জহর হাসান সাগরঃ সাতক্ষীরার তালা সদর ইউনিয়নের জেয়ালা নলতা গ্রামের জেলেপল্লীর মেধাবী মারুফা খাতুন সাতক্ষীরা মেডিক্যালে চান্স পেয়েছে। কিন্তু কিভাবে পড়াশুনার খরচ বহন করবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তার পরিবার ।
জেয়ালা নলতার মৎস্যজীবী মো. আজিজ বিশ্বাস ও তাছলিমা বেগমের তিন কন্যার মধ্যে প্রথম সন্তান মারুফা খাতুন। এমবিবিএস ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজে ৭৪ টেস্ট স্কোর পেয়ে ৩৫৩৪ মেরিট পজিশনে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজে চান্স পেয়েছে। তালা মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী মারুফা উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ ও শহীদ আলী আহম্মদ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিকে জিপিএ-৫.০০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।
মারুফা বলেন, ‘গরীর পরিবারের সন্তান হয়েও অনেক কষ্ট করে পড়াশুনা করেছি। মা-বাবার মুখ উজ্জ্বল করেছি। কিন্তু কিভাবে পড়াশুনার ব্যয়ভার বহন করবে আমার পরিবার তা নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় পড়েছি। সকলে দোয়া করবেন। আমি যেন ডাক্তার হয়ে গরীব মানুষ দেশবাসীর সেবা করতে পারি।’
মারুফা খাতুনের মা তাছলিমা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে মেডিক্যালে চান্স পেয়েছে। শুনেছি ডাক্তারি পড়তে অনেক টাকা লাগে। সবার কাছে অনুরোধ সবাই আমার মেয়েকে ডাক্তারি পড়তে সহযোগিতা করবেন।’
মারুফার বাবা আজিত বিশ্বাস জানান , আমার তিন মেয়ের মধ্যে বড় মারুফা। মেঝ মেয়েটা মাদরাসায় পড়ে। আর ছোট মেয়েটা এখনো স্কুলে যায় না। মানুষের কাছ থেকে ভিক্ষা করে মেয়েকে পড়িয়েছি। নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে সংসার চলে যায়। মেয়েটা ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়েছে। কীভাবে পড়াব মেয়েকে? আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া মেয়েকে পড়ানো সম্ভব না।
তালা মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম জানান, ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় তালা মহিলা কলেজের কৃতিছাত্রী মারুফা সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। তার মেরিট পজিশন ৩৫৩৪।
সাতক্ষীরা মেডিকেলের স্টুডেন্ট বিভাগের কম্পিউটার অপারেটর আসাফুর রহমান বলেন, সাতক্ষীরা মেডিকেলে ভর্তির জন্য ২০ হাজার টাকা প্রয়োজন হয়। ভর্তির টাকাসহ দুই বছরের বেতন একত্রে ২০ হাজার টাকা। গরিব শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে অনেক সময় অধ্যক্ষের নির্দেশনায় সর্বোচ্চ ২-৩ হাজার টাকা কম রাখা হয়।