের কাবা বন্দর থেকে মোংলা বন্দরের উদ্দ্যশ্যে ছেড়ে আসে। প্রথম দফায় এ জাহাজটিতে আসছে মেট্রোরেল রেলওয়ের ৬টি কার (এক সেট)। আগামী ২০২২ সালের মধ্য মেট্রোরেলের বাকি ১৩৮টি রেলওয়ে কারও পৌঁছাবে এবন্দরে। রেলওয়ের এ কার পরিবহন নিযুক্ত হয়েছে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক এভারট এশিয়া প্রাইভেট লিঃ নামক একটি প্রতিষ্ঠান । তিনি বলেন, জাহাজ থেকে দ্রুত রেলওয়ে কার খালাস কাজের জন্য ইতিমধ্য শ্রমিক নিয়োগকারী স্টিভডার্স প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স খুলনা ট্রেডার্স’কে নিযুক্ত করা হয়েছে। মেট্রোরেল প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ জাকারিয়া জানান, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে মেট্রোরেল চালু করা সম্ভব হবে। প্রথমে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল। পরবর্তীতে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ চালু করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। রেল কার তৈরির জন্য ২০১৭ সালের আগষ্ট কাওয়াসাকী-মিতসুবিশি কনসার্টিয়ামর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিট্রড। চুক্তি অনুয়ায়ী ২০১৯ সালের ১৬ ফব্রুয়ারী থেকে জাপানের কাওয়াসাকী হ্যাভি ইন্ডাষ্ট্রিজ কোম্পানি লিমিটেড রেলওয়ের কার নির্মান কাজ শুরু করে। মেসার্স খুলনা ট্রেডার্সে’র স্বত্বাধিকারী সৈয়দ জাহিদ হাসন জানান, কারবাহী জাহাজটি মোংলা বন্দরের জেটিতে ভেড়ার পরে খালাস প্রক্রিয়া শুরু হবে। এরইমধ্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দুই শিফটে প্রায় ১৬ ঘন্টায় পুরা খালাস প্রক্রিয়া সম্পন করা সম্ভব হবে। অপর দিকে দ্রুত কাস্টমস ক্লিয়ারিং ও ফরোয়াডিং জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে নিযুক্ত সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স এলিট ট্রেডিং। সিএন্ডএফ এজেন্টের খুলনা শাখার ব্যাবস্থাপক কাজী বদারুল আলম জানান, রেলওয়ের কার নিয়ে বিদেশী জাহাজ মোংলা বন্দর ভেড়ার পরে কারণগুলো নির্ধারিত বার্জে নামানো হবে। আর খালাস প্রক্রিয়া নির্বিঘ্নে করতে জাপান ও মালয়েশিয়া সহ দেশীয় টকনিশিয়ানদের একটি দল তদারকি করবেন। এ ছাড়া জাপানের কাওয়াসাকী হ্যাভি ইন্ডাষ্ট্রিজ কোম্পানি লিমিটেড এর প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন বন্দর জেটিতে। খালাস প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে কাস্টমস শুল্ক সংক্রান্ত ক্লিয়ারিং ও ফরোয়াডিং সহ আউট পাস সহ যাবতীয় কার্যক্রম প্রায় এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগতে পারে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যাডমিরাল মোহাম্মাদ মুসা জানান মোংলা বন্দরের মাধ্যমে মেট্রোরেলের প্রথম চালান আসা ও খালাস হওয়ার বিষয়টি মাইলফলক হয়ে থাকবে। মেট্রোরেলের কার খালাস প্রক্রিয়া নির্বিঘ্নে করতে বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রয়েছে। তিনি আরও জানান, এ বন্দরের উন্নয়ন অগ্রগতি ও সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সহ উন্নয়নমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের ভারি যন্ত্রপাতি এখানেই খালাস হচ্ছে। এ ধরণের পণ্যের ক্ষেত্রে বন্দর কর্তৃপক্ষ অগ্রাধিকার ভিত্তিত কাজ করে বলেও জানান তিনি।