দৈনিক সমাজের কন্ঠ

যশোরের নওয়াপাড়ায় পল্লীবিদ্যুৎ গ্রাহকদের ভোগান্তির শেষ নেই

স্টাফ রিপোর্টার – যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানির ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে। পরিশোধিত বিল পরবর্তীতে বকেয়া দেখিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। সেবা পেতে টাকা জমা দিয়েও সেবা মিলছে না। ভৌতিক বিল করাসহ গ্রাহকদের হয়রানি করা হচ্ছে। পূন: সংযোগ পেতে গুনতে হচ্ছে মোটা অংকের টাকা। এসব বিষয়ে অভিযোগ দিয়েও গ্রাহকরা সময়মত প্রতিকার পাচ্ছে না। অফিসে জানতে গেলে গ্রাহকদের সাথে কর্মকর্মচারীরা খারাপ আচরণ করারও অভিযোগ রয়েছে।
পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির অফিস সুত্রে জানা গেছে, নওয়াপাড়ায় ৮০ হাজার গ্রাহক রয়েছে। তার মধ্যে বড় শিল্প ৫২ টি, ছোট শিল্প ৪ শত ৫০ টি, সেচ ৬ শত ১০টি, মসজিদ ও সরকারি প্রতিষ্টান ১ হাজার ১ শত টি, দোকান বানিজ্যিক ৪ হাজার ৭ শত টি, আবাসিক ৭৩ হাজার ৮৮ জন গ্রাহক রয়েছেন।
জানা গেছে, নওয়াপাড়া বাজারের সনজিৎ কুমার সাহার হিসাব নম্বর ১৯৫৬। তিনি একটি বাল্ব ও একটি ফ্যান চালান। প্রতি মাসে তার মিনিমাম চার্জ বিল হয় কিন্তু গত আগষ্ট মাসে ৩৫ হাজার ৭ শত ৮৪ টাকা বিল প্রদান করা হয়েছে। অফিসে বারবার গেলেও খারাপ আচরণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে ওই বিল কমিয়ে ৪ হাজার ৮ শত ৫৮ টাকা করা হয়েছে। ওই মিটার পরিচালনাকারী বিরেন জোয়ারদার বলেন “আমি একটি বাল্ব ও একটি ফ্যান চালাই আমার এ বিল কিভাবে হয় অফিসে জানতে গেলে আমার সাথে ভাল ব্যবহার করা হয়নি। পরে যে বিল করা হয়েছে তাও আমার পক্ষে দেয়া সম্ভব হবে না।”
নওয়াপাড়া মদিনা ক্লিনিকের হিসাব নম্বর ৬০৯/১৯৮৭। ওই ক্লিনিকের গত আগষ্ট ২০১৯ মাসের বিলের সাথে অন্যের হিসাব যোগ করে ৬৬ হাজার ১ শত ১৭ টাকা বিল করা হয়েছে। এব্যাপারে ওই ক্লিনিকের প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম মিন্টু অফিসে গেলে তার সাথে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এবং তাকে ওই টাকাই দিতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
নওয়াপাড়া বাজারের আমিনুর রহমান খোকন আকুঞ্জি অভিযোগ করে বলেন “ ভোগান্তির আরেক নাম যশোর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২ এ নওয়াপাড়া জোনাল অফিস। অফিসের কর্মকর্তারা গ্রাহকদের নানা ভাবে হয়রানি করে থাকে। তার অভিযোগ আমার আবাসিক মিটারের সেপ্টেম্বর মাসের বিদ্যুৎ বিলের সাথে ট্রান্সমিটার ভাড়া বাবদ ৭ হাজার ৫ শত ২৬ টাকা বিল করেছেন।
নওয়াপাড়া গোহাট বায়তুল সালাম জামে মসজিদের কর্মকর্তা আব্দুস সালাম জানান “ট্রান্সমিটারের জন্য গত ১৫ মে আবেদন করে ৪২ হাজার ২৭ টাকা জমা দিয়েছি। মসজিদের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে প্রায় অফিসে ডিজিএমসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার ধারে ধর্না দিয়েও কোন কাজ হয়নি বলে জানান। আর কর্মকর্তারা যে আচরণ করেছে তা প্রকাশ করার নয়। এখন আর যাইনা। যেদিন দেয় সেদিন দেবে।”
অভয়নগর উপজেলার বুইকরা গ্রামের জাবের আলী বিশ্বাসের বিল পরিশোধ থাকার পরও তার নামে মামলা করা হয়। জাবের বিশ্বাস জানান, আমি উল্টো মামলা করার কথা বললে আমাকে ডেকে মামলা প্রত্যাহার করে নেন।
অভিযোগ রয়েছে কোন গ্রাহকের ২/৩ মাস বিদ্যুৎবিল বকেয়া হলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই বলেছেন অনেক প্রভাবশালী গ্রাহকের বছরের পর বছর বিল বাকী থাকলেও তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে না। আবার একবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলে হয়রানীর শেষ নেই। পুন: সংযোগ পেতে ১ হাজার ২শত টাকা জমা দিতে হচ্ছে।
পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির নওয়াপাড়া জোনাল অফিসের উপ-মহা ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আব্দুল্যা আল মামুন বলেন “আমার আগের কর্মকর্তারা ভাড়াটিয়াদের নামে মিটার দিয়েছিল তারা বিল বাকী করে চলে গেছে। সে বিলতো তাকেই দিতে হবে। আর দুই একটি বিষয় সমস্যা হয়েছে ও গুলো দেখা হবে। কর্মকর্তাদের খারাপ আচরণের বিষয়ে বলেন গ্রাহক কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”