শার্শা (বেনাপোল) প্রতিনিধিঃ রেলপথে যাত্রী সেবা আরও এক ধাপ এগিয়ে নিতে ঢাকা-বেনাপোল রুটে চালু হতে যাচ্ছে এক্সপ্রেস রেল সার্ভিস। আসছে ঈদের পরে যে কোনো দিন এই সেবা চালু হবে। বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসেন চৌধুরী এ তথ্য জানান। বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক জানান, বেনাপোল দেশের সর্ববৃহৎ স্থল বন্দর। এ বন্দর দিয়ে প্রতিবেশী ভারতের সাথে রেলপথ ও স্থল পথে বাণিজ্য এবং পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত রয়েছে। এখন ঢাকা-বেনাপোল রুটে যাত্রী সেবায় যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতিতে যেমনি যাত্রী দুর্ভোগ লাঘব হবে, তেমনি বাণিজ্যিও প্রসারিত হবে। নিরাপদ এ যাত্রায় কমবে জীবনহানির ঘটনা। ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট চেম্বার কমার্সের আমদানি-রফতানি বিষয়ক সাব-কমিটির চোয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, এরুটে রেলপথে যাত্রী সেবা চালু করতে অনেক পরিশ্রমের পর স্বপ্ন সার্থক হতে যাচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি পণ্য পরিবহনে কার্গো সার্ভিসও চালু হবে। এসেবা চালু করতে যেমন পণ্যজট কমবে, তেমনি দ্রুত বাণিজ্য সম্পাদনে বড় ভূমিকা রাখবে। বেনাপোল কাস্টমস কমিশার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী জানান, ঢাকা-বেনাপোল-ঢাকা রেল রুটে যাত্রী সেবার ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ সিট অনলাইনে যাত্রীরা সংগ্রহ করতে পারবেন। চলতি পথে যশোরে থাকছে যাত্রা বিরতি। সামনে ঈদের পর এ সেবা চালু হচ্ছে। সড়ক পথে ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রী অনিতা দাস বলেন, দেশ ভাগ হলেও ভারতের সাথে এখনও অনেকের আত্মীয়ের বন্ধন রয়ে গেছে। এ কারণে স্বজনদের সাথে দেখা করতে ও ভালো চিকিৎসা পেতে প্রায়ই অনেকের ভারতে যেতে হয়। ভারত থেকেও অনেক আত্মীয় আসে বাংলাদেশে। হরতাল, অবরোধ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যাত্রীরা সড়ক পথে যাতায়াতের ক্ষেত্রে আটকে পড়েন। দুর্ভোগ আর দালালদের হয়রানির শিকার হতে হয়। এপথে যাত্রীবাহী রেল চালু হচ্ছে, এতে তারা অনেক উপকৃত হবেন। সংশিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রথম পর্বে আসছে ঢাকা- বেনাপোল রুটে আন্তঃনগর ট্রেন, বেনাপোলে জংশন। এরপর বুলেট ট্রেন। ভারতের সাথে রেল কার্গো সার্ভিস। এসেবা চালু করতে এর আগে গত ১০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের যৌথ ইশতেহার এবং উন্নয়ন সহযোগিতার জন্য কাঠামোগত চুক্তির আওতায় (রেলপথ বিষয়ে) উপ আঞ্চলিক সহযোগিতা সংক্রান্ত এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। সভায় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা, রেলের মহাপরিচালকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা, ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ও অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ আমন্ত্রণ পেয়ে অংশ নেন বেনাপোল কাস্টম হাউজের কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরীসহ বন্দরে বাণিজ্যের সাথে সংশিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। বেনাপোল রুটে ভারতের সাথে এর আগেও যাত্রী সেবায় রেল সার্ভিস চালু ছিল। তবে দেশ স্বাধীনের পরপরই তা বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে বছর দশ আগে দুই দেশের সরকারের প্রচেষ্টায় আবারও চালু হয়, প্রথমে পণ্য পরিবহণে কার্গো সার্ভিস চালু হয়। পরে ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর খুলনা-বেনাপোল-কলকাতা রুটে বন্ধন রেলের যাত্রীসেবা চালু হয়।