দৈনিক সমাজের কন্ঠ

বাগআঁচড়ায় স্কুলে দুই অভিভাবককে পিটালেন এক নারী অভিভাবক :বিচার দাবীতে সড়ক অবরোধ

স্টাফ রিপোর্টঃ যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া দারুল আমান শিক্ষা সদনের দুই নারী অভিভাবককে পিটানোর অভিযোগ উঠেছে অপর অভিভাবক আফরোজা খাতুনের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বাগআঁচড়ায় যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। পরে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিচারের আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেয়।

বিদ্যালয় ও স্থানীয় অভিভাবকরা জানান, শার্শার বাগআঁচড়া এলাকার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিট বাগআঁচড়া দারুল আমান শিক্ষা সদন। বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের তৃতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা চলছিল। ঘটনার দিন সকালে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে স্কুল আসছিলো। এ সময় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিভাবক শার্শার রাড়ীপুকুর গ্রামের মনিরুজ্জামানের স্ত্রী আফিয়া নাসরিন ও ঝিকরগাছার শংকরপুর গ্রামের লাভলুর স্ত্রী ঝুমকা খাতুন এর সাথে অভিযুক্ত অভিভাবক বাগআঁচড়ার গ্রাম্য দন্ত চিকিৎসক নাসির উদ্দিনের স্ত্রী আফরোজা খাতুনের তর্কতর্কি হয়। এক পর্যায়ে অভিযুক্ত আফরোজা খাতুন আফিয়া নাসরিন ও ঝুমকার উপর হামলা চালিয়ে মারধর করে আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।

এঘটনার শোনার পরপরই ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে বাগআঁচড়ায় যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।

খবর পেয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ন চন্দ্র পাল ও বাগআঁচড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বিচারের আশ্বাস দিলে তারা এক ঘন্টা পর অবরোধ তুলে নিলে এ সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

দারুল আমান শিক্ষা সদনের সহকারী শিক্ষক ইমরান হোসেন জানান, এ ঘটনার কয়েক সপ্তাহ আগে অভিভাবক আফরোজার ছেলে বেয়াদবি করার অপরাধকে কেন্দ্র করে আমাকে মারধর করেছিলো। শুধু তাই নয় একই ভাবে ওই স্কুলের অপর সহকারী শিক্ষক হাবিবুরকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে অভিযুক্ত আফরোজার বিরুদ্ধে।

বাগআঁচড়া দারুল আমান শিক্ষা সদনের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত অভিভাবক আফরোজা খাতুন প্রায় দিন স্কুলে এসে গন্ডগোলে লিপ্ত হয়। কয়েকদিন আগে তার ছেলে এক শিক্ষককে গায়ে হাত তোলার অপরাধে তাকে টিসি দিয়ে বের করে দেওয়া হয়। পরবতর্ীতে উর্ধতন এক কর্মকর্তার অনুরোধে তাকে আবার স্কুলে নেওয়া হয়। আজ সকালে পরীক্ষা চলাকালীল সময় তুচ্ছ ঘটনায় আফরোজা খাতুন দুইজন অভিবাবককে মারধর করেছে। তিনি প্রতিনিয়ত শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে এমন দুর্ব্যবহার করেই যাচ্ছেন। আমরা এর সুষ্টু বিচার ও প্রতিকার চাই।

তবে ওই ঘটনায় অভিযুক্ত আফরোজা খাতুন বলেন, তাদের সাথে আমার তর্ক ও ঝগড়া হয়েছে। মারধর করা হয়নি। এর আগেও শিক্ষকদের গায়ে হাত দেয়ার অভিযোগের কথা বললে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে বলেন ওই ঘটনাতো মিমাংসা হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ন চন্দ্র পাল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খবর শোনার সাথে সাথে পুলিশ নিয়ে ঘটনান্থলে পৌছে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অবরোধ তুলে নেন। আমি বিষয়টি তদন্ত করার জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। তদন্তের পর দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।