আল আমিন, ঢাকা থেকে – র্যাব-৪ এর অভিযানে রাজধানীর পল্লবী এলাকা হতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিপুল সংখ্যক অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন জব্দঃ চোরাকারবারী চক্রের ০৭ সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। খুন, ডাকাতি, দস্যুতা, ধর্ষণ, অপহরণ, চাদাবাজী, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসী গ্রেফতার এবং জঙ্গীবাদের মতো ঘৃণ্যতম অপরাধ নির্মূল ও সেগুলোর রহস্য উদঘাটনের পাশাপাশি চোরাই কারবারি বন্ধের লক্ষ্যে অসাধু চোর ও ছিনতাই চক্র গ্রেফতার ও তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র্যাব সদা সচেষ্ট।
গত ০৯ নভেম্বর ২০২১ তারিখ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারা যায় যে, ঢাকা মহানগরীর পল্লবী থানাধীন একটি সুপার মার্কেটের কিছু দোকানে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাইপথে আমদানিকৃত অবৈধ মোবাইল ফোন কেনা-বেচা হচ্ছে। প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে ০৯ নভেম্বর ২০২১ তারিখ ২৩.০০ ঘটিকা হতে অদ্য ১০ নভেম্বর ২০২১ তারিখ ১০.৩০ ঘটিকা পর্যন্ত বিটিআরসি এর প্রতিনিধিসহ উক্ত মার্কেটের কয়েকটি মোবাইলের দোকানে অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৩০৯ টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়। যার মধ্যে ভিভো ব্র্যান্ডের-৩৮ টি, অপ্পো ব্র্যান্ডের-৬৩ টি, স্যামসাং ব্র্যান্ডের-০৯ টি, রেডমি ব্র্যান্ডের-৩৬ টি, সনি এক্সপ্রিয়া ব্র্যান্ডের-০২ টি, আইফোন-৩৭ টি, এইচটিসি ব্র্যান্ডের-০৪ টি, সিম্ফোনি ব্র্যান্ডের-০১ টি, এলজি ব্র্যান্ডের-০৩ টি, নোকিয়া ব্র্যান্ডের-০২ টি, রিয়েলমি ব্র্যান্ডের-০৭ টি, পকো ব্র্যান্ডের-০১ টি, নার্জো ব্র্যান্ডের-০১ টিসহ সর্বমোট ৩০৯ টি অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৫০ লক্ষ টাকা।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলোঃ
(ক) মাহমুদুল হাসান মাসুদ (২৮), জেলা-বাহ্মনবাড়িয়া।
(খ) মোঃ জিসান (২৫), জেলা-ঢাকা।
(গ) মোঃ রাসেল (২৮), জেলা-রাঙ্গামাটি।
(ঘ) বিপ্লব হোসেন (৩২), জেলা-চাঁদপুর।
(ঙ) মোঃ রায়হান (২৩), জেলা-ঢাকা।
(চ) মোঃ রকি (১৯), জেলা-ঢাকা।
(ছ) মোঃ হাসিবুল ইসলাম (২১), জেলা-ঢাকা।
অভিযান চলাকালীন সময়ে অভিযানস্থলে বিটিআরসি এর প্রতিনিধি দল তাদের নিজস্ব স্ফটওয়ার ও সার্ভার এর মাধ্যমে আইএমইআই নম্বর যাচাই করে বর্ণিত ৩০৯ টি মোবাইল ফোন সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে চোরাইপথে আমদানিকৃত ঘোষনা করেন। বিটিআরসির সহায়তায় র্যাব-৪ এর আভিযানিক দল উক্ত মোবাইল ফোন গুলো জব্দ করে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা বিগত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন দেশ হতে চোরাই পথে অবৈধভাবে উক্ত মোবাইল ফোন দেশে নিয়ে আসে এবং অনেক ক্ষেত্রে তারা অবৈধভাবে এ্যাসেম্বল করে সরকারের নির্ধারিত রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে তা বিভিন্ন জনসাধারণের নিকট বিক্রয় করে প্রচুর মুনাফা করে গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। এই ধরনের ফোন ব্যবহার করলে গ্রাহক বিড়ম্বনার শিকার ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নিয়মে আইএমইআই যাচাইপূর্বক নতুন মোবাইল ফোন ক্রয় করার ক্ষেত্রে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
উক্ত গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রন আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন এবং অন্যান্য সহযোগীদের গ্রেফতার করার জন্য গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। ভবিষ্যতে এরূপ অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে র্যাব-৪ এর সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।