কাইমুল ইসলাম ছোটন (রাঙ্গামাটি) – রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় চাঁদা না পেয়ে মালবাহি ট্রাক পুড়িয়ে দিয়েছে পাহাড়ের অবৈধ অস্ত্রধারী সংগঠন ইউপিডিএফের সদস্যরা। সোমবার (১০জুন) সকালে উপজেলার মারিশ্যা-দীঘীনালা সংযোগ সড়কে এ ঘটনা ঘটে। আজ সোমবার সকালে বাঘাইছড়ি উপজেলার মারিশ্যা-দীঘিনালা সংযোগ সড়কের রাবার বাগান নামক স্থানে একদল সশস্ত্র উপজাতি সন্ত্রাসী অস্ত্র দেখিয়ে মুদিমালবাহি ট্রাকটির গতিরোধ করে, সেখানে চারজন উপজাতি যুবক অস্ত্র হাতে দাড়িয়ে ছিলো। এরপর গাড়ি থেকে চালক এবং হেলপারকে নামিয়ে মালবাহি ট্রাকটি পুড়িয়ে দেয়। ট্রাকটির মালিক বাঘাইছড়ি পৌরসভার সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ আলী এ ঘটনার জন্য ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপকে দায়ী করে বলেন, চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় ইউপিডিএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তার ট্রাক পুড়িয়ে দিয়েছে। এদিকে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানা এলাকায় পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফের সন্ত্রাসীদের গুলিতে আবদুর রহিম বাদশা (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানাধীন বড়ইতলী গ্রামের জনৈক কালার বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রহিম বাদশা স্থানীয় মোমিনুল হক সর্দারের ছেলে। বড়ইতলী-রামগড়-দাঁতমারা সড়কে গাছের গাড়ীসহ বিভিন্ন পণ্যবোঝাই গাড়ী থেকে চাঁদা উত্তোলনে বাধা দেয়ায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় সুত্র জানায়। পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করেছে। এ ঘটনায় এলাকায় আতংকের পাশাপাশি উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিজিবি ও পুলিশের যৌথবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে দাঁতমারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জানে আলম বলেন, শনিবার রাতে বড়ইতলীতে পাহাড়ী (শান্তিবাহিনী) সন্ত্রাসীরা এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে । চেয়ারম্যান বলেন ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি সন্ত্রাসী তপন নামের এক ব্যক্তির সাথে নিহত বাদশা’র বিরোধ চলে আসছে,কারন সে চাঁদা নিতে বাধা দিতো ইউপিডিএফের সন্ত্রাসীদের। এ বিরোধের জের ধরে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাঘাইছড়িতে ট্রাক পুড়িয়ে দেওয়ায় ও ফটিকছড়িতে সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ কর্তৃক এক বাঙালীকে হত্যা করায় পার্বত্য অধিকার ফোরাম কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ হতে তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। বাসন্তী চাকমা ইউপিডিএফের ব্যানারে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলো। সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে যুক্ত একজন মহিলা সংসদে যাওয়ার পর হতেই পাহাড়ে ইউপিডিএফ জেএসএসের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বেড়ে গিয়েছে, একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড তারা করেই যাচ্ছে মনে করেন পার্বত্য অধিকার ফোরাম। পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য থামাতে প্রশাসনকে এখনি কঠোর অবস্থানে যেতে হবে। প্রশাসনের প্রতি পার্বত্য অধিকার ফোরামের আহ্বান গুটি কয়েক সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে পাহাড় শান্ত করা যাবে না, পাহাড়ের সকল সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথবাহিনীর অভিযান জোরালো ভাবে পরিচালনা করতে হবে।