দৈনিক সমাজের কন্ঠ

শ্রীলংকায় নয়।যারা বিশ্বে জঙ্গিবাদের মদদ দিয়েছে সে সকল রাষ্ট্রের মূলে আঘাত করা উচিৎ ছিলো। ডাঃ বাহারুল আলম

ডাঃ বাহারুল আলম – শ্রীলংকায় নয়- যারা বিশ্বে জঙ্গিবাদের মদদ দিয়েছে সে সকল রাষ্ট্রের মূলে আঘাত করার দরকার ছিল। শ্রীলংকার জঙ্গি হামলা দক্ষিণ এশিয়ার ছোট রাষ্ট্রগুলোর নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকির উদাহরণ সৃষ্টি করল। জঙ্গি হামলার পরমুহূর্তে হামলাকারীরা দায় স্বীকার না করলেও শ্রীলংকা রাষ্ট্রের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থা হামলার পূর্বে ও পরে তাদের চিহ্নিত করতে পারে নি। বাংলাদেশ হলিঅর্টিজন-এ জঙ্গি হামলাতেও একই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। নিরপরাধ মানুষ হামলার শিকার হয়েছে ।যে রাষ্ট্রেরই অধিবাসী হোক না কেন জঙ্গি হামলা বিশ্বে সাধারণ নিরীহ মানুষের জন্য হুমকি স্বরূপ । প্রতিহিংসা ও আতঙ্ক ছড়ানর নামে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে জঙ্গিরা। কাপুরুষোচিত প্রবৃত্তি । সভ্যতার মোড়কে ঢাকা বিশ্ব ধর্মান্ধতা ও ধর্মীয় জঙ্গিবাদ থেকে মুক্ত হতে পারে নি। আধুনিকতার দাবীদার শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির প্রয়োজনে ধর্মীয় উগ্র মৌলবাদ গোষ্ঠীকে মদদ দেওয়ার মধ্য দিয়েই বিশ্বে সাধারণ মানুষকে হত্যা করে জঙ্গি আক্রমণের শুরু ।তাদের চৈতন্য উদয় হয় যখন ফ্রাংকেষ্টাইনের মত জঙ্গিরা ঐ সকল রাষ্ট্রে হামলা করে ।কোন জনগোষ্ঠী যদি জঙ্গি হয়ে ওঠে –তার কাছে সভ্যতা, ভব্যতা নৈতিকতা প্রত্যাশা করা যায় না। সভ্যতা / আধুনিকতার ধ্বজাধারী মুখোশধারী শক্তিধর রাষ্ট্র বিশ্বে আধিপত্য ও সাম্রাজ্যবাদের প্রয়োজনে যতদিন জঙ্গি লালন করবে ততদিন এদের হাত থেকে নিরস্ত্র মানুষের নিস্তার নাই। এরা একদিকে জঙ্গি মদদ দেয় , আরেকদিকে হামলার পরে মানবতার ধোয়া তোলে। জাতিসংঘ একেবারেই ঠুঁটো জগন্নাথ । এ সংস্থা সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের প্রশমনের উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ। কয়েক লক্ষ শরণার্থী মায়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে যে জীবন যাপন করছে , তাদের মধ্য হতে অধিকারের প্রশ্ন তুলে যদি জঙ্গিবাদের সূচনা ও জঙ্গির জন্ম হয় , কোন যুক্তিতে তাদের জঙ্গি না হওয়া থেকে নিবৃত করা যাবে ? ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ বা অন্য কোন ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর উপর আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিশ্বের মোড়ল রাষ্ট্রের কেউ না কেউ রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র হওয়ার জন্য পেছন থেকে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করবে। এভাবেই মদদ পুষ্ট হয়ে কোন না কোন ধর্মীয় জঙ্গি গোষ্ঠী (সম্ভবত) শ্রীলংকায় নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। বিশ্বে যারা শান্তির কথা বলে তারাই মতলববাজ হয়ে অশান্তি সৃষ্টি করে। যারা অসংখ্য প্রাণ কেড়ে নিল তাদের প্রতি ঘৃণা ও যাদের প্রাণ গেল তাদের প্রতি সহানুভূতি ও সমমর্মিতা ছাড়া আর কিছু বলার নাই – বিশ্ব কবে মানবিক ও সভ্য হবে সে অপেক্ষায় থাকা।