দৈনিক সমাজের কন্ঠ

রাজধানীর বাড্ডা থেকে জেএমবির ৪ সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে র‍্যাব

 সমাজের কণ্ঠ  ডেস্ক :২১ আগস্ট, ২০১৯ – রাজধানীর বাড্ডা থানাধীন উত্তর বাড্ডা এলাকায় সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআ’তুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর ক’জন সক্রিয় সদস্য নাশকতা পরিকল্পনার উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়েছে- প্রাপ্ত এমন তথ্যের ভিত্তিতে গতরাত সাড়ে ১২টার সময় র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ১ এর ক্রাইম প্রিভেনশন কম্পানি ২ এর ভারপ্রাপ্ত কম্পানি কমান্ডার মো. সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে একটি বিশেষ আভিযানিক দল।

এ সময় জেএমবির সক্রিয় সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে ইউসুফ (২৮), মো. আলমগীর হোসেন (৩০), মো. মহিদুল ইসলাম ওরফে সাইফুল্লাহ (২২) ও মো. হারুন-অর-রশিদ (২৮) কে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে জঙ্গি কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধকরণের ৭টি বই, ১টি ম্যাগাজিন, ১টি নোটবুক, ২টি ল্যাপটপ, ১টি কি-বোর্ড, ৭টি মোবাইল ফোন, ১৫টি সিমকার্ড এবং নগদ ২,৯০০/- টাকা উদ্ধার করা হয়।

আটককৃত রফিকুল ইসলাম ওরফে ইউসুফ জানায়, সে ১৯৯২ সালে ফরিদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করে। সে ২০০৭ সালে হাফেজি পাস করে। এরপর সে ২০০৯ সালে দাশেরহাটি কওমি মাদরাসা থেকে শুনানি শেষ করে। সে ২০১১ সাল হতে বিভিন্ন মাদরাসায় হেফজ শিক্ষক হিসেবে চাকরি করেছে। রাজীব নামের একজন জেএমবি সদস্যের সাথে তার ঘনিষ্ঠতার সূত্রে জঙ্গিবাদে জড়িত হয়। তারা নাশকতা পরিকল্পনার উদ্দেশ্যে নাঈম, রাসেল, ইমন, রায়হান, জহিরসহ আরো ২/৩ জন জঙ্গি সদস্য একত্রে টঙ্গী কলেজ গেইট এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেয়। মাসখানেক সেখানে অবস্থান করার পর নিরাপত্তার স্বার্থে বাসা পরিবর্তন করে সাইনবোর্ড এলাকায় নতুন বাসা নেয়। তার মাধ্যমে বেশ কয়েকজন জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছে।

মো. আলমগীর হোসেন র‍্যাবকে জানায়, সে ১৯৯০ সালে কুমিল্লা জেলার লাঙ্গলকোট থানাধীন মাঝিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করে। সে ২০০৩ সালে হাফেজি পাস করে এবং ২০১০ সালে মুফতি পাস করে। এরপর ২০১১ সালে দাওরা হাদিস পাস করে। তারপর সে বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসায় ইমাম ও খতিব হিসেবে কিছুদিন দায়িত্ব পালন করে। ২০১১-১২ সালে মুফতি জসিম উদ্দিন রহমানির মাদরাসায় পড়াশুনা ও চাকরিকালীন উগ্রবাদিতায় আকৃষ্ট হয়। পরবর্তীতে মুফতি জসিম উদ্দিন রহমানি গ্রেপ্তার হলে আলমগীর হোসেন আত্মগোপনে চলে যায়। এরপর ২০১৪ সালে আসামি রফিকুল ইসলাম ওরফে ইউসুফ এর সাথে পরিচয়ের সূত্রে জেএমবিতে অন্তর্ভুক্ত হয়। অতঃপর অপরাপর সদস্যদের সাথে সংগঠনের বিভিন্ন বিষয়ে পরিকল্পনা এবং দাওয়াতের কাজ পরিচালনা করত।

এ বিষয়ে মহিদুল ইসলাম ওরফে সাইফুল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে ১৯৯৬ সালে বাগেরহাট জেলায় জন্মগ্রহণ করে। সে পঞ্চম শ্রেণির পর আর পড়াশুনা করেনি। আলমগীর ও রফিকুলের সাথে পরিচয় ও সখ্যতার মাধ্যমে সে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে এবং সংগঠনের কার্যক্রমে নিয়মিতভাবে অংশগ্রহণ করে।

হারুন-অর-রশিদ জানায়, সে ১৯৯১ সালে ঢাকা জেলায় জন্মগ্রহণ করে। সে ২০০৮ সালে হাফেজি পাস করে। ২০১৭ সালে মাওলানা পাস করে। সে ২০১৮ সালের শেষের দিকে ঢাকায় একটি আর্য়ুবেদিক ওষুধ কম্পানিতে চাকরি নেয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে আলমগীর ও রফিকুলের সাথে তার পরিচয় হয়। তাদের মাধ্যমে সে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে এবং সংগঠনের কার্যক্রমে নিয়মিতভাবে অংশগ্রহণ করে।

গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।