দৈনিক সমাজের কন্ঠ

শার্শায় মৎস্য চাষে যুবকের ভাগ্য বদল,বাণিজ্য ভাবে ভারতে রপ্তানি  

বেনাপোল প্রতিনিধিঃ প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে কঠোর পরিশ্রম ও চেষ্টা করলে অসাধ্য সাধন করা যায়। নিজের ভাগ্য বদলের পাশাপাশি অন্যদেরও ভাগ্য বদলে দেয়া যায়_ এ সত্যকে প্রমাণ করেছেন কামরুজ্জামান টুটুল । ২০০২ সাল থেকে পরিশ্রম আর অক্লান্ত চেষ্টার মধ্য দিয়ে পোনা ব্যবসার পাশাপাশি পাবদা মাছ চাষ করে তার ভাগ্য পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। যশোর জেলার শার্শা উপজেলার সেতাই গ্রামে তিনি একজন সফল মৎস্যচাষী হিসেবে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এবং এ বছর জাতীয় মৎস্য পুরুষ্কার ২০২৩ পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।

 

সাফল্যটি সত্যি সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়ার মতো।

 

জানা গেছে, চাকরি না পেয়ে ২০০২ সালে অল্প কিছু পুঁজি নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন কামরুজ্জামান টুটুল । এতে তার অভাবনীয় সাফল্য আসে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শ ও অন্যান্য সহায়তায় প্রথম দিকে অল্প পরিসরে ও স্বল্প পুঁজিতে নিজস্ব একটি ছোট পুকুরে কার্প জাতীয় মাছ চাষ শুরু করেছিলেন। তারপর থেকে টুটুলের আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক সাফল্য এসেছে। বর্তমানে টুটুল প্রায় ৭.৬ হেক্টরের, জলায়তনে পাবদা মাছ চাষ করছেন। তার পুকুরে পাবদা মাছের পাশাপাশি  রয়েছে রুই, কাতলা, মৃগেল, পাঙ্গাস, তেলাপিয়া, বেশ কয়েকটি জাতের মাছ।

 

এক সময় টুটুল ছিলেন বেকার যুবক।অনেক কষ্টে ধার-দেনা করে পাঁচ হাজার টাকা জোগাড় করেন। এ টাকা  বগুড়া জেলার কাহালু থানা থেকে ১০/১২ কেজি মাছের রেণু পোনা কিনে পুকুরে ছাড়েন। একসময় মৎস্য অফিসসহ বিভিন্ন এনজিওতে প্রশিক্ষণ নিয়ে মাছ চাষে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। কাজের মধ্য দিয়ে সেই থেকে টুটুলের নতুন জীবনযাত্রা শুরু হয়। এতে তার সংসারে বাড়তি আয়ের ছোঁয়া লাগে,পরিবর্তন আসে জীবনে।

 

 

তিনি পাবদা মাছ উৎপাদন করে গত ২০১৯ সাল থেকে তা বাণিজ্যিক ভাবে ভারতে রপ্তানি করছেন। ২০০২ সাল থেকে তিনি মৎস্য চাষ করে আসছেন। তার সাফল্য দেখে আশপাশের ৫০ প্রতিবেশীও মৎস্য খামার গড়ে তুলতে উদ্যোগ শুরু করেছেন।শেষ বছর টুটলের খামার থেকে ১১৫ টন পাবদা মাছ উৎপাদিত হয়েছে।যার বাজার মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা।

 

কামুজ্জামান টুটুল বলেন,খুব সহজেই বেকাররা মৎস্য চাষ করে  স্বাবলম্বী হতে পারেন। তিনি আরও বলেন, বেকার যুবকদের মৎস্য খামার করায় উৎসাহ দিতে ব্যাংকগুলো সুদমুক্ত ঋণ দিলে এ অঞ্চলের বেকার যুবকরা দ্রুত স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে। তিনি আশা করেন, ব্যাংকগুলো এ ধরনের ঋণ সুবিধা চালু করে বেকারত্ব কমাতে সহযোগিতা করবে।

 

শার্শা উপজেলা মৎস কর্মকর্তা আবুল হাসান জানান,সফল মৎস্য খামারী কামরুজ্জামান টুটুল মাছ চাষের কারণে উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা পেয়েছেন। তিনি এই উপজেলায় মৎস্য চাষ করে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন। মৎস্য চাষে সফলতা অর্জনের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তিনি। তিনি এবার জাতীয় মৎস্য পুরুষ্কার ২০২৩ পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।আমরা তার খামারটি পরিদর্শন করেছি।