উজ্জ্বল রায় – (১৯, নভেম্বর) ২৭৪: নড়াইলের হাট-বাজারে চাহিদা থাকলেও দাম নাগালের বাইরে দেশীয় প্রজাতির মাছ-জেলার নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর-ডোবা এবং জলাশয়ে আগে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছে ভরপুর ছিল। দেশী মাছের অভাব দিনদিন তীব্রতর হচ্ছে। পুষ্টিগুনেসমৃদ্ধ দেশীয় চোট মাছ। আমরা মাছে ভাতে বাঙালী। মাছ ও ভাত বাঙালীদের প্রিয় খাবার। মাছের প্রতি টান বাঙালীদের চিরকালের। আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় জানান, একসময় নড়াইলের হাট-বাজারে দেশীয় মাছের সরবরাহ ছিল পর্যাপ্ত। হাট-বাজার থেকে নিয়মিত দেশী মাছ কিনতেন। চাহিদা থাকলেও নাগালের বাইরে দেশীয় প্রজাতির মাছ দেশীয় প্রজাপতির মাছ মাছের দিক দিয়ে নড়াইল জেলা ত্রক সময় খুব সমৃদ্ধ ছিল। মাছে ভাতে বাংঙ্গালী তাই নদী মাতৃক চিরাচরিত প্রবাদ। খাল, বিল, হাওর, বাওর, ডোবা, নালার পাওয়া য়ায় নানা রং ও স্বাদের মাছ। আকার আকৃতিতেও এরা যেমন বিচিত্র নামগুলো তেমনি নান্দনিক কই, চিতল, বৌরানী, শৈল, শাল, বাইলা, খলিশা, তপসে, কাকিলা, শিং, মাগুর পাবদা আরও কত কি! আকতার মোলা বলেন, দেশীয় প্রজাতির মাছ খুবই কম চাহিদা বেশি এবং দামও বেশি, দেশী পুটিঁর কেজি ২৫০-৩০০ টাকা, দেশি শিং মাছের কেজি ৬০০-৪০০ টাকা, কই এর কেজি ১২০-১৫০ টাকা, মাগুর এর কেজি ৪৫০-৫০০ কাটা, বোয়াল এর কেজি ৯০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত। গ্রামবাংলার মানুষেরা উম্মুক্ত নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর-ডোবা এবং জলাশয়ে বিনাবাধায় মাছ শিকার করতো নিজেদের তৈরি ঝাকি-জাল, টেপাই, চ্যাচলা, ডারকি, ঠুসি, যাকোই, মইজাল, চটকা, চাক, বড়শি দিয়ে মাছ ধরতেন কিন্তু সেই দিন আর নেই বললেই চলে। গ্রামবাংলার নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর-ডোবা ও জলাশয় থেকে দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ। প্রাকৃতিক উৎসে জন্মানো কৈ, বোয়াল, খৈলসা, টাকি, ট্যাংনা, শৈল, মাগুর, শিং, শাল, বাইলা, খৌরকাটি, মওয়া, পবওয়া, চিতল, চেলা, পাবদা মতো সুস্বাদু মাছগুলো দেখা যায়না বললেই চলে। উম্মুক্ত জলাশয়ে দেশীয় চোট প্রজাতির মাছের প্রাপ্যতা কমিয়ে যাওয়ার পিছনে যে কারনগুলো জড়িত তাহলো মাছের বংশকুল বিনষ্ট করে মাছ শিকার, জলবায়ুর পরির্বতন, কারেন্ট জালের উৎপাদন ও ব্যবহার বন্ধে শতভাগ সফলতা অর্জন না করতে পারা, অভয়াশ্রমের স্বল্পতা, অভয়াশ্রমে দুষ্কৃতিকারী কর্তৃক বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার ও কীটনাশকের যথেচ্ছে ব্যবহার। রাক্ষুসে মাছের যেমন আফ্রিকান মাগুরের ব্যাপকতা ইত্যাদি। জলবায়ু পরির্বতনের কথা বলি। ঠিক সময়ে বৃষ্টি হয় না। মাছের ডিম পাড়া ও ফুটানোর জন্য বৃষ্টি এবং তাপমাত্রা অন্যতম কারণ ও প্রধান নিয়ামক। ঠিক সময়ে বৃষ্টি না হলে মাছের পেটে ডিম থাকলেও মাছ ডিম পারে না। ডিমওয়ালা মাছ এবং পোনামাছ খাওয়ার উদ্দ্যেশ্যে ধরা ও বিত্রু বন্ধে আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে। মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন ১৯৫০ আমাদের মেনে চলতে হবে।