সমাজের কন্ঠ ডেস্ক – রংপুর মেডিকেল কলেজের শহীদ মাহবুব হোসেন ছাত্রী হলের ডেন্টাল শাখার ছাত্রীদের রুমের দেয়াল বেয়ে টয়লেটের দুর্গন্ধযুক্ত পানি পড়ার ঘটনা ঘটছে।চার দফা এ রকম ঘটনায় ব্যাহত হচ্ছে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম। এ ব্যাপারটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পরও স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রংপুর মেডিকেল কলেজের বিডিএস ৭ম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী জানান, “মাত্র কয়েকমাস আগেই আমাদের রুমের ছাদ খসে পড়ে এবং এক মেয়ে আহত হয়। এর রেশ কাটতে না কাটতেই শুরু হয়েছে রুমের দেয়াল বেয়ে টয়লেটের দুর্গন্ধযুক্ত পানি পড়া। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তারা আমাদের কথায় কোনো গুরুত্ব দেননি, বরং আমাদের অপদস্ত করেন। পর পর চারবার এ রকম হওয়ার পরও স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।”
তিনি আরও জানান, “এই প্রফ পরীক্ষার মধ্যেও দুই রাত-তিন দিন এই দুর্গন্ধযুক্ত পানি পরিষ্কার করেই পড়াশোনা করতে হয়েছে। অবস্থা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় রুমের কিছু মেয়ে একটি ফাঁকা রুমে স্থানান্তর হয়। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের অবস্থা বোঝার চেষ্টা না করে দফায় দফায় তাদের হয়রানি করছেন, এমনকি একদিনের মধ্যে রুম ছেড়ে দেয়ার জন্য হুমকি দেয়া হচ্ছে।”
সূত্রে জানা গেছে, রংপুর মেডিকেল কলেজের শহীদ মাহবুব হোসেন ছাত্রী নিবাসে অবস্থান করছেন ডেন্টাল ইউনিটের ছাত্রীরা। হোস্টেলে বিডিএসের মেয়েদের জন্য পর্যাপ্ত রুম না থাকায় গত দেড় বছর ধরে গণরুমে থাকছেন তারা।
একটি রুমে ২৬ জন মেয়ে গাদাগাদি করে অবস্থান করছেন। বিগত বছরগুলোতেও এসব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীরা।
বিডিএস কোর্সে অধ্যায়নের কারণে প্রতিনিয়ত অবহেলার শিকার হতে হচ্ছে জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, তারা হলের অ্যালোটমেন্ট পেয়ে ভর্তি হয়েছিলেন এবং এজন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকাও জমা দিতে হয়। অথচ এখন বারবার বলা হয়, এই হোস্টেলে তাদের জন্য কোনো সিট বরাদ্দ নেই এবং বাসা নিয়ে বাইরে থাকতে।
কলেজ কর্তৃপক্ষের এ রকম বক্তব্যে হতাশা ব্যক্ত করে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান চেয়েছেন তারা।
জানতে চাইলে রংপুর মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. আশিক রায়হান মেডিভয়েসকে বলেন, “তারা কমন রুমে থাকতো। ছাদ ফেটে গিয়ে পানি পড়ছিল। বিষয়টি নিয়ে কথা বলে প্রিন্সিপ্যাল স্যারের রুম থেকে বের হলাম। ঠিক হয়ে গেছে। ”
হোস্টেলে বিডিএসের শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো সিট বরাদ্দ না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “রংপুর মেডিকেলের ছাত্রী হোস্টেল একটাই। এমবিবিএস-বিডিএসে ছেলেদের তুলনায় মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি, যে কারণে…এমনিতেই সিট সংকট। গতদুই বছর আগে দশতলা বিল্ডিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। পাঁচতলা পর্যন্ত উঠে গেছে। নতুন বিল্ডিং হয়ে গেলে তখন আর কোনো সংকট থাকবে না।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেডিকেল কলেজের একজন সহকারী অধ্যাপক মেডিভয়েসকে বলেন, “সবগুলো বিল্ডিং পুরনো হয়ে গেছে। যতদূর জানি, তাদের জন্য নতুন একটি হোস্টেল তৈরির কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। গতবার সচিব মহোদয় স্যার এসেছিলেন। তিনি কথা দিয়ে গেছেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এগুলো হবে।”