সমাজের কণ্ঠ ডেস্ক :জুলাই ১৬, ২০১৯ –
গতকাল মঙ্গলবার এক নোটিশে পাকিস্তান বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ দেশটির আকাশসীমার সব রুট ভারতের উড়োজাহাজগুলোর জন্য খুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছে। বালাকোটের ঘটনার পর পাকিস্তান ভারতের উড়োজাহাজগুলোর জন্য নিজেদের বেশির ভাগ আকাশসীমা ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছিল। ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আধা সামরিক বাহিনীর ওপর আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি। এতে ভারতের আধা সামরিক বাহিনীর ৪০ জনের বেশি সদস্য নিহত হন। জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদকে এ হামলার জন্য দায়ী করা হয়। এর প্রতিশোধ হিসেবে ২৫ ফেব্রুয়ারি দুই দেশের নিয়ন্ত্রণরেখায় বালাকোটে জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রশিক্ষণ শিবিরে বিমান হামলা চালায় ভারতের বিমানবাহিনী (আইএএফ)। এতে শত শত জঙ্গি নিহত হওয়ার দাবি করে ভারত। এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ভারতের উড়োজাহাজগুলোর জন্য ১১টি রুটের মধ্যে দুটি বাদে বাকিগুলো ব্যবহার নিষিদ্ধ করে পাকিস্তান। যে দুটি খোলা ছিল, সেগুলো শুধু দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে যেতে পারত। গতকাল এনডিটিভি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, সকালে সব ধরনের ভারতীয় ফ্লাইট চলাচলের জন্য নিজেদের আকাশসীমা খুলে দিয়েছে পাকিস্তান। এটা এয়ার ইন্ডিয়ার জন্য বেশ স্বস্তিদায়ক খবর বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, পাকিস্তানের আকাশসীমা নিষিদ্ধ হওয়ায় বিকল্প আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করতে হচ্ছিল এয়ার ইন্ডিয়াকে।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গতকাল দুপুর ১২টা ৪১ মিনিটের দিকে পাকিস্তান এক নোটিশে ভারতের সব উড়োজাহাজকে তাদের আকাশসীমা পূর্ণ ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে। ভারতের এয়ারলাইন অপারেটররা খুব শিগগির পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করে স্বাভাবিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে। এর আগে গত ৩১ মে ভারতের বিমানবাহিনী ঘোষণা দেয়, বালাকোট হামলার পর ভারতীয় উড়োজাহাজের ওপর থেকে সাময়িকভাবে জারি করা নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে পাকিস্তান। তবে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সুবিধা ভোগ করতে পারছিল না বেশির ভাগ বাণিজ্যিক এয়ারলাইনস। তারা পাকিস্তান কবে আকাশসীমা পূর্ণভাবে খুলে দেবে, সে অপেক্ষায় ছিল। বালাকোটে হামলার পর এয়ার ইন্ডিয়া ইউরোপ ও মার্কিন শহরগুলোতে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিকল্প রুট তৈরি করে, কোনো কোনো ফ্লাইট বাতিলও করা হয়। পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করতে না পেরে ভারতের রাষ্ট্রীয় এই এয়ারলাইনস ২ জুলাই পর্যন্ত ৪৯১ কোটি রুপি লোকসান করে। এ সময়ে বেসরকারি এয়ারলাইনস স্পেসজেট ৩০ কোটি ৭০ লাখ রুপি, ইনডিগো ২৫ কোটি ১০ লাখ রুপি এবং গোএয়ার ২ কোটি ১০ লাখ রুপি লোকসান করে। ভারতের সবচেয়ে লাভজনক এয়ারলাইনস ইনডিগো দিল্লি থেকে ইস্তাম্বুলে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়। মার্চ থেকে তাদের উড়োজাহাজগুলোকে আরব সাগরের ওপর দিয়ে দীর্ঘ যাত্রার রুট বেছে নিতে হয় এবং কাতারের দোহায় জালানি নেওয়ার জন্য থামতে হয়।