দৈনিক সমাজের কন্ঠ

কারবালার হৃদয়বিদারক ইতিহাস ও শিয়াদের প্রতারণা

কাল্পনিক ছবি

আব্দুল্লাহ আল মাসুম – আজ ৯ই মহররম, কাল ১০ই  মহররম। আজ দিবাগত রাত থেকে পবিত্র আশুরা। ১০ই মহররম উপলক্ষ্যে কাল অধিকাংশ ধর্মপ্রাণ মুসলমান রোজা রাখবে। কালকের দিনটি খুবই হৃদয়বিদারক কারণ ঐ দিনটিতে খুবই নৃশংসভাবে নবীজীর নাতি আহলে বাইতের সদস্য ঈমাম হোসেনকে ইরাকের অদূরে কারবালায় শহীদ করা হয়। সত্য ও হকের পথে এই দিনটিতে সে আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হন। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো মুসলমানদের অজ্ঞতার সুযোগে ইতিহাস সম্পর্কে ইন্টারেস্ট না থাকার কারণে একদল সুবিধাবাজ শ্রেণী কারবালা হত্যার দায় মূলধারার মুসলিমদের উপর ইনিয়ে বিনিয়ে চাপিয়ে দিতে চায় এবং তারা এটাও বলতে চায় শত পাপী হলেও ঈমাম হোসেনের পক্ষে থাকাই তারা অবশ্যই জান্নাতি ও মূলধারার মুসলিমরা ইয়াজিদকে অনূসরণের জন্য পথভ্রষ্ট। এরা এমন ভাব দেখাই যেন নবী পরিবারের জন্য দুনিয়ার সব দুঃখ কষ্ট তারাই ভোগ করেছে ও মূলধারার মুসলিমরা সব সময় ইয়াজিদের দালালদের অনূসরণ করেছে। আজকে আমি কারবালার লুক্কায়িত ইতিহাসকে যূক্তির ভিত্তিতে আপনাদের সামনে তূলে ধরবো। এবং এই বিষয়ে ঐসব সুবিধাবাদীদের প্রোপাগান্ডাকে ভূল প্রমাণ করবো। আর ঐসব প্রোপাগন্ডাবাজরাই যে কারবালা হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী তা তূলে ধরবো।
#কারবালা হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী কে?
মুয়াবিয়া রাঃ এর মৃত্যুর পর ইয়াজিদ নিজেকে খলিফা দাবী করে আর ঈমাম হোসেন রাঃ কে তার আনুগত্য করতে বলে। ঈমাম হোসেন রাঃ তখন ইয়াজিদের এই অযৌক্তিক দাবি প্রত্যাখ্যান করে। ইয়াজিদ ছিল মদ্যপ দিনরাত সে মদ খেতো অপরদিকে গান বাজনায় তার আকর্ষণ ছিল নেশার মতো এমন একটা লোক নিজেকে খলিফা দাবি করবে আর ঈমাম হোসেন রাঃ তা মেনে নিবে তা হয় না!! অপরদিকে ইয়াজিদ ছিল ঐ সময়ে সিরিয়ার শাসক। আর ঈমাম হোসেন বসবাস করতো মদিনায়। বর্তমান সৌদি আরবের সব লোক ছিল ঈমাম হোসেন রাঃ এর পক্ষে অপরদিকে সিরিয়ার অধিকাংশ খ্রিষ্টান নও মুসলিম ছিল ইয়াজিদের পক্ষে আধুনিক অস্ত্রের দিক দিয়ে সেই সময়ে বিশ্বে সিরিয়া ছিল সেরা অপরদিকে মক্কা মদিনার মুসলিমদের তেমন আধুনিক অস্ত্র ছিল না।
ঈমাম হোসেন রাঃ ইয়াজিদকে প্রত্যাখ্যান করে ইসলামী বিশ্বের একমাত্র বৈধ খলিফা হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা করে। মক্কা মদিনা ও বর্তমান সৌদি আরবের প্রায় সব মুসলমান ঈমাম হোসেন রাঃ কে খলিফা হিসেবে মেনে নেয়। ফলে মুসলিম বিশ্বের খলিফা দুজন হয়ে যায় সিরিয়াতে ইয়াজিদ বর্তমান সৌদি আরবে ঈমাম হোসেন রাঃ।
কিন্ত এখানে একটা সমস্যা ছিলই। ঐ সময়ে মক্কা মদিনা ছিল একদম রূক্ষ। মুসলিম বিশ্বের প্রশাসন চালাতে গেলে সিরিয়া অথবা ইরাকের বিকল্প ছিল না। তাই ঈমাম হোসেন রাঃ পার্মানেন্টভাবে ইয়াজিদকে শায়েস্তা করার দিকে মনোযোগ দেন।
#ইরাকী শিয়াদের চিঠি!!
