দৈনিক সমাজের কন্ঠ

বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে তৃতীয় আন্তঃদেশীয় যাত্রীবাহী ট্রেন মিতালী চলাচল শুরু

সুজন মহিনুল, বিশেষ প্রতিনিধি॥ দীর্ঘ ৫৭ বছর পর ভারতের নিউজলপাইগুড়ি থেকে ছেড়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের মাটিতে প্রবেশ করেছে মিতালি এক্সপ্রেস ট্রেন।বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে এবার তৃতীয় আন্তঃদেশীয় যাত্রীবাহী ট্রেন মিতালি এক্সপ্রেস চলাচলের অভিষেক হলো।বুধবার(১ জুন)মিতালি এক্সপ্রেস ভারতের দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি মহকুমা শহরের নিউজলপাইগুড়ি(এনজেপি)রেলষ্টেশন থেকে ভারতীয় সময় সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে।ভার্চুয়ালি প্লাটফরমে এই ট্রেনের সূচনা করেন দুই দেশের রেলমন্ত্রীর মধ্যে ভারতের অশ্বিনী বৈষ্ণব ও বাংলাদেশের এ্যাডঃ নুরুল ইসলাম সুজন।এর আগে করোনাকালিন সময় ২০২১ সালের ২৭ মার্চ ভার্চুয়ালি প্লাটফরমে মিতালি এক্সপ্রেসের প্রতিকী উদ্ধোধন করে রেখেছিলেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী।তার আগে ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর ভারতের হলদিবাড়ি-বাংলাদেশের চিলাহাটি এই সীমান্ত রেলরুটে পণ্যবাহী ট্রেনের উদ্ধোধন করেন উক্ত দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।৫৭ বছর বন্ধ ছিল এই রেলপথটি।সেই রেলপথটি পুনরায় চালু করে এবার বানিজ্যিকভাবে চাকা গড়ালো মিতালি এক্সপ্রেসের।এ শুধু একটি রেলগাড়ির সীমান্ত পেরিয়ে এপার-ওপার।শোনা গেল নিউজলপাইগুড়ি-চিলাহাটি-ঢাকা ট্রেনটি ঝিক ঝিক শব্দ।মিতালি এক্সপ্রেসটি ভারতের কোচবিহার জেলার হলদিবাড়ি রেলষ্টেশন ছুঁয়ে খালপাড়া রেল করিডোর দিয়ে বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের নীলফামারী জেলার আন্তর্জাতিক চিলাহাটি রেলষ্টেশনে নির্ধারত দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটের পরিবর্তে ১৫ মিনিট বিলম্বে পৌছে।এখানে ট্রেনটি ৩০ মিনিট চেক পয়েন্টের জন্য ষ্টপিজ দেয়া হয়। এরপর ট্রেনটি ২টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার অভিমুখে ছেড়ে যায়। সময় সুচি অনুযায়ী রাত ১০টা ৩০ মিনিটে মিতালি এক্সপ্রেস ঢাকার ক্যান্টনমেন রেলস্টেশনে পৌছানোর কথা রয়েছে।মিতালি এক্সপ্রেস বাংলাদেশের ঢাকা থেকে ছাড়বে সপ্তাহে দুদিন সোমবার ও বৃহস্পতিবার আর ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ছাড়বে রবিবার ও বুধবার।রবি ও বুধবার নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশন থেকে ছাড়বে ভারতীয় সময় বেলা ১১ টা ৪৫ মিনিটে, এবং ট্রেনটি বাংলাদেশের ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে পৌঁছাবে রাত সারে ১০ টা নাগাদ। একইভাবে বাংলাদেশ থেকে ট্রেনটি ছাড়বে রাত ৯ টা ৫০ মিনিটে, সেই ট্রেন নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে পৌছাবে পরের দিন সকাল ৭ টা ১৫ মিনিটে।মিতালি ট্রেনের মোট ১০টি কোচের মধ্যে রয়েছে এসি বার্থ/সিট-৪ টি ,এসি চেয়ারের ৪টি ও ব্রেকভ্যান ও পাওয়ারকার-২ টি।ভিসা বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জানায় ভারত ও বাংলাদেশের নাগরিকদের পার্সপোট ভিসায় ট্রেনের রুট উল্লেখ না থাকলেও কোন সমস্যা হবেনা।কাউন্টারে পার্সপোর্ট ভিসা দেখালেই সহজেই মিতালির টিকেট হাতে পেয়ে যাবেন।মিতালির ভাড়া ইউএস ডলারে নির্ধারন করা হয়েছে।এসি বার্থ-৪৪ ডলার, যা টাকার অঙ্কে ৫ হাজার ২৫৪ টাকা (রাতের জন্য),এসি সিট-৩৩ ডলার, টাকার অঙ্কে ৩৪২০ (দিনের বেলার জন্য) টাকা ও এসি চেয়ার- ২২ ডলার টাকার অংকে ২৭৮০ টাকা।মিতালী এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে রাতে ছেড়ে যাবে বলে এসি বার্থে মূল ভাড়ার সঙ্গে অতিরিক্ত ২০০ টাকা বেডিং বাবদ যোগ হবে। পাশাপাশি এই ভাড়ার সাথে ভ্রমনকর সংযুক্ত করা আছে।যাত্রী ইমিগ্রেশনের সর্ম্পকে রেলসুত্র সূত্রে জানা গেছে,যাত্রীদের ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের যাবতীয় বিষয় দেখা হবে নিউজলপাইগুড়ি ও ঢাকা ক্যান্টনম্যান স্টেশনেই।দুই দেশের ট্রেনের লোকো(ইঞ্জিন)ও পাইলট হলদিবাড়ি ও বাংলাদেশের চিলাহাটি স্টেশনে পাল্টাবে।সেখানে ট্রেনের কোনও যাত্রীকে উঠানামা করতে দেওয়া হবে না।