এই সংকটময় মুহূর্তে ঈমাম হোসেন রাঃ এর কাছে ইরাকী শিয়াদের চিঠি আসে আর তারা ঈমাম হোসেন রাঃ এর অানুগত্য করার ঘোষণা দিয়ে ইয়াজিদের সিরিয়ান বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ঘোষণা দেয়। ঈমাম হোসেন রাঃ চিন্তা করে দেখলো বিশাল সংখ্যক এই ইরাকী বাহিনী নিয়ে অনায়াসে সে ইয়াজিদকে যুদ্ধে হারিয়ে দিবে। কিন্ত সে আরো কিছুদিন ধৈর্য ধরে ইরাকী শিয়াদের অবস্থা দেখার জন্য মনোনিবেশ করলো।
ইতিমধ্যে এই কিছুদিনে দৈনিক শতশত চিঠি আসতে লাগলো ইরাকী বিশাল শিয়া গোষ্ঠীর কাছ থেকে তারা কাকুতি মিনতি করে চিঠিতে বলতে লাগলো হে ঈমাম হোসেন আপনি ইরাকে চলে আসেন আর আমাদের বায়াত করান ইনশাআল্লাহ আমরা মৃত্যুর আগে পর্যন্ত আপনার পক্ষে ইয়াজিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হবো।
ইতিমধ্যে ঈমাম হোসেন রাঃ এর গুপ্তচর ইরাকী শিয়াদের বিষয়ে তাদের দাবীর সত্যতা নিশ্চিত করলো। তাই ঈমাম হোসেন রাঃ কাল বিলম্ব না করেই পরিবার পরিজন নিয়ে ইরাক যাত্রায় মনোনিবেশ করলো।
#ঈমামের ইরাক যাত্রা ও শিয়াদের প্রতারণা !!
হোসাইন (রা.)-এর সংগ্রামের মূল লক্ষ্য ছিল খিলাফত ব্যবস্থার পুণর্জীবন। ইয়াজিদের বিরুদ্ধে ইরাকী শিয়াদের সাহায্যের প্রতিশ্রুতিতে আশ্বস্ত হয়ে হোসাইনের (রা.) স্ত্রী, ছেলে, বোন ও ঘনিষ্ঠ ২০০ অনুচর নিয়ে ৬৮০ খ্রিস্টাব্দে ইরাকের কুফার উদ্দেশে রওনা হন। ফোরাত নদীর তীরবর্তী কারবালা নামক স্থানে পৌঁছালে তিনি জানতে পারেন শিয়ারা তার সাথে প্রতারণা করেছে আর ইয়াজিদের বাহিনীর সাথে মিলে গেছে।
শিয়াদের এহেন বিশ্বাসঘাতকতায় ঈমাম হোসেন রাঃ হতভম্ব হয়ে যান। তিনি অচেনা এক মরুভূমিতে আটকে যান পরিবারসহ।। এই সময়ে ইয়াজিদ রক্তপাত ও খুনাখুনি বন্ধের উদ্দেশে হজরত হোসাইন (রা.) কে তিনটি প্রস্তাব দেন। যার মধ্যে একটি ছিল ইয়াজিদকে খলিফা মানা। সংগত কারণেই ঈমাম তাতে অসম্মতি জানাই। এর পরের ইতিহাস তো সবারই জানা আহলে বাইতের ওপর অভিশপ্ত ইয়াজিদ গনহত্যা চালাই। আহলে বাইতের কিছু নারী সদস্য বাদ দিয়ে অধিকাংশ পুরুষ সদস্যদের ইয়াজিদের বাহিনী শহীদ করে দেয়।
#যদি ঈমাম হোসেন ইরাক না আসতো……
ইরাকী শিয়ারা যদি ঈমাম হোসেন কে ইরাকে আসার জন্য ঈমামকে শতশত চিঠি না পাঠাতো তাহলে ঈমাম হোসেন রাঃ কখনো ইরাক আসতো না। ঈমাম হোসেন তখন মদিনায় থেকে সামরিকক্ষেত্রে আরো শক্তিশালী হয়ে ইয়াজিদকে মোকাবিলা করতো এবং ইয়াজিদ ও ঈমামকে এই ফাদে ফেলতে পারতো না।
আমি মনেকরি ঈমাম হোসেন কে হত্যায় যতটা না ইয়াজিদ দায়ী তারচেয়েও বেশী এইসব প্রতারক শিয়ারা বেশী দায়ী। এইসব নিকৃষ্ট শিয়াদের কারণেই ঈমাম হোসেন কারবালায় আটকে যান ও সপরিবারে নির্মমভাবে শহীদ হন। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ঐতিহাসিকদের থেকে জানা যায় হোসেন রাঃ মৃত্যুর আগে এইসব শিয়াদের অভিশাপ দিয়ে যান। এবং বলেন, যেমনভাবে তোমরা আমাকে প্রতারিত করেছো সেজন্য কেয়ামত পর্যন্ত তোমরা চির অভিশপ্ত থাকবে আর তোমাদের রক্ত কেয়ামত পর্যন্ত ঝড়তে থাকবে।
#বর্তমানে শিয়াদের প্রতারণা!!
ঈমাম হোসেনকে যেমন এরা প্রতারণা দিয়ে শহীদ করেছে বর্তমান সময়েও কারবালার প্রকৃত ঘটনার বিষয়ে মুসলমানদের প্রতারণা করছে তারা। মহররম মাস আসার সাথে সাথে ই ইরানী ও শিয়া মিডিয়াগুলো আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে দিয়ে নিজেদের দায়ভার মূলধারার মুসলিমদের উপর চাপিয়ে দিয়ে নিজে নিষ্পাপ থাকতে চায়। তারা যে প্রতারণা করে ইয়াজিদের সাথে মিশে গিয়েছিলো তা চেপে যেতে চায়। আল্লাহর কি কুদরত দেখুন নবীজী বলেছেন শেষ জামানায় সিরিয়ার বনু কালব বংশীয় সুফিয়ানীকে ঈমাম মাহদী হত্যা করবে। অধিকাংশ আলেম একমত বনু কালব হলো বর্তমানে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদের গোত্র । তার মানে পরিষ্কার বর্তমানেও শিয়ারা সিরিয়ার মুসলমানদের হত্যা করছে সুফিয়ানীর সাথে মিলে।
#কারবালা বিষয়ে মূলধারার মুসলিমদের চিন্তাধারা!!
কারবালা বিষয়ে মূলধারার মুসলিমদের চিন্তাধারা হলো ইয়াজিদ পাপিষ্ঠ আর এসব বিষয়ে শিয়ারা পথভ্রষ্ট। ঈমাম হোসেন রাঃ ই ছিল খিলাফতের যোগ্য ইয়াজিদ নয়। শিয়ারা তাদের পাপের কারণে তারা অভিশপ্ত। তাজিয়া বের করে শরীরে আঘাত করা গুণাহ। এছাড়া ঈমাম হোসেন রাঃ এর শোক প্রকাশের নামে কালো কাপড় পরিধান এগুলো হারাম। শতশত বছর ধরে করে আসা শিয়াদের এসব ভন্ডামীর সবগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলেও খোমেনী কিছু বিষয়ের ব্যবস্থা নিচ্ছে যেমন শরীরে আঘাত করে রক্তাক্ত করা হারাম। এটা খোমেনীর ফতোয়া।
অথচ শত শত বছর আগে থেকেই এই ফতোয়া মূলধারার মুসলিমরা দিয়ে আসছে। উপরের লিংকে গেলে খোমেনীর ফতোয়াটা পাবেন। যাইহোক কালকের এই হৃদয়বিদারক দিনে সকল মুসলমানদের করণীয় হলো ঈমাম হোসেন রাঃ এর নামে দান সাদকা করা, রোজা রাখা কোরআন শরীফ পাঠ করে সাওয়াব তার নামে পাঠানো বা দরকার হলে হাফেজদের মাধ্যমে ঈমামের নামে কোরআন শরীফ খতম দেওয়া। সকল মুসলমানদের বর্জনীয় কাজ হলো কখনোই এইসব অভিশপ্ত শিয়াদের অনূসরণ করে তাজিয়া মিছিল, জারি গান, বা শিরনী জাতীয় কিছুর আয়োজন করা যাবে না। এগুলো অভিশপ্ত কাজ যারা এগুলো করে মনে রাখবেন মজলুম নেতা ঈমাম হোসেন রাঃ কে ধোঁকা দেওয়ার অভিশাপে এরা অভিশপ্ত